দেশে করোনায় আক্রান্ত ৩ হাজার ৭৭২, মৃতের সংখ্যা ১২০ জন

999

ঢাকা, ২২ এপ্রিল, ২০২০ (বাসস) : দেশে বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৩ হাজার ৭৭২ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৩৯০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। গতকালের চেয়ে আজ আক্রান্ত কমেছে ৪৪ জন। গতকাল আক্রান্ত হয়েছিল ৪৩৪ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় দেশে আরও ১০ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২০ জনে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন আরো ৫ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৯২ জন।
দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান। বুলেটিন উপস্থাপনের শুরুতে অধিদফতরের কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. শহীদুল্লাহ পিপিইসহ চিকিৎসা সামগ্রী গ্রহণ ও বিতরণের তথ্য তুলে ধরেন।
ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল ৩ হাজার ৫২টি। আগের দিনের কিছু নমুনা পরীক্ষা বাকি ছিল, ওইগুলোসহ মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩ হাজার ৯০টি। নমুনা পরীক্ষার হার আগের দিনের চেয়ে দশমিক ১ শতাংশ বেশি।সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩২ হাজার ৬৭৪টি।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, দেশের ৫৫ জেলায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা বিভাগেই ৭৩ শতাংশ। এর প্রায় অর্ধেকই ঢাকা মহানগরীর। ঢাকা বিভাগের ৪টি জেলা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জে আছে ৪৯৯ জন। শুধু সিটি করপোরেশনেই আছে ৩৬৪ জন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৩৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৬ জন। নারায়ণগঞ্জের পরেই রয়েছে গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার অবস্থান।
বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৭ জন এবং নারী ৩ জন। এদের মধ্যে ঢাকার ভিতরে ৭ জন এবং ঢাকার বাইরের ৩ জন রয়েছেন। মৃতদের মধ্যে ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের ১ জন করে রয়েছেন। ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ২ জন রয়েছেন।’
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ১৫০ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৯শ’ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৫ জন। এনিয়ে ছাড় পেয়েছেন মোট ৫৯৪ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ৩ হাজার ২৪০ জনকে। এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩৪ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ৩২৭ জনকে। এনিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে মোট ৭ হাজার ৩৩৯ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ৩ হাজার ৫৬৭ জনকে এবং এ পর্যন্ত নেয়া হয়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৩৭৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩ হাজার ১৭২ জন এবং এনিয়ে মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮০ হাজার ১৭৬ জন।
ডা. মো. শহীদুল্লাহ পিপিইসহ চিকিৎসা সামগ্রী গ্রহণ ও বিতরণের তথ্য তুলে ধরে বলেন, ‘সিএমএসডি থেকে নির্দিষ্ট বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে যথাযথ মান পরীক্ষা করে রাজধানীসহ সারাদেশের হাসপাতালে মাস্ক ও গ্লাভস সরবরাহ করা হচ্ছে। সিএমএসডির বাইরে অনেক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান নিজস্ব উদ্যোগে বা অন্য কারও কাছ থেকে সংগ্রহ করে তা স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে বিতরণ করছে। ফলে এসব চিকিৎসা সামগ্রী ঘিরে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে কেনা কিংবা অনুদানে প্রাপ্ত সামগ্রীর ব্যাপারে চিকিৎসক ও নার্সরা জানেন না বলে সিএমএসডিকে দোষারোপ করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে এগুলো নিম্নমানের মাস্ক ও গ্লাভস, যা সিএমএসডি থেকে সরবরাহ করা হয়নি।’
তিনি জানান, গতকাল পর্যন্ত সিএমএসডি পিপিই সংগ্রহ করেছে ১৪ লাখ ৯৮ হাজার ১৫০টি। বিতরণ করেছে ১১ লাখ ৬৮ হাজার ২৪৮টি। বর্তমানে মজুদ রয়েছে ৩ লাখ ২৯ হাজার ৯০২টি। সিএমএসডি প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ হাজার পিপিই গ্রহণ ও বিতরণ করে থাকে। বর্তমানে সিএমএসডি বিভিন্ন গ্রেডের এবং উন্নতমানের পিপিই পাচ্ছে এবং কোভিড-১৯ এর জন্য ডেডিকেটেড হাসপাতালে বিতরণ করছে। এছাড়া লক্ষাধিক এন-৯৫, কেএন-৯৫, এসইপি-২ ও পি-২ বা সমমানের মাস্ক মজুদ রয়েছে। এগুলো কোভিড হাসপাতাল ও পিসিআর ল্যাবরেটরিতে বিতরণ করা হচ্ছে।