বাসস দেশ-১১ : স্কুল পর্যায়ে গণমাধ্যম সাক্ষরতা কার্যক্রম চালুর আহ্বান

165

বাসস দেশ-১১
গোলটেবিল-সাকমিড
স্কুল পর্যায়ে গণমাধ্যম সাক্ষরতা কার্যক্রম চালুর আহ্বান
ঢাকা, ১৬ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্ট (সাকমিড) আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা অবাধ তথ্য প্রবাহ ও গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশের প্রেক্ষিতে দেশের মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে গণমাধ্যম সাক্ষরতা কার্যক্রম চালুর আহবান জানিয়েছেন। আজ সকালে রাজধানীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এ আহবান জানানো হয়। ঢাকা মহানগরীর মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের গণমাধ্যম সাক্ষরতা যাচাই জরিপে প্রাপ্ত ফলাফল উপস্থাপন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সরকারের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) ও নেদারল্যান্ড ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড এর সহায়তায় বৈঠকটি আয়োজিত হয়।
মহানগরী ও টঙ্গীর ১৬টি বিদ্যালয়ের ৫০০ জন ছাত্রছাত্রীর ওপর পরিচালিত এই জরিপের প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়,তাদের মধ্যে ৮০.৩ শতাংশ ছাত্রছাত্রী ইন্টারনেটসহ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। তাদের সংবাদ গ্রহণ করার মাধ্যমগুলোর মধ্যে রয়েছে ফেসবুক ৩২.৩ শতাংশ, ইউটিউব ২২.৬ শতাংশ, সংবাদপত্র ৩৫.৪ শতাংশ, টেলিভিশন ৪৯.৫ শতাংশ, রেডিও ৬.৪ শতাংশ, অনলাইন পোর্টাল ১৯ শতাংশ এবং অন্যের মুখ থেকে শোনা ৩৮.৭ শতাংশ।
জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, শতকরা ৬৫ ভাগ শিক্ষার্থীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একাউন্ট রয়েছে। তাদের মধ্যে ৭২ ভাগ শিক্ষার্থীর ফেসবুক এবং ৪৭.৫ ভাগ শিক্ষার্থীর ইউটিউব একাউন্ট আছে।
বৈঠকে বলা হয়, গণমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের এই অবাধ বিচরণকে কাজে লাগিয়ে তাদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সকলের। এ লক্ষ্যে সরকার, গণমাধ্যম, শিক্ষক ও অভিভাবকদের উদ্যোগী ভ’মিকা নিতে হবে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সাকমিড এর বোর্ড সদস্য নজর-ই-জিলানী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মো: আব্দুল মান্নান। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) এর মিডিয়া স্টাডিজ এন্ড জার্নালিজম বিভাগের প্রধান ড. জুড উইলিয়াম হেনিলো, জাতীয় কারিকুলাম ও টেক্সট বুক বোর্ডের সদস্য (প্রাথমিক) প্রফেসর এ কে এম রেজাউল হাসান, একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের এডুকেশনাল টেকনোলোজি এক্সপার্ট মো: রফিকুল ইসলাম সুজন, ইউনেস্কোর এডুকেশন বিভাগের প্রোগ্রাম অফিসার শহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক মনিনুর রশিদ, ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি কে এম শহীদুল হক, ব্র্যাক কর্মকর্তা মোফাকখারুল ইসলাম প্রমুখ এতেবক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য পেশ করেন সাকমিড এর ডেপুটি ডিরেক্টর সৈয়দ কামরুল হাসান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাকমিড এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আফিয়া পিনা এবং গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) এর সহযোগী প্রফেসর ড. সরকার বারবাক কার্মাল।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য প্রযুক্তিগত সেবাকে জনগণের কাছে পৌছে দিতে বিগত এক দশক ধরে ব্যাপকভাবে কাজ করছে। এরই মধ্যে জনগণ তার সুফল পেতে শুরু করেছে। দেশে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৮ কোটি ছাড়িয়েছে। তবে আশংকার বিষয় হচ্ছে আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যত বর্তমানের কিশোর এবং তরুণরা কোনো পূর্বপ্রস্ততি ছাড়াই ইন্টারনেটের মতো ব্যাপক একটি জগতে প্রবেশ করছে এবং অনেক ক্ষেত্রে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে। তারা বলেন, এই জরিপের ফলে মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীরা তথ্য ও সংবাদের সংবেদনশীলতা, সংবাদ বিশ্লেষেণ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কার্যকর ব্যবহার এবং ইন্টারনেট জগত সম্পর্কে পরিচিত হতে সক্ষম হবে।
বাসস/সবি/শহক/১৭১৫/কেএমকে