বাসস দেশ-৩ : ই-মনিটরিং প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত পরিবর্তন আনবে

161

বাসস দেশ-৩
ই-মনিটরিং-প্রাইমারি স্কুল
ই-মনিটরিং প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত পরিবর্তন আনবে
ঢাকা, ১৭ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : নতুন প্রবর্তিত ই-মনিটরিং পদ্ধতিতে স্কুলগুলোকে শক্তিশালী পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানের পরিবর্তন আনতে সরকারকে সহযোগিতা করবে ।
‘ইতোপূর্বে স্কুলগুলো ম্যানুয়ালি পর্যবেক্ষণ করা হলেও বর্তমানে এই ক্ষেত্রে অ্যাপস্ ব্যাবহার করা হচ্ছে যা আমাদের কাজকে সহজ করে তুলেছে।’ – গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার একজন সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা স্কুলগুলো থেকে তথ্য সংগ্রহ করি এবং সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো আপ- লোড করি যাতে করে সংশ্লিষ্ট সকলে এ সংক্রান্ত তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারেন।’
তিনি বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তারা স্কুলগুলো পরিদর্শনের সময় তথ্যসমূহ আপলোড করেন এবং তা তথ্য ডিরেকটরেট অব প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিই)-এর ওয়েবসাইটে সরাসরি চলে যায়। প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে জেষ্ঠ্য কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক ভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন।
জাহিদুল বলেন, ইতোপূর্বে তারা স্কুল পর্যবেক্ষণের রিপোর্ট ম্যানুয়ালি পেশ করতেন, এখন তারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে তা পেশ করেন। এতে পেপারওয়ার্ক সহজ হয় এবং সময়ও বেঁচে যায় ।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষায় মৌলিক পরিবর্তন হয়েছে। একবার স্কুলগুলোর তথ্য আপলোড করা হলে প্রত্যেকে সেগুলো দেখে সমস্যার সমাধানের পদক্ষেপ নিতে পারে, যা প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার গুণগত মন নিশ্চিত করতে সহায়তা করছে।’
ডিজিটাল মনিটরিং সাধারণভাবে ই-মনিটরিং হিসেবে পরিচিত। এ পদ্ধতিতে এনড্রোয়েডের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়। আন্তর্জাতিক এনজিও সেভ দ্য চিলড্রেন ও ডিপিই যৌথভাবে প্রচলিত পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির দ্রুত উন্নয়নের মাধ্যমে এটি চালু করে।
মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা স্মার্ট ফোন ও ট্যাবলেটের মাধ্যমে সঠিক স্কুল পর্যক্ষেণের ডাটা সংগ্রহ করে। বিভিন্ন প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ওয়েব ভিত্তিক স্কুল মনিটরিং ফাইন্ডিংসের সারসংক্ষেপ ও বিশ্লেষণের প্রাপ্তি সহজ হয়ে উঠেছে।
ডালিয়া রহমান নামে কালিয়াকৈরের আরেক উপজেলা শিক্ষাকর্মকর্তা ই-মনিটরিং সম্পর্কে বলেন, যে কেউ মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি সম্পর্কিত তথ্যাদি তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারবে।
মাঠ কর্মকর্তারা কোন জায়গা থেকে তথ্যাবলী আপলোড করেছে অ্যাপ্লিকেশন সে সম্পর্কে জানাবে। তিনি বলেন, বর্তমানে সবাই নিশ্চিত তথ্য সংগ্রহের জন্যে সশরীরে স্কুলে যান যা স্কুল মনিটরিং পদ্ধতিকে শক্তিশালী করেছে।
ডিপিই কর্মকর্তরা বলেন, প্রচলিত কাগজভিত্তিক স্কুল মনিটরিং পদ্ধতি প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে না। কারণ, ডিপিএ-র কেন্দ্রীয় মনিটরিং ও ইভালুয়েশন সেকশনে মাঠ পর্যায়ের ডাটা প্রদানে তা মোটামুটি অনেক সময় নেয়।
এইসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়, ডিপিই প্রাথমিকভাবে ২০১৭ সালে দেশের ৪০ টি উপজেলায় ই-মনিটরিং পদ্ধতি চালু করে। সেভ দ্য চিলড্রেন এতে সরাসরি প্রশিক্ষণ ও স্মার্ট ফোন প্রদান করে। ডিপিএ ২৬টি উপজেলায় কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে।
ডিপিই এ ছাড়াও ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে আরো ৪০টি উপজেলা ই-মনিটরিং পদ্ধতির আওতায় আনে।
দেশের প্রতিটি জেলায় অন্ততঃ একটি উপজেলাকে ই-মনিটরিং পদ্ধতির আওতায় আনা হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আশা করা যাচ্ছে যে, খুব শিগগির চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন পরিকল্পনায় (পিইডিপি) দেশের মূল ¯্রােতধারায় ই-মনিটরিং পদ্ধতি প্রবর্তন করা হবে।
সেভ দ্য চিলড্রেনের জ্যেষ্ঠ আইসিটি ম্যানেজার রুখসানা পারভীন হোসেন বলেন, ২০১৪ সাল থেকে সেভ দ্য চিলড্রেন ডিপিই’র সঙ্গে সরকারি স্কুলগুলোর মনিটরিং পদ্ধতিকে শক্তিশালী করে তোলায় কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সেভ দ্য চিলড্রেন ডিপিএ-এর সঙ্গে একযোগে ২০১৫ সালে মানিকগঞ্জ, গাজীপুর মেহেরপুর জেলার পাঁচটি উপজেলায় ই-মনিটরিং পদ্ধতি চালুর জন্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে।
‘ইতিবাচক ফলাফল পাওয়ায় ডিপিই পরবর্তীতে এই পদ্ধতিকে গ্রহণ করে এবং সারাদেশের মূল ¯্রােতে এই পদ্ধতি ছড়িয়ে দেয়।
রুখসানা আরো বলেন, সেভ দ্য চিলড্রেন এই পদ্ধতিকে আরো বেশি ফলপ্রসূ করে তোলায় ডিপিএ-র সঙ্গে একত্রে কাজ করে যেতে আগ্রহী।
বাসস/ এমআরআই/জেজেড/১৩১৫/আরজি