মুচলেকা দেয়ায় ভবন ভাঙতে বিজিএমইএ’কে এক বছরের সময়

415

ঢাকা, ২ এপ্রিল, ২০১৮(বাসস) : রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বহুতল ভবন ভাঙতে এবারের পর আর সময় চাইবে না’-এ মুচলেকার পর এক বছরের সময় দিয়েছে আদালত।
আজ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ এ আদেশ দেয়।
আদালতে বিজিএমইএর পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন এ মামলায় হাইকোর্টের অ্যামিকাস কিউরি এডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
এর আগে আর সময় চাইবে না মর্মে- আন্ডারটেকেন (মুচলেকা) দিতে বিজিএমইএ’কে ২৭ মার্চ নির্দেশ দেয় আদালত। গত ২৮ মার্চ বিজিএমইএ’র দাখিল করা মুচলেকায় কিছু অস্পষ্টতা থাকায় তা সংশোধন (মোডিফাই) করে ফের আজ সোমবারের মধ্যে দিতে বলে আপিল বিভাগ। সে অনুয়ায়ি মুচলেকা দেয়া হয়।
রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বহুতল ভবন ভাঙ্গতে সময় দিয়েছিল আপিল বিভাগ। বিজিএমইএ বহুতল ভবন ভাঙ্গতে ৩ বছরের সময় চেয়ে গতবছর ৮ মার্চ আবেদন করা হয়। সে প্রেক্ষিতে গতবছর ১২ মার্চ ৬ মাস সময় দিয়েছিল আদালত। এরপর এ সময় আবারো বৃদ্ধি করা হয়। এর আগে গতবছর ৫ মার্চ বিজিএমইএ বহুতল ভবন ভাঙ্গার আপিল বিভাগের রায় পুনঃবির্বেচনা (রিভিউ) চেয়ে আনা আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আপিল বিভাগ।
হাইকোর্ট ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল ভূমির মালিকানা স্বত্ব না থাকা এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও জলাধার আইন ভঙ্গ করায় বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ অবৈধ ঘোষণা করে। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভবন অবৈধ ঘোষণা করে ভেঙে ফেলা সংক্রান্ত আপিল বিভাগের ৩৫ পৃষ্ঠায় দেয়া পূর্নাঙ্গ রায় ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে ২০১৬ সালের ২ জুন আপিল বিভাগ বেঞ্চ সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলো। এ ভবনটি বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় পরিবেশের ক্ষতি করে বেআইনিভাবে প্রায় ২০ বছর আগে বহুতলবিশিষ্ট বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা হয়। হাইকোর্ট ২০১১ সালে এক রায়ে জলাধার রক্ষা আইন লঙ্ঘন করে হাতিরঝিলে গড়ে তোলা বহুতল এ ভবনটি ভাঙার নির্দেশ দেয়। রায়ে বলা হয়, বিজিএমইএ ভবনটি সৌন্দর্যমন্ডিত হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যান্সারের মতো। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ ৬৯ পৃষ্ঠায় রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর তার বিরুদ্ধে আপিল করে বিজিএমইএ।
উল্লেখ্য,রাজউক-এর অনুমোদন ছাড়া বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ বিষয়ে ২০১০ সালের ২ অক্টোবর একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি আদালতের দৃষ্টিতে আনেন আইনজীবী ডি এইচ এম মুনিরউদ্দিন। বিষয়টি আমলে নিয়ে ওই বছরের ৩ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ স্বঃপ্রণোদিত হয়ে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না-এ প্রশ্নে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করে। ওই রুলের ওপর চুড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট বিজিএমইএ ভবন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়।