দেশে করোনায় একদিনে ৬ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৯৪

642

ঢাকা, ১০ এপ্রিল, ২০২০ (বাসস) : করোনায় দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে।
গত ২৪ ঘন্টায় দেশে আরও ৯৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪২৪ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস সম্পর্কে নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে আজ এ তথ্য জানান রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি নিজ বাসা থেকে অনলাইনে যুক্ত হন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ডা. সানিয়া তাহমিনা জোহরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। তিনিও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।
বুলেটিনে মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১ হাজার ১৮৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে নতুন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৯৪ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২৪ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে নতুন করে মারা গেছেন আরও ৬ জন। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৭।
তিনি বলেন, ‘নতুন আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৬৯ জন ও নারী ২৫ জন। এদের মধ্যে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ঢাকায় ৩৭ জন এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নারায়ণগঞ্জে ১৬ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১০ বছরের নিচে ৪ জন, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী ৬ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ১২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ২৯ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ১৬ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ১৪ জন এবং ষাটোর্ধ্ব ১৭ জন।
ইতোপূর্বে ৩৩ জন সুস্থ হলেও নতুন কেউ গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হননি বলেও তিনি জানান।’
যারা মারা গেছেন, তাদের ৩ জন রাজধানী ঢাকার, ২ জন নারায়ণগঞ্জের এবং ১ জন পটুয়াখালীর রোগী ছিলেন। এদের মধ্যে ৫ জন পুরুষ ও ১ জন নারী।
ডা. সানিয়া তাহমিনা বলেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় রাজধানীসহ সারাদেশে আইসোলেশন বেড সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। ঢাকার বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে (আইসিসিবি) ২ হাজার বেড, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের একটি মার্কেটে ১ হাজার ৪০০ বেড ও উত্তরার দিয়াবাড়িতে চারটি ভবনে ১ হাজার ২০০ বেডের আইসোলেশন ইউনিটসহ মোট ৫ হাজার ৬০০ বেডের আইসোলেশন ইউনিট যুক্ত হচ্ছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৫৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে এবং ৪২১ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে সারাদেশে ১২ হাজার ৬০১ জন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
তিনি বলেন, সারাদেশে প্রতিনিয়ত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। এই মুহূর্তে জেলা-উপজেলাসহ সারাদেশে ৪৭০টি প্রতিষ্ঠানকে কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। যেখানে তাৎক্ষণিকভাবে ২৪ হাজার ৪৯৩ জনকে কোয়ারেন্টাইন করা যাবে।
তিনি জানান, করোনা চিকিৎসায় সারাদেশে হাসপাতালগুলোতে আইসোলেশন বেড রয়েছে ৭ হাজার ৬৯৩টি, আইসিইউ বেড রয়েছে ১১২টি এবং ডায়ালাইসিস বেড আছে ৪০টি।
করোনা প্রতিরোধে দেশবাসীকে কোয়ারেন্টাইন বিধিমালা কঠোরভাবে মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ব্যক্তি পর্যায়ে সতর্ক থাকলে করোনা বিস্তার রোধ করা সম্ভব হবে। আপনার ভাল আপনারই হাতে।’
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিআর’র হটলাইন নম্বরে এ পর্যন্ত ১৮ লাখ ৪০ হাজার ৫২২ টি কল এসেছে। গত ২৪ ঘন্টায় ১ লাখ ২২ হাজার ৪৫ টি কল এসেছে।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৩৯ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ২ হাজার ৯৯৫ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।