বাসস ক্রীড়া-১০ : অসহায়দের সহায়তা করেই চলেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা

430

বাসস ক্রীড়া-১০
ক্রিকেট-বিসিবি
অসহায়দের সহায়তা করেই চলেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা
ঢাকা, ১১ এপ্রিল ২০২০ (বাসস) : প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন দিন মজুররা। একদিন আয় বন্ধ থাকলেই, এক বেলা খাবার যোগাতে পারছে না তারা। সেক্ষেত্রে গত ২৫ মার্চ থেকে করোনাভাইরাসের কারনে আয়-রোজগার বলতে কিছুই হচ্ছে না তাদের। এমন অবস্থায় সরকারের পাশাপাশি দেশের অসহায়-দুস্থদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন দেশের বিত্তশালীরা। সহায়তা অব্যাহত রেখেছেন দেশের ক্রিকেটাররাও। জাতীয় ক্রিকেট দল এবং চুক্তির বাইরে থাকা খেলোয়াড়রাও নিয়মিত সহায়তা করছেন অসহায় মানুষদের।
জাতীয় দলের বাইরে থাকা খেলোয়াড়রা ঘরোয়া লিগের উপর নির্ভরশীল। তাদের ভবিষ্যতই এখন অনেকটা অনিশ্চিত। এরমধ্যে করোনাভাইরাসের কারনে পুরো বিশ্বে মৃত্যু সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১লাখ। প্রতিদিনই এই সংখ্যা মিনিটে-মিনিটে বাড়ছে।
দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেট আসর হচ্ছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল)। এটি বেশ কিছু ক্রিকেটারের আয়-রোজগারের অন্যতম মাধ্যম। কিন্তু প্রথম রাউন্ডের পরই এই লিগটি স্থগিত হয়ে পড়েছে।
করোনাভাইরাস দিন-দিন ছড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশে। এতে এই মৌসুমে ডিপিএল অনিশ্চিত। তাই এ বছর লিগ না হলে ক্রিকেটাররা ক্লাবগুলোর কাছ থেকে এই মৌসুমে পুরো টাকা পাবে কি-না, তার কোন গ্যারান্টি নেই।
তাই খেলোয়াড়রা বিব্রবতর পরিস্থিতিতে পড়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ইতোমধ্যে চুক্তির বাইরে বেশ কিছু নারী-পুরুষ ক্রিকেটারদের জন্য যথাক্রমে ৩০হাজার ও ২০হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা করেছে। এই অর্থ তাদের পরিবারকে পুরো বছর চালানোর জন্য যথেষ্ট নয়।
ডিপিএলের পাশাপাশি খেলোয়াড়রা বিসিএল, এনসিএল ও বিপিএল খেলে সারা বছর তাদের পরিবারকে চালিয়ে থাকে।
কিন্তু যখন তাদের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মুখে, তারপরও অসহায়-দুস্থদের জন্য আর্থিক সহায়তা করতে পিছপা করেনি সেইসব খেলোয়াড়রা।
বিসিবির চুক্তিবদ্ধ ১০ খেলোয়াড় ও গেল তিন মাসে জাতীয় দলের হয়ে খেলা অন্য ১০ খেলোয়াড় মিলে তাদের এক মাসের বেতনের অর্ধেক দিয়ে তহবিল গঠন করেছে। যা প্রায় ২৬ লাখ টাকা।
এছাড়া ৯১জন প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটার তাদের এক মাসের বেতনের অর্ধেক করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে সহায়তা করেছে। যা পরিচালনা করছে সিডব্লুএবি।
সর্বশেষ গত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা সিডব্লুএবির তহবিলে আড়াই লাখ টাকা প্রদান করেছে।
এতে বলা যায় না, তাদের আর্থিক অবস্থা খুব ভালো। বেশ কিছু খেলোয়াড়, যাদের আর্থিক খুব ভালো না হবার পরও তারা পিছিয়ে যায়নি।
আর্থিক সহায়তা করা ছাড়াও, জনগনের মাঝে সচেনতা তৈরিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে ক্রিকেটাররা।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের ডান-হাতি পেসার রুবেল হোসেন বাসসকে বলেন, ‘দেশের জনগনকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। করোনাভাইরাসের কারনে এখন পুরো বিশ্ব বিপদে রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা খেলোয়াড়রা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। সকল খেলোয়াড়ের আর্থিক অবস্থা এক নয়, তবে মানুষের জন্য ভালো কিছু করার জন্য তা বাঁধা সৃষ্টি করছে না। যখনই সুযোগ আসবে আমরা কিছু করতে পিছপা হবো না।’
করোনাভাইরাসের কারনে গেল মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশের ক্রিকেটের সকল কার্যক্রম স্থগিত করে বিসিবি। কিন্তু এখনো কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না, কোভিড-১৯এর কারনে চলমান পরিস্থিতি কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে।
আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮২। মারা গেছে ৩০ জন। পুরো বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ লাখ ৯৬ হাজারের বেশি। আর মৃত্যু হয়েছে, ১ লাখ ২ হাজারের বেশি।
বাসস/এএমটি/১৯৩০/স্বব