কোটা সংস্কার আন্দোলন বিএনপি-জামায়াতের চক্রান্তে পরিণত হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

814

ঢাকা, ১৯ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী বলেছেন, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন বিএনপি-জামায়াতের চক্রান্তে পরিণত হয়েছে। তারা দেশের স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতি বিঘিœত করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কারের চলমান আন্দোলন সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ে কলুষিত হয়েছে। এসব ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের সংগঠিত সহিংসতার অনুরূপ।’
আজ বিকেলে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশী কূটনৈতিকদের ব্রিফিংকালে মাহমুদ আলী বলেন, সরকারি চাকুরিতে বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিম-লের জনগোষ্ঠীর সামগ্রিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে ১৯৭২ সালে দেশের কোটা পদ্ধতি চালু করা হয়।
তিনি বলেন, সমাজের প্রান্তিক ও সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য সুযোগ সৃষ্টি করতে নারী, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান-সন্ততি ও বংশোদরদের জন্য কোটা চালু করা হয়।
মাহমুদ আলী বলেন, তবে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের অধিকাংশ নিয়োগ করা হয় মেধা তালিকা থেকে। তিনি বলেন, ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত ৩৩তম বিসিএসে ৭৭ দশমিক ৪ শতাংশ, ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত ৩৫তম বিসিএসে ৬৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ৩৬তম বিসিএসে ৭০ দশমিক ৩৮ শতাংশ কর্মকর্তা মেধা তালিকা থেকে নিয়োগ দেয়া হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আশ্বাসের পরও একটি স্বার্থান্বেষী মহল এই আন্দোলন হাইজাক করে নেয় এবং ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
এ প্রসঙ্গে কূটনৈতিক কোরের কিছু সদস্যের দেয়া বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতাশা ব্যক্ত করেন।
মাহমুদ আলী বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিংয়ে বলেন, দেশে মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নে শেখ হাসিনা সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ।
ব্রিফিংয়ে তিনি অবহিত করেন যে, জেনেভায় অনুষ্ঠিত মানবাধিকার পরিষদে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে থার্ড সাইকেল অব ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিওতে ১০৫টি মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করে।
আর্থ-সামাজিক খাতে সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্য প্রসঙ্গে তিনি সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে বলেন, তিনি বাংলাদেশকে ‘অর্থনৈতিক বিস্ময়’ বলে মন্তব্য করেছেন।
রোহিঙ্গা সমস্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ বাসভূমিতে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও প্রায় ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সামলাতে বাংলাদেশকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক, বহু সাংস্কৃতিক, বহুজাতিক, বহু ধর্মীয়, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ দেশ গঠনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।