বাসস ক্রীড়া-১ : সে দিন ঈশ্বর আমার পক্ষে ছিল

208

বাসস ক্রীড়া-১
ক্রিকেট-সাকলাইন
সে দিন ঈশ্বর আমার পক্ষে ছিল
করাচি, ১৬ এপ্রিল ২০২০ (বাসস) : ১৯৯৯ সালে উত্তেজনাপূর্ণ চেন্নাই টেস্টে ভারতকে ১২ রানে হারিয়েছিল সফরকারী পাকিস্তান।
দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ২৩৮ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। জবাবে ২৫৪ রান করে ভারত। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮৬ রান করে সফরকারী পাকিস্তান। ফলে ম্যাচ জিততে ২৭১ রানের টার্গেট পায় ভারত।
সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে ভারতের টপ-অর্ডার ধসে পড়ে। ৮২ রান তুলতেই ৫ ব্যাটসম্যান প্যাভিলিয়নে ফিরেন। তবে ক্রিজে শচীন টেন্ডুলকার থাকায় জয়ের স্বপ্নে বিভোর ছিলো ভারত। উইকেটরক্ষক নয়ন মোঙ্গিয়াকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ১৩৬ রানের জুটি গড়ে ভারতকে খেলায় ফেরান টেন্ডুলকার। মোঙ্গিয়া ৫২ রানে থামলেও সেঞ্চুরি তুলে নেন টেন্ডুলকার।
মোঙ্গিয়াকে হারালেও হাল ছাড়েননি টেন্ডুলকার। ভারতকে জয়ের দিকেই টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এই ইনিংস খেলার পথে পিঠে ব্যাথাও পান টেন্ডুলকার। তারপরও হাল ছাড়েননি তিনি। কিন্তু দলীয় ২৫৪ রানে ভারতের স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায়। পাকিস্তানের অফ-স্পিনার সাকলাইন মুস্তাকের বলে তৎকালীন পাকিস্তান অধিনায়ক ওয়াসিম আকরামকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন টেন্ডুলকার। ২৭৩ বলে ১৮টি চারে ১৩৬ রান করেন টেন্ডুলকার।
টেন্ডুলকার যখন ফিরেন তখন জয় থেকে মাত্র ১৭ রান দূরে ভারত। কিন্তু টেন্ডুলকারের বিদায়ের পর ভারতের বাকী ৩ টেল-এন্ডার মাত্র ৪ রান যোগ করতে পারেন। ফলে ২৫৮ রানে অলআউট হয় ভারত। আর ম্যাচ জিতে নেয় পাকিস্তান। এই ইনিংসে ৯৩ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন সাকলাইন। তবে ম্যাচ সেরা হয়েছেন টেন্ডুলকার।
২১ বছর পর ঐ টেস্টে স্মৃতি রোমান্থন করেছেন পাকিস্তানের সাকলাইন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিওতে সাকলাইন বলেন, ‘উপরওয়ালা সে দিন আমার সাথে ছিলেন। ভাবিনি টেন্ডুলকারকে আউট করতে পারবো। কিন্তু উপরওয়ালার পরিকল্পনা মতোই তো সব হয়। জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত এটা আমাকে স্বস্তি দেবে, ওই দিন টেন্ডুলকারকে ফেরাতে পেরেছিলাম। আমার নাম টেন্ডুলকারের নামের সাথে জুড়ে থাকবে রেকর্ড বইয়ে।’
স্মৃতিচারণে সাকলাইন আরও বলেন, ‘অধিনায়ক ওয়াসিম আকরাম আমার উপর ভরসা রেখেছিলেন। বিশ্বাস করছিলেন যে, আমি দলের জন্য জয়ের পথ তৈরি করতে পারবো। তার ঐ কথাগুলো আমাকে সাহস দিয়েছে। কয়েকটা বাউন্ডারি খেয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত ফিরিয়েছিলাম টেন্ডুলকারকে। তিনি দুর্দান্ত ব্যাটিং করছিলো। তার চোখ খুব তীক্ষè ছিল। সে সব কিছুই দ্রুত ধরে ফেলতে পারত। আর তাই দুসরা করতে ভয় পাচ্ছিলাম। ভাবছিলাম, যদি বাউন্ডারি মেরে দেয়। পিচ ছিল মন্থর, তাই খুব কঠিন হয়ে পড়ছিল। উপরওয়ালার জন্যই ফেরাতে পেরেছিলাম টেন্ডুলকারকে।’
বাসস/এএমটি/০৯৫০/স্বব