বাসস দেশ-১১ (লিড) : ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত ১,৯৭৫, মারা গেছেন ২১ জন

133

বাসস দেশ-১১ (লিড)
করোনা-ব্রিফিং
২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত ১,৯৭৫, মারা গেছেন ২১ জন
ঢাকা, ২৫ মে, ২০২০ (বাসস) : দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯৭৫ জন। এটি দেশে এক দিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা। বর্তমানে দেশে করোনা আক্রান্তের মোট ৩৫ হাজার ৫৮৫ জন।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২১ জন মৃত্যুবরণ করেছে। দেশে এ পর্যন্ত এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন মোট ৫০১ জন।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান। এ সময় অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ড. সানিয়া তাহমিনাসহ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৩৩৪ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ৪৩৩ জন।
শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২০ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪১ শতাংশ বলে তিনি জানান।
গতকালের চেয়ে আজ ৪৪৩ জন বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৫৩২ জন।
নাসিমা সুলতানা জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১১ হাজার ৫৪১টি। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল ৯ হাজার ১৮৪টি। গতকালের চেয়ে আজ ২ হাজার ৩৫৭টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ল্যাব এইড হাসপাতালসহ দেশের ৪৮টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৯ হাজার ৪৫১টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ৮ হাজার ৯০৮টি।গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৫৪৩টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৩৪টি।
নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের ১৬ জন পুরুষ, ৫ জন নারী। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৯ জন ও রংপুর বিভাগের ১-জন রয়ে ছেন। বয়সের দিক থেকে ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন, চল্লিশোর্ধ্ব ৩ জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ৯ জন, ষাটোর্ধ্ব ৪ জন, সত্তরোর্ধ্ব ২ জন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের ২ জন রয়েছেন।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ২৮৪ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ৪ হাজার ৬৫৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯৫ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ২৫৮ জন।
সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৭ হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে আছে ৬ হাজার ৩৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা আছে ৩৯৯টি, ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০৬টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৩৮৪ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার ৮৬৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ১১২ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন ২ লাখ ১০ হাজার ৪৫৮ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৫ হাজার ৪০৫ জন।
দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৬টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৮৪০ জনকে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) বিতরণ হয়েছে ১ হাজার ৪শ’টি। এ পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ২০ লাখ ৬৬ হাজার ৩৩৪টি। বর্তমানে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪০৩টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৯৬৯টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৭৬ লাখ ৬১ হাজার ৩৬১টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ১৬৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ১০ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৮৪০ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৬৬২ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৪ মে পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৬৮৮ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯১ হাজার ৯৬৬ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১৯৩ জন এবং এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৪৮ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৪ মে পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৫০২ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৫২ লাখ ৪ হাজার ৫০৮ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ২৮৬ জন এবং এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬৮৭ জন।
আপনার সুস্থতা আপনার হাতে উল্লেখ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
তিনি বলেন, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।
বাসস/এএসজি/এমএসএইচ/১৭২৮/স্বব