ট্রাম্প করোনা পরিস্থিতির দ্রুত উত্তরণের আশা ছেড়ে দিয়েছেন

291

ওয়াশিংটন, ৩০ মার্চ, ২০২০ (বাসস ডেস্ক) : প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে করোনা জরুরী নিষেধাজ্ঞা প্রতিপালনের মেয়াদ আরো এক মাসকাল বাড়িয়ে দিয়েছেন এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরে আসার বিষয়ে তাঁর আগের কাঙ্খিত সময়সীমা পরিত্যাগ করেছেন। এদিকে, স্পেন ভয়াবহতম দিন পার করেছে।
ট্রাম্প ইতোপূর্বে যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। তিনি আরো বলেছেন, দেশটিতে করোনায় মৃত্যুর হার দু সপ্তাহ ধরে বেড়ে যেতে পারে এবং তাই সামাজিক দূরত্ব বজায় সংক্রান্ত নির্দেশনা অন্তত এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত বহাল রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এই মহামারি রোধে বিশে^র ৪০ শতাংশের বেশি মানুষকে এখন বাড়িতে আবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। ভয়াবহ করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত ৩৩ হাজার ৮৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালগুলো অতি দ্রুত করোনা আক্রান্ত রোগীতে ভরপুর হয়ে পড়েছে। এশিয়ায় প্রথম এই ভাইরাস সংক্রমন ঘটলেও বৈশি^ক অর্থনীতিকে পাল্টে দিয়েছে এবং প্রাত্যহিক জীবনকেও নজীরবিহীনভাবে বিঘিœত করেছে।
স্পেনে পর পর তিনদিনে মৃত্যুর হার বেড়ে গিয়ে সেখানে গত ২৪ ঘন্টায় ৮৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস রোগির সংখ্যা গত দুই দিনে দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা হচ্ছে নিউইয়র্ক।
ট্রাম্প বলেন, আমেরিকানদের এখন বাড়িতে থাকার জরুরি নির্দেশনা মেনে চলাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
ইতোপূর্বে ভাইরাসের বিরুদ্ধে বিজয়ের যে ঘোষণা দিয়েছিলেন তা থেকে সরে এসে তিনি বলেন, ‘জয়লাভের আগে জয়ের ঘোষণা দেয়া হবে মারাত্মক ভুল।’
ইতোপূর্বে এপ্রিলের মধ্যভাগে যুক্তরাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্য থেকে সরে এসে ট্রাম্প আগামী ১ জুন নাগাদ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরো বলেন, ‘অদৃশ্য এই অভিশাপ ও অদৃশ্য শত্রুকে আমরা পরাস্ত করবো।’
মার্কিন বিজ্ঞানী অ্যান্থোনি ফাউসি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, কোভিট-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ১ লাখ থেকে ২ লাখ লোকের মৃত্যু হতে পারে। এ আশঙ্কাকে ট্রাম্প ‘ভয়ঙ্কর’ বলে বর্ণনা করেছেন।
এএফপির তথ্য অনুসারে, ৩ শ ৩৮ কোটি মানুষকে বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভাইরাসের কারণে বহু মানুষ কর্ম থেকে বিরত, নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে ও খেলা দেখা বন্ধসহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র বাধাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ দেশ ইটালিতে মোট ১০ হাজার ৭৭৯ জনের ও দ্বিতীয় ক্ষতিগ্রস্থ দেশ স্পেনে ৬ হাজার ৮০৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই দুই দেশের মোট মৃত্যুর সংখ্যা বিশে^র মোট মৃত্যু সংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি।
জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে এখন বিশে^র সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি লোক কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত।
যুক্তরাষ্ট্রে রোববার মৃতের সংখ্যা মোট ২ হাজার ৪৬৭ জনে পৌঁছেছে। নিউইয়র্কের পাশাপাশি এখন ডেট্রয়েট ও নিউ ওরলিনস নগরীতে অধিক সংখ্যক লোক আক্রান্ত হয়েছে।
এদিকে আটলান্টিকের ওপারে যুক্তরাজ্যে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ২০০ জন অতিক্রম করেছে। গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আক্রান্ত হওয়ার পর সতর্ক বার্তা দিয়েছেন যে, সামনের দিনগুলোয় অশনি সংকেত দেখা যাচ্ছে।