সফল অধিনায়ক হতে তামিমকে নিজের ‘আত্ম অনুভূতির’ উপর আস্থা রাখাতে বললেন মাশরাফি

324

ঢাকা, ৫ মে ২০২০ (বাসস) : বাংলাদেশের সফল অধিনায়ক হবার যোগ্যতা নতুন ওয়ানডে দলপতি তামিম ইকবালের আছে বলে মনে করেন সাবেক নেতা মাশরাফি বিন মর্তুজা। এজন্য তামিমকে নিজের ‘আত্ম অনুভূতির’ উপর আস্থা রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ম্যাশ।
মাশরাফি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেয়ার পর বাংলাদেশের নতুন ওয়ানডে দলপতি হন তামিম। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারনে এখনো বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ হয়নি তার।
বাংলাদেশের সফল অধিনায়ক হবার পেছনে ‘আত্ম অনুভূতি’ই সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছিলো মাশরাফির। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মনে করেন, তামিম যদি তার ‘আত্ম অনুভূতি’কে অনুসরন করতে পারে তবে তার ৫০ ম্যাচ জয়ের রেকর্ডের চেয়ে ভালো করা কঠিন হবে না।
গতরাতে ফেসবুকে আলাপকালে তামিমকে উদ্দেশ্যে করে মাশরাফি বলেন, ‘এটা করো, সেটা করো, বোলার পরিবর্তন করো, এভাবে অনেকেই অনেক ধরনের পরামর্শ দিবে, কিন্তু আপনাকে ‘মনের অনুভূতি’কে প্রাধান্য দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি আপনার ‘আত্ম অনুভূতি’ শুনে হারতে হয়, তবে রাতে ভালোভাবে ঘুমাতে পারবেন। কিন্তু অন্যের কথা শুনে তা করলে, আপনি মনে শান্তি পাবেন না। তাই নিজের ‘মনের অনুভূতি’র প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে।’
আলাপ চলাকালে, তামিম অতীতে স্মৃতি তুলে ধরেন। তামিম বলেন, কঠিন সময়ে মাশরাফিকে অনেকবার বলা হয়েছে, অফ-স্পিনারের পরিবর্তে আক্রমনে পেসার আনার জন্য। কিন্তু তামিমের কথা না শুনে মাশরাফি স্পিনারই ব্যবহার করেছেন এবং সে সাফল্যও পেয়েছেন।
তামিম বলেন, মাশরাফির স্পিন দিয়ে সাফল্য পাবার কৌশলে অবাক হয়েছেন।
তামিম জিজ্ঞাসা করেন, এটি কিভাবে ভালো কাজ করেছে। মাশরাফি বলেন, নিজের ‘আত্ম অনুভূতি’কে অনুসরণ করেছিলেন।
‘হ্যাঁ, আপনি ঐ সময় আমাকে পেসার আনতে বলেছিলেন, সেটি যৌক্তিক ছিলো, কিন্তু আমি ‘আত্ম অনুভূতি’তে বিশ্বাস রেখেছি, যা আমাকে স্পিনার আনতে বলেছে। এটি সত্যিই ভালো কাজ করেছে। তবে সর্বদা এটি কাজ করেনি। তবে আমি যা বলতে চেয়েছিলাম, তা যেন মন থেকে শুনতে পাওয়া যায়।’
২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও মাশরাফি তার ‘আত্ম অনুভূতি’কে বিশ্বাস করেন। গত বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসানকে তিন নম্বরে খেলানোর পক্ষে ছিলেন মাশরাফি। কিন্তু দলের অন্যান্য সদস্যরা ঐ সিদ্বান্তের পক্ষে ছিলেন না।
মাশরাফি বলেন, ‘যদিও বিশ্বকাপে সাকিবের তিন নম্বরে ব্যাটিং নিয়ে অনেকেই অনেক কিছু বলেছিলেন। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, সাকিবের মত খেলোয়াড়ই চাপ মোকাবেলা করতে সক্ষম। আমার দৃষ্টিভঙ্গি ছিলো, সে যদি দু’টি ম্যাচ ব্যর্থ হয়, সাকিবের চেয়ে কেউই বেশি চিন্তিত হবে না। আমি তাকে পুরোপুরি সমর্থন করেছি কারন সে তিন নম্বরে বড় ধরনের প্রাধান্য বিস্তার করতে সক্ষম হবে।’
মাশরাফির সমর্থন পেয়ে, বিশ্বকাপে সেরা পারফরমেন্সই করেছে সাকিব। রেকর্ড পারফরমেন্স করেছে সে। ৮ ইনিংসে দু’টি সেঞ্চুরি ও পাঁচটি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৬০৬ রান করেন তিনি। ব্যাটিং গড় ৮৬ দশমিক ৫৭ এবং স্ট্রাইক রেট ৯৬ দশমিক ০৩। ব্যাটিংএর পাশাপাশি বল হাতে ১১ উইকেটও নেন তিনি। ফলে বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ৫শর বেশি রান ও ১০ উইকেট নেয়ার রেকর্ড গড়েন সাকিব।
বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে তামিমের অভিজ্ঞতাটা মোটেই সুখকর নয়। বিশ্বকাপের পর শ্রীলংকার মাটিতে তিন ম্যাচে সিরিজে তামিমের নেতৃত্বে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ।
মাশরাফি পরামর্শ দেন, মাঠের বাইরের ভূমিকা তামিমকে নতুন নেতৃত্বে সহায়তা করবে। মাশরাফি বলেন, ‘বিসিবি আপনাকে দীর্ঘসময়ের জন্য অধিনায়কত্ব দিয়েছে, কিন্তু এটি আপনার উপর নির্ভর করে। আপনাকে এটি যথাযথভাব কাজে লাগাতে হবে।
আপনি শ্রীলংকা সফরে সঠিকভাবে গ্রহণ করেননি, কিন্তু এখন আপনাকে দেখছি, আমি মনে করি, আপনি সঠিক পথে আছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট খুব শিগগিরই নতুন ধাপে পা রাখবে।’