বাসস দেশ-৩১ : কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় তামাক পণ্যের কর ও দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব

122

বাসস দেশ-৩১
বাজেট-তামাক
কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় তামাক পণ্যের কর ও দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব
ঢাকা, ১৭ মে, ২০২০ (বাসস) : কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় বাজেট প্রস্তাবে তামাক জাত পণ্যের কর ও দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে দেশের তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠন।
একই ভাবে সুনির্দিষ্ট কর পদ্ধতি প্রবর্তন, সিগারেটে ২টি মূল্যস্তর এবং তামাক পণ্যের খুচরা মূল্যের ওপর ৩ শতাংশ সারচার্জ আরোপের প্রস্তাবও করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে ১১ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে, যা সরকার কোভিড-১৯ মহামারী সংক্রান্ত স্বাস্থ্য ব্যয় এবং প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে ব্যয় করতে পারবে।
এছাড়াও এতে করে দীর্ঘমেয়াদে ৬ লক্ষ ধূমপায়ীর অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে এবং প্রায় ২০ লক্ষ ধূমপায়ী ধূমপান ছেড়ে দিতে উৎসাহিত হবে। একইসাথে করোনার মতো যেকোন ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পাবে।
তামাক কর ও মূল্যবৃদ্ধির দাবিতে আজ প্রজ্ঞা এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স-আত্মা’র উদ্যোগে তামাকবিরোধী সংগঠন এসিডি, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, ইপসা, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, তামাকবিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ) এবং বিটা ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য তামাক কর ও দাম সংক্রান্ত বাজেট প্রস্তাব ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরে।
এই বাজেট প্রস্তাব সমর্থন করে জাতীয় তামাক বিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, “আমরা জানি যেকোনো ভাবে তামাক সেবন স্বাস্থের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এবং এই কোভিড-১৯ মহামারী আবারও বুঝিয়ে দিল সুস্থ থাকার জন্য তামাক জাত পণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ কতটা জরুরি।
তিনি বলেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তামাক ব্যবহারের ক্ষতির শিকার বিপুল সংখ্যক মানুষ বর্তমানে মারাত্মকভাবে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যেও রয়েছে। করোনার অভিঘাত কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি ভবিষ্যতে সুস্থ সমাজ গঠন ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ও উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য তামাকমুক্ত জাতীয় পরিবেশ অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস) এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের বিদ্যমান চারটি মূল্যস্তর বিলুপ্ত করে দুটি নির্ধারণ করা দরকার।
তামাক খাত থেকে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি এবং তামাক পণ্যের ব্যবহার কাঙ্খিত মাত্রায় কমানোর জন্য একটি সহজ ও শক্তিশালী তামাক কর নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা খুবই জরুরি বলে তিনি মনে করেন
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ(বিআইআইএসএস) এর রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীর বলেন, কোভিড -১৯ সংকট মোকাবেলায় তামাক কর সংস্কার একটি কার্যকর উপায় হতে পারে। এক্ষেত্রে তামাক পণ্যের জন্য নির্ধারিত সম্পূরক শুল্কের একটি অংশ সুনির্দিষ্ট কর আকারে আরোপ করা যেতে পারে এবং অন্যান্য কর পদক্ষেপের সাথে সব ধরনের তামাকপণ্যের খুচরা মূল্যের ওপর ৩ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করা যেতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বাংলাদেশ এখন তরুণদের দেশ। এই তরুণদের ওপর নির্ভর করছে ভবিষ্যত বাংলাদেশের উন্নতি। সেজন্য তামাকের মতো স্বাস্থ্য হানিকর পণ্য থেকে তরুণ সমাজকে দূরে রাখতে তামাকপণ্যের ওপর কর বৃদ্ধি করে ধূমপান সামগ্রীর দাম তরুণ প্রজন্মের নাগালের বাইরে রাখতে হবে।
কোভিড-১৯ মহামারী সংক্রান্ত স্বাস্থ্য ব্যয় এবং প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তায়নের জন্য অতিরিক্ত অর্থ সংস্থান এবং একইসাথে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের পথ সুগম করতে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে তামাকপণ্যের কর ও মূল্য বৃদ্ধির জন্য দাবি করা হয়।
বাসস/সবি/কেসি/২০১৫/স্বব