বাসস দেশ-১০ : করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কুমিল্লায় লড়াকু পাঁচ নারী কর্মকর্তা

129

বাসস দেশ-১০
করোনা-লড়াকু-নারী
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কুমিল্লায় লড়াকু পাঁচ নারী কর্মকর্তা
॥কামাল আতাতুর্ক মিসেল॥
কুমিল্লা, ১১ মে, ২০২০ (বাসস) : করোনা ভাইরাস মহামারী প্রতিরোধের লড়াইয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন জেলার পাঁচজন নারী কর্মকর্তা। নিজ নিজ দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলার করোনা সংক্রমণ রোধে এই নারী কর্মকর্তারা দিনরাত বিরামহীন ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। যার ফলশ্রুতিতে উপজেলা প্রশাসন এখন সাধারণ মানুষের আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছেন তারা।
এই পাঁচ নারী কর্মকর্তা প্রত্যকের অভিন্ন কথা- ‘করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক নয়, সচেতন হই প্রত্যেকে সুরক্ষিত রাখি দেশকে’- এই ম্যাসেজটি পৌঁছে দিতেই মাঠে কাজ করছেন দিনভর। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রীর উপহার পৌঁছে দিচ্ছেন অসহায়দের ঘরে-ঘরে।
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার লামইয়া সাইফুল বলেন, প্রথম থেকেই সবাইকে সচেতন করার আহ্বান জানিয়ে আসছিলাম। উপজেলাবাসী সচেতন হয়েছেন। এখন পর্যন্ত নাঙ্গলকোট উপজেলায় কোন করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। সামনের দিনগুলোর জন্য প্রস্তুতি বিষয়ে তিনি বাসস’কে বলেন, বর্তমান অবস্থাটা ধরে রাখতে চাই। সে জন্য যা করার তার সবই করবো। গুরত্বপূর্ণ সড়কে চেকপয়েন্ট বসানো হয়েছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে পাঠানো এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ১০০ মানুষের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। তিনি জানান, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সাধারণ মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকিয়া আফরিন, বাসস’কে বলেন, করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সাধারণ জনগণকে সচেতন করতে মাঠে-ঘাটে-হাটে কাজ করছি, এতে ঝুঁকিতে থাকলেও দায়িত্ব পালনে অনীহা নেই। দায়িত্ব থেকে পালিয়ে যেতে চান না। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে কাজ করছেন গত দু’মাস কঠিন সময় পার করেছেন। সামনের দিনগুলোর জন্য প্রস্তুুতি নিচ্ছেন। তিনি বলেন, জনসমাগম বন্ধ করা, বাজার মনিটরিং-করোনা আক্রান্ত রোগীর সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নেয়া, খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, সভা করা, আইনশৃংখলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত সদর উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার ও বিভিন্ন সংগঠন মিলিয়ে সাড়ে ৯ হাজার মানুষজনকে খাদ্য সামগ্রী দেয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফৌজিয়া সিদ্দিকা, বলেন, করোনায় সংক্রমণে বিপর্যস্ত নি¤œ আয়ের মানুষজন। তাদের মাঝে খাদ্য সহয়তা প্রদান করা। জনসমাগম বন্ধ ও জনসচেতনতা সৃষ্টিতে হ্যান্ড মাইক হাতে নিয়ে ছুটে চলছেন। করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা করাসহ গত দুই মাস এভাবেই পার করেছেন। ফৌজিয়া সিদ্দিকা বাসস’কে বলেন, মানুষের সেবা-সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া সংসদীয় আসনের এমপি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মতিন খসরু’র নির্দেশনায় কাজ করে যাচ্ছি। এলাকায় এখন পর্যন্ত দু’জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। একজন সুস্থ হয়ে চট্টগ্রামে চলে গেছেন। আরেকজন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর উপহার সাধারণ মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছি।
হোমনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাপ্তি চাকমা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার ও বিভিন্ন সংগঠন মিলিয়ে ২৫ হাজারের বেশি মানুষ খাদ্য সহয়তা পেয়েছেন হোমনা উপজেলায়। এখানে এখন পর্যন্ত দু’জন আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের মধ্যে একজন সুস্থ হয়েছেন। আরেকজন চিকিৎসাধীন আছেন। তাপ্তি চাকমা বাসস’কে বলেন, উপজেলাবাসীকে আমরা যেভাবে চলাফেরা করার জন্য আহ্বান করেছি তারা সেভাবেই চলাফেরা করছেন। এছাড়াও আইনশৃংখলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি। সম্মিলিত প্রচেষ্টার কারণে হোমনায় এখনো করোনা মহামারী রূপ ধারণ করেনি।
তিতাস উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাম্মৎ রাশেদা আক্তার বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দিনভর কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে তিতাসে করোনা আক্রান্ত ১১ জন। যার মধ্যে সাত জন সুস্থ হয়েছেন। বাকিরাও সুস্থ হওয়ার পথে। এ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেয়া সাড়ে ৮ হাজার মানুষের মাঝে খাবার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাসস’কে বলেন, আগামী দিনগুলোতে তিতাসে করোনা সংক্রমণ রোধে উপজেলা প্রশাসন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
বাসস/সংবাদদাতা/কেজিএ/১৫২৭/আরজি