বাসস দেশ-৬ : মজিবর রহমান দেবদাস আর নেই

123

বাসস দেশ-৬
দেবদাস-ইন্তেকাল
মজিবর রহমান দেবদাস আর নেই
জয়পুরহাট, ১৮ মে, ২০২০ (বাসস) : মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য একুশে পদক প্রাপ্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান দেবদাস (৯০) আর নেই। আজ ভোর ৪টায় সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের মহুরুল গ্রামের নিজ বাড়িতে বার্ধক্ষ্যজনিত কারণে তিনি মারা যান।
স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর ২০১৫ সালে এই গুণীকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি হিসাবে একুশে পদক প্রদান করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। অধ্যাপক মজিবর রহমান ‘দেবদাস’ ১৯৭১ সালে পাক বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা হলে নিয়ে বৈদ্যুতিক শক্ড, লোহার রড দিয়ে পেটানো, শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গা ও চোখের কোনায় সুঁচ ঢুকানোসহ তার ওপর চালানো হয়েছিল মধ্যযুগীয় বর্বরতা। পরে পাবনা ও নাটোর জেলখানায় নিয়েও তার ওপর চালানো হয় নির্যাতন। পাকবাহিনীর নির্মম নির্যাতনে অধ্যাপক মজিবর রহমান তখন ধীরে-ধীরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি ক্ষমতায় থাকায় মজিবর রহমানের কেউ খবর রাখেনি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও স্মরণ করেনি কোনোদিন তাকে।
১৯৯৬ সালের নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৯৯৮ সালের ২ আগস্ট মজিবর রহমান দেবদাসকে বিশাল সংবর্ধনা প্রদান করে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্মম নির্যাতনে মানসিক ভারসাম্য হারানো মহান এই মানুষটিকে মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য দীর্ঘ ৪৪ বছর পর হলেও একুশে পদক প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তার স্বজনরা।
জয়পুরহাট জেলার সদর উপজেলার মহুরুল গ্রামে নিজ বাড়ির চার দেয়ালের মধ্যে নিংসঙ্গ জীবন কাটছিল বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক মজিবরের। দেখভাল করতেন ভাইয়ের স্ত্রী রোকেয়া বেগম, নাতনী অর্থিসহ অন্যরা।
চিরকুমার মজিবর রহমান দেবদাসের মৃত্যুর খবরে জেলার শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। আজ বেলা সাড়ে ১১টায় সামাজিক দূরত্ব নজায় রেখে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকষ দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে এবং পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় এই বুদ্ধিজীবীকে।
বাসস/সংবাদদাতা/কেজিএ/১৩৪৩/এবিএইচ