বাসস দেশ-৭ : সমাজের সকলকে সম্পৃক্ত করে এসডিজি’র লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ : মাসুদ মোমেন

163

বাসস দেশ-৭
জাতিসংঘ-স্থায়ী প্রতিনিধি
সমাজের সকলকে সম্পৃক্ত করে এসডিজি’র লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ : মাসুদ মোমেন
ঢাকা, ২০ জুলাই,২০১৮ (বাসস) : জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন,সমাজের সকলকে সম্পৃক্ত করে এসডিজি’র লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
তিনি বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরামে (এইচএলপিএফ) উপস্থাপিত নিজ দেশের প্রতিবেদনে এ কথা উল্লেখ করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়,‘প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াতে জানে বাংলাদেশ’। এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কীভাবে বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়নে সাফল্যের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে তা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের ফলেই এসব সম্ভব হয়েছে’। এমডিজি বাস্তবায়নের সফল অভিজ্ঞতা নিয়েই এসডিজি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন,‘আমরা এসডিজি’র লক্ষ্যসমূহকে দেশের জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার সাথে একীভূত করেছি। সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পর্যায় থেকে এসডিজি’র বাস্তবায়ন সমন্বয় করা হচ্ছে, আর এতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে এসডিজি’র প্রতি আমাদের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি কতটা দৃঢ়। গত বছর ভলান্টারি ন্যাশনাল রিভিউতে অংশ নিয়ে এসডিজি বাস্তবায়নে আমাদের প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে তুলে ধরেছি।’
বাংলাদেশে এসডিজি বাস্তবায়নে ‘পুঁজির সরবরাহ’, ‘ডেটা গ্যাপ’, ‘চতুর্থ শিল্প বিল্পবের প্রেক্ষাপটে বৈষম্য মোকাবিলা ও উপযুক্ত চাকুরির বাজার সৃজন’ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জসমূহের কথা উল্লেখ করেন স্থায়ী প্রতিনিধি।
এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র প্রভাব বাংলাদেশের কৃষি খাত ও খাদ্য নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে মর্মেও উল্লেখ করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, “এসকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদেরকে শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন খাতে ব্যাপক সংস্কারের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে যাতে নতুনভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সুবিধা আমরা গ্রহণ করতে পারি। কিন্তু এতে বিপুল বিনিয়োগের প্রয়োজন”।
আজ শুক্রবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
উল্লেখ্য ‘টেকসই ও প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম সমাজে রূপান্তর’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে গত ৯ জুলাই ২০১৮ থেকে শুরু হওয়া জাতিসংঘের এবারের হাই-লেভেল পলিটিক্যাল ফোরাম (এইচএলপিএফ) মন্ত্রী পর্যায়ের ঘোষণা গ্রহণের মধ্য দিয়ে ১৮ জুলাই শেষ হয়েছে। এইচএলপিএফ এর শেষ তিন দিন অর্থাৎ ১৬ জুলাই থেকে ১৮ জুলাই ছিল মন্ত্রী পর্যায়ের সেগমেন্ট। বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ১৬ জুলাই মন্ত্রী পর্যায়ের সেগমেন্টের উদ্বোধনীতে অংশগ্রহণ করেন।
এবার এ ফোরামে বাংলাদেশের অবদান ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের (ইকোসক) প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ ও অষ্ট্রেলিয়াকে এইচএলপিএফ’র আউটকাম ডকুমেন্টস্ অর্থাৎ মন্ত্রী পর্যায়ের ঘোষণার খসড়া তৈরির জন্য কো-ফ্যাসিলিটেটর নিয়োগ করে। বাংলাদেশ ও অষ্ট্রেলিয়ার তৈরি খসড়া ডকুমেন্টস্ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের রিভিউর মাধ্যমে বুধবার চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়।
অপরদিকে এইচএলপিএফ উপলক্ষ্যে একাধিক সাইড ইভেন্টের আয়োজন করে বাংলাদেশ। ‘পয়:নিষ্কাশনে অংশগ্রহণমূলক দৃষ্টিভঙ্গি: বাংলাদেশ থেকে শেখা’,‘ডেটা বিপ্লবে পিছনে পড়ে থাকবে না কেউই ’ এবং ‘টেকসই উত্তরণের লক্ষ্যে এলডিসি থেকে উত্তরণের পথ নির্বিঘœ করতে স্বল্পোন্নত দেশসমূহকে সহযোগিতা প্রদান’ শীর্ষক সাইড ইভেন্টসমূহে যোগ দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বাংলাদেশে এসডিজি বাস্তবায়ন বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকতাসহ শিক্ষাবিদ, উন্নয়নকর্মী ও গবেষকগণ।
বাংলাদেশের এসকল সাইড ইভেন্টে যোগ দেন জাতিসংঘ সদরদপ্তর, জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রসমূহ, থিংঙ্ক ট্যাংক, নীতি নির্ধারক, বিষয় বিশেষজ্ঞ ও গবেষকসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনের প্রতিনিধিগণ। যাদের মধ্যে ছিলেন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং স্বল্পোন্নত, ভূবেষ্টিত স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রসমূহের হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ মিজ্ ফেকিতামোইলোয়া কাতোয়া ইউতোইকামানু ,ভূটানের অর্থমন্ত্রী নামগে দরজী, জাতিসংঘে নিযুক্ত মালদ্বীপের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ড. আলী নাসির মোহামেদ।
বাসস/সবি/জেডআরএম/১৬৪৫/-আসচৌ