বাজিস-১ : ফেনীতে আউশ মৌসুমে দ্বিগুন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা

141

বাজিস-১
আউশ-লক্ষ্যমাত্রা
ফেনীতে আউশ মৌসুমে দ্বিগুন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা
ফেনী, ২০ এপ্রিল, ২০২০ (বাসস) : আউশ মৌসুমে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সরকার গ্রহণ করেছে নানামুখি পদক্ষেপ। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ফেনী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ৩ হাজার কৃষককে ১৫ টন বীজ ও ৯০ টন দুই ধরনের সার প্রণোদনা দিয়েছে। এখন মাঠে শুরু হয়েছে বীজতলা তৈরীর কাজ।
জেলা কৃষি পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান বাসসকে বলেন, এ মৌসুমে ফেনীতে অনেক জমি অনাবাদি থেকে যায়। এগুলো চাষের আওতায় আনা গেলে জেলার খাদ্যভান্ডার আরও স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। তিনি বলেন, চলমান অচলাবস্থা ভবিষ্যতে যেন খাদ্য ঘাটতির সৃষ্টি না হয় তাই সরকার এ সময়টাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।
জেলা কৃষি পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনীর ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে চলমান স্থবিরতায় অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিলেও আউশ মৌসুমে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বড় ভূমিকা রাখবে। এক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী জমির মালিকদের চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনী অফিস সূত্র জানায়, এ বছর জেলায় ১১ হাজার ৯৯৫ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যদি আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূলে থাকে তবে ৩১ হাজার ৩৪৭ টন চাল উৎপাদনের সুযোগ থাকবে।
সূত্র জানায় ২০১৯ সালে জেলায় মাত্র ৫ হাজার ২৫৫ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষাবাদ হলেও এ বছর ফেনী সদরে ১ হাজার ৯৫ হেক্টর, ছাগলনাইয়া ২৮০ হেক্টর, ফুলগাজীতে ১৪০ হেক্টর, পরশুরাম ৭৫ হেক্টর, দাগনভূঞা ৫৭২ হেক্টর ও সোনাগাজীতে ৯ হাজার ৮৬৯ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
একই সূত্রমতে জেলায় আবাদি জমির পরিমাণ ৬৯ হাজার ৯২৫ হেক্টর। ফেনীতে খাদ্য চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৮৩০ টন চাল। গত বছর আউশ, আমন ও বোরো মওসুম মিলে সাড়ে ১১ শতাংশ বীজ ও অপচয় বাদ দিয়ে উৎপাদন হয়েছে ৩ লাখ ২ হাজার ৮৮ টন চাল। উদ্বৃত্ত ছিল ৪৮ হাজার ২৫৮ টন চাল। সবচেয়ে বেশী উৎপাদন হয় আমন মৌসুমে। গতবছর আমনে উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৫ হাজার ৭২৬ টন চাল।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমীন আক্তার জানান, আমন মৌসুমে সদর উপজেলাসহ সর্বত্র প্রায় সব জমিতে আবাদ হয়। আউশ মৌসুমে এ হার তালানিতে ঠেকে। তিনি বলেন, গতবছর মাত্র ৪শ’ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। এবারের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষাবাদ।
এ মৌসুমে সিংহভাগ আবাদি জমি পতিত থাকার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এসময় বৃষ্টির অভাব, দিনমজুরের সংকট, কৃষকের নিজস্ব জমির অভাব, তীব্র গরম হওয়ায় আউশ ধানে কৃষকের আগ্রহ নেই। পাশাপাশি প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল হওয়ায় কৃষি উদ্যোক্তার অভাব রয়েছে। ফসল ঘরে তোলার সময় হলে অতিবৃষ্টিতে ক্ষতি, অল্প জমিতে চাষাবাদের ফলে পোকামাকড় ও পাখির আক্রমণে ফসলহানি চাষাবাদে অনাগ্রহের অন্যতম কারণ।
বাসস/সংবাদদাতা/১১১৫/কেজিএ