বাজিস-১ : সুন্দরবনে চোরাশিকারিদের অপতৎপরতা বৃদ্ধি, রেড এলার্ট জারি

142

বাজিস-১
সুন্দরবন-রেড-এলার্ট
সুন্দরবনে চোরাশিকারিদের অপতৎপরতা বৃদ্ধি, রেড এলার্ট জারি
বাগেরহাট, ১৪ মে, ২০২০ (বাসস) : করোনাভাইরাসের কারণে রাস্তা-ঘাট অনেকটা ফাঁকা থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে সুন্দরবনে চোরাশিকারিরা মেতে উঠেছে হরিণ শিকারে। শিকারিদের তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সুন্দরবনে রেড এলার্ট জারি করে বন বিভাগের টহল জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ ও বনরক্ষীরা অভিযানে চলিয়ে চোরাশিকারিদের থেকে ২৪ টি জীবিত হরিণ, ৭৯ কেজি হরিণের মাংস, নাইলনের দড়ির ৬ হাজার ৬০০ ফুট হরিণ ধরার ফাঁদ উদ্ধার করে। এসময়ে ৭ জন চোরাশিকারীকে আটকসহ শিকার কাজে ব্যবহৃত ৪ টি ট্রলার ও দু’টি নৌকা জব্দ করা হয়।
প্রশাসনিক সুবিধার জন্য দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে সুন্দরবনকে। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ ও পশ্চিম সুন্দরবন বিভাগ। বাগেরহাট জেলার শরণখোলা রেঞ্জ ও চাঁদপাই রেঞ্জ নিয়ে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ গঠিত।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বাসসকে জানান, পূর্ব সুন্দরবনে মাত্র ৩৬ দিনের ব্যবধানে পুলিশও বনরক্ষীরা অভিযানে চলিয়ে চোরাশিকারীদের কবল থেকে ২৪টি জীবিত হরিণ, ৭৯ কেজি হরিণের মাংস, নাইলনের দড়ির ৬ হাজার ৬০০ ফুট হরিণ ধরার ফাঁদ উদ্ধার করে। এসময়ে ৭ জন চোরাশিকারীকে আটকসহ শিকার কাজে ব্যবহৃত ৪ টি ট্রলার ও দু’টি নৌকা জব্দ করা হয়। এসব ঘটনায় হরিণ শিকার প্রতিরোধে বনবিভাগ সুন্দরবনে রেড এলাট জারি করে টহল জোরদার করেছে। উদ্ধারের ঘটনায় বন আইনে মামলা করা হয়েছে।
বনসংলগ্ন এলাকার মৎসজীবী ও বনজীবীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, চোরাশিকারীর সংঘবদ্ধ চক্র সুন্দর বনের গভীর অরণ্যের হরিণ বসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থান নেয়। কখনো ট্রলারে, কখনও নৌকায় আবার কখনো বনের গাছে মাচা বেঁধে হরিণের গতিবিধি লক্ষ্য করে তারা। শিকারীরা বিশেষ করে কৃষ্ণপক্ষের রাতে জঙ্গলে বেশী হানা দেয়। সুন্দরবনে যে অঞ্চলে কেওড়া গাছ বেশী জন্মে, হরিণের আনাগোনা সেখানে সবচেয়ে বেশী থাকে। ভোরে অথবা পড়ন্ত বিকেলে কিংবা চাঁদনী রাতে হরিণ চরাঞ্চলে ঘাস খায়। রাতের আঁধারে গহীন অরণ্যে সুযোগ বুঝে চোরাশিকারিরা গুলি করে কিংবা ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করে। হরিণ শিকারের পর গোপন আস্তানায় বসে মাংস তৈরী করা হয়। পরে তা বিক্রি করা হয় সুন্দরবন সংলগ্ন হাট বাজারগুলোতে। এক কেজি হরিণের মাংস এ এলাকায় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন জানান, সুন্দরবনের প্রধান আকর্ষন রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও চিত্রল হরিণ। বনবিভাগসহ প্রশাসনের কঠোর নজরদারির কারণে সুন্দরবনে প্রচুর পরিমাণে হরিণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে। তিনি জানান, মরণঘাতি করোনা ভাইরাসের মধ্যেও বনরক্ষীরা বনজ সম্পদ ও বন্যপ্যনী রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বাসস/সংবাদদাতা/১১২৫/কেজিএ