বাসস দেশ-১৮ : মানুষের জীবন ও জীবিকা দু’টো রক্ষায়ই সরকার কাজ করছে : তথ্যমন্ত্রী

167

বাসস দেশ-১৮
হাছান-সমন্বয় সভা
মানুষের জীবন ও জীবিকা দু’টো রক্ষায়ই সরকার কাজ করছে : তথ্যমন্ত্রী
চট্টগ্রাম, ৭ মে ২০২০ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মানুষের জীবন ও জীবিকা দু’টো রক্ষায়ই সরকার কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘মানুষের জীবন রক্ষার পাশাপাশি মানুষের জীবিকাকেও রক্ষা করতে হয়। সেই কারণে জীবন ও জীবিকা দু’টো রক্ষায়ই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার নানা রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকেই নানা রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করার কারণেই পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় আমাদের দেশের পরিস্থিতি এখনো অনেকটা ভালো।
‘তাই বলে সরকার বসে নেই। কারণ আপনারা দেখতে পাচ্ছেন সংক্রমণ বাড়ছে। এবং যেকোন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সে জন্য আমরা সবার সহযোগিতা নিয়ে কাজ করছি’, বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী আজ বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে করোনা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সমন্বয় সভা শেষে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।
করোনা সঙ্কটে চট্টগ্রাম জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিনের পরিচালনায় সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ।
এতে বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত আসনের এমপি ওয়াসিকা আয়েশা খানম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুখ, জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হাসান শাহরিয়ার কবির ও সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বি।
ড. হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার দেশের এক তৃতীয়াংশের বেশি মানুষকে নানাভাবে সহায়তার আওতায় এনেছে। এই বৈশি^ক দুর্যোগের সময় পৃথিবীর খুব বেশি দেশে এভাবে এক তৃতীয়াংশ মানুষকে সরকারি সহায়তার আওতায় আনা যায়নি।
তিনি বলেন, স্পেন, ইতালি, সিঙ্গাপুরসহ পৃথিবীর অনেক দেশে যেখানে প্রতিদিন এখনো আড়াই থেকে তিনশ’জন মানুষ মৃত্যুবরণ করছে সেখানে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। জীবন রক্ষা করার জন্য মানুষের জীবিকাকেও রক্ষা করতে হবে।
‘কিন্তু সেজন্য আমাদেরকে অবশ্যই অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করেই এই কাজগুলো করতে হবে। সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত সীমিত আকারে আগামী ১০ মে থেকে খোলার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। সেখানে কিছু নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে’ বলেন হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রামের হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল আসলে কোন ব্যবস্থাপনায় পরিচালনা করা হবে সেটি নিয়ে একটা সিদ্ধান্তহীনতা ছিল। আজকে আমরা স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি সরকারি ব্যস্থাপনাতেই সেটি চালু করা হবে। সভার সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দেয়া হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় চালু করতে হলেও তো কিছু আনুসাঙ্গিক কাজকর্ম আছে। সেগুলো করতে কিছুটা সময় লাগবে। চেষ্টা চলছে যতদ্রুত সম্ভব সেটা চালু করার।’
করোনার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে দীর্ঘ সময় ব্যয় হচ্ছে এতে আক্রান্তরা ঘুরে বেড়াচ্ছে ও ছড়াচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আজকের সভায় বলা হয়েছে আগে টেস্টের রিপোর্ট পেতে সাত দিন লাগতো। এখন সেটি কমিয়ে চারদিনে এনেছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়েও আরেকটি করোনা পরীক্ষার ল্যাব চালুর বিষয়ে চেষ্টা চলছে বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক সভায় জানিয়েছেন। চট্টগ্রামে অন্তত প্রতিদিন ৫শ’ নমুনা পরীক্ষা যাতে করা যায় সেই চেষ্টাও চলছে।
ক্রমান্বয়ে এ সমস্যা কমে যাবে উল্লেখ করে, যে সমস্ত ব্যক্তি নমুনা পরীক্ষার জন্য দিয়েছেন তারা যাতে আর কারো সাথে না মিশেন সেই অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তিনিতো নিজেকে সন্দেহ মনে করেই নমুনা পরীক্ষা করেছেন। পরীক্ষার জন্য পাঠানোর পর নিজের মধ্যে যেহেতু সন্দেহ হয় তখন থেকে যেন তিনি কারো সাথে মেলামেশা না করেন।’
মার্কেট খুলে দেয়ায় সংক্রমণ বাড়বে কিনা এক সাংবাদিকের প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সবাই যদি সম্মিলিতভাবে মানুষকে সচেতন করতে পারি তাহলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা অনেক সহজ হবে। এ জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা শুরু থেকেই প্রচারণা চালাচ্ছেন। কেউ যাতে অপ্রয়োজনে বাজারে না যান, মানুষ যাতে সমস্ত স্বাস্থ্য বিধি মেনে মার্কেট ও অন্যস্থানে যান।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মার্কেটগুলোর প্রবেশ পথে ডিজইনফেকশন চেম্বার স্থাপন করতে হবে। মাস্ক স্যানিটাইজারের পাশাপাশি যদি মার্কেটে প্রবেশের সময় ডিজইনফেকশন চেম্বারের মাধ্যমে প্রবেশ করেন তাহলে ডিজইনফেক্টেড হয়ে যাবে।
ড. হাছান বলেন, প্রতিটি শপিংমল ও বিপনী বিতানের সামনে স্বাস্থ্য বিষয়ক সতর্কবাণী না মানলে মৃত্যুর ঝুঁকি আছে এমন ব্যানার সাঁটাতে হবে। এবং প্রবেশ পথে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ক্রেতা বিক্রেতা সবাইকে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সামাজিক ও শারিরীক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা রোগী সনাক্ত হবার কারণে বিভিন্ন জায়গায় লকডাউন করতে হচ্ছে। যেখানে লকডাউন হয় সেখানে দুইপাশে পুলিশ থাকতে হয়। কিন্তু আমাদের পুলিশ ফোর্স সীমিত। আক্রান্ত আরো যখন বাড়বে তখন আরো বেশি পুলিশের প্রয়োজন হবে। তখন পুলিশের অন্যান্য কাজ সেগুলো ব্যাহত হতে পারে। সেজন্য আজকের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে যেখানে লকডাউন সেখানে প্রয়োজনে আরো বেশি সংখ্যক আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে।
বাসস/জিই/কেএস/ কেসি/১৮২৫/স্বব