ফেনীতে অসহায়দের মধ্যে বিতরণে কৃষকদের থেকে সরাসরি সবজি ক্রয় প্রশাসনের

254

ফেনী, ১৩ মে, ২০২০ (বাসস) : সরকারি প্রণোদনায় উৎপাদিত সবজি সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের কাছ থেকে কিনেছে ফেনী সদর উপজেলা প্রশাসন। ক্রয়কৃত সবজি করোনা বিপর্যয়ে সরকারের সহায়তা হিসেবে অসহায়দের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এতে কাঙ্খিত লাভে সবজি বিক্রি করতে পেরে বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেলেন কৃষকরাও।
কৃষকের দাবি, চলমান করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সবজির দাম নি¤œমুখী। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য ও ক্রেতা সংকটের ফলে কাঙ্খিত পাচ্ছেন না কৃষক, এমন অভিযোগ তাদের।
কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সবজি কিনেছে ফেনী সদর উপজেলা প্রশাসন। অফিস সূত্র জানায়, সরাসরি কৃষক হতে চার হাজার পিস মিষ্টি কুমড়া কেনা হয়েছে ৩৫ টাকা দরে। ২০০টি চাল কুমড়া কেনা হয়েছে ৩৫ টাকা এবং ৪ হাজার কেজি মিষ্টি আলু কেনা হয়েছে ৪০ টাকা দরে। এছাড়াও ৬ টাকা করে ২২ হাজার পিস ডিম এবং ৭০ টাকা লিটার দরে ১০০ লিটার গরুর দুধ কেনা হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা বলেন, সদর কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষকদের উৎপাদনের খবর জানতে পারি। পরবর্তীতে সঠিক দাম পাচ্ছে না শুনে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সহায়তায় তা কিনে নিয়েছি। ইতোমধ্যে তালিকাভূক্ত উপকারভোগীদের মাঝে চাল ও অন্যান্য পণ্যের সাথে সবজি বিতরণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, কৃষকরাই বাজারের খুচরা দর নির্ধারণ করে দিয়েছে এবং নির্ধারিত দামে সবজিগুলো কেনা হয়েছে।
সরাসরি কৃষকের পণ্য কেনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি আমাদের সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ থেকে উত্তরণে কৃষক বাঁচানো সবচেয়ে বেশী জরুরী। তাছাড়া কৃষকের উৎপাদিত পণ্য বিক্রয়ের নিশ্চয়তা ও দালালদের দৌরাত্ম্য হতে বাঁচাতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
ফেনী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমীন আক্তার বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের সবটুকু জমি আবাদের আওতায় আনার উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে প্রতিবছরই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে কৃষকদের নানামুখী কৃষি প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, গেল বছর ডিসেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে সরিষা চাষে ক্ষতিগ্রস্ত জেলার ১৪০ কৃষককে কৃষি প্রণোদনা দেয়া হয়। এদের মধদ্যে ১০০ জনকে সবজি চাষে প্রণোদনা দেয়া হয়। এদের মধ্যে বালিগাঁওতে কুমড়া এবং মোটবীতে মিষ্টি আলু চাষ করে কৃষক। ফসল ঘরে তোলার সময় করোনার আঘাত ও মধ্যস্বত্বভোগীর কারণে আবারও কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। তিনি বলেন, ইউএনওর সাথে আলোচনা করলে তিনি চলমান সরকারি সহায়তা হিসেবে সরাসরি কৃষক থেকে কিনে নেন।
কৃষকের একজন আবদুল মোতালেব বলেন, লাভ পেলে চাষের মত আনন্দ আর কিছুতে নেই। সবাই যদি এভাবে এগিয়ে আসে তবে আরও অনেক বেশী জমিতে চাষাবাদ হবে।