বাসস ক্রীড়া-১১ : ফুটবলারদের দলবদল থেমে যাওয়ায় বাড়ছে অনিশ্চয়তা

152

বাসস ক্রীড়া-১১
ফুটবল-করোনা -ইউরোপ-দলবদল
ফুটবলারদের দলবদল থেমে যাওয়ায় বাড়ছে অনিশ্চয়তা
প্যারিস, ২২ মার্চ ২০২০ (বাসস/এএফপি) : করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বাড়ায় থেমে গেছে ফুটবলারদের দলবদল। যে কারণে পরের বছর কোন খেলোয়াড় কোথায় যাচ্ছে সেটি নিয়ে যে রকম গুঞ্জন উঠতে দেখা যেত তার লেশমাত্রই নেই এবার। সবাই যেন একেবারেই নিশ্চুপ। জানার আগ্রহ নেই আগামী মৌসুমে কোথায় খেলতে যাচ্ছেন নেইমার বা পল পগবা।
আগামী মৌসুম কখন শুরু হবে সেটাই জানেনা কেউ। আর ফুটবল ক্লাবগুলো যে আর্থিক সংকটে পড়তে যাচ্ছে তার প্রভাব এমনিতেই পড়তে বাধ্য দলবদলের বাজারে।
এই সপ্তাহেই আর্থিক গবেষনা প্রতিষ্টান কেপিএমজির এক গবেষনা রিপোর্টে বলা হয়েছে যে করোনার কারণে মৌসুমের বাকী খেলাগুলো বাতিল হলে শুধুমাত্র ইউরোপের শীর্ষ ৫টি লীগের আর্থিক ক্ষতির পরিমান দাঁড়াবে চার বিলিয়ন ইউরোরও বেশী।
এতেই প্রতীয়মান হয় ক্লাবগুলো কতটা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে। আর বিশ্বব্যাপী এর প্রভাবে সবচেয়ে বেশী বিপদে পড়তে পারে ছোট ক্লাবগুলো। মোনাকোর কথাই ধরা যাক, কিলিয়ান এমবাপ্পের মত তারকা খেলোয়াড়দের বিক্রি করে বিপুল পরিমান অর্থ আয় করেছে তারা। শুধুমাত্র এমবাপ্পেকে ২০১৮ সালে প্যারিস সেন্ট জার্মেই’র (পিএসজি) কাছে বিক্রি করেছে ১৮০ মিলিয়ন ইউরোতে। আয় করা ওই অর্থ তারা আবার খরচ করেছে নতুন খেলোয়াড় নিয়োগে। এভাবেই তারা ক্লাবের আয় নির্বাহ করে।
মোনাকোর সহ-সভাপতি ওলেগ পিত্রোভ বলেন,‘ বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আমরা এভাবে অর্থ আয় করতে পারব না। এমনকি এমবাপ্পে, নেইমার বা পগবা কোথায় যোগ দিবেন সে বিষয়ে পর্যন্ত কারো কোন আগ্রহ নেই। এটি খুবই উদ্বেগের বিষয়।’
সাধারণত উয়েফার নির্দেশনা অনুযায়ী ৩০ জুনের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় ইউরোপীয় মৌসুম। আর ওই সময়ের মধ্যেই সাধারণত ভাগ ভাগ করে পরিশোধ করা হয় চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়দের বেতন ভাতা। করোনার কারণে এবারের মৌসুম শেষ করা না গেলেও আগামী ১ জুলাই থেকে চুক্তিমুক্ত হয়ে যাবেন ম্যানচেস্টার সিটির ডেভিড সিলভা, চেলসির উইলিয়ান বা পিএসজির থিয়াগো সিলভা ও এডিনসন কাভানির মত ফুটবল তারকারা।
এমন পরিস্থিতিতে ক্লাব ও খেলোয়াড় উভয় পক্ষের স্বার্থ অক্ষন্ন রেখে করনীয় ঠিক করতে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। এরই মধ্যে অবশ্য আর্থিক অনটনে পড়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে ক্লাবগুলো।
লিয়ঁ সহ ফ্রান্সের কিছু ক্লাব অর্থিক সাশ্রয়ের লক্ষ্যে কম সময় নিয়ে তাদের খেলোয়াড়দের নিয়ে কাজ করছে। এদিকে সুইস ক্লাব সিওন তাদের নয় খেলোয়াড়ের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে। যারা সাময়িক বেকরত্ব বরণে রাজি ছিল না।
স্কটল্যান্ডে সাধারণত মে মাসে মৌসুমের শেষ ম্যাচটি মাঠে গড়ানোর পর চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে ধুকতে থাকা হেয়ার্টস ৫০ শতাংশ বেতন নেয়ার জন্য তাদের স্টাফ ও খেলোয়াড়দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে চুক্তির বাইরে থাকা তরুন খেলোয়াড়রা পড়েছে মহা বিপাকে। আর্সেনালের আলেক্সান্দ্রে লেকাজেট্টি সহ বিভিন্ন খেলোয়াড়ের এজেন্ট ডেভিড ভেন্ডিটেলি তাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন,‘ এসব খেলোয়াড়রা খুবই খারাপ পরিস্থিতিতে পড়তে যাচ্ছেন।’ উন্মুক্ত খেলোয়াড়দের এরকম অনেক এজেন্টই তাদের জন্য বাজার খুঁজে বেড়াচ্ছে।’
অবশ্য বাজারের চেহারায়ও এসেছে আমুল পরিবর্তন। এখন সবাই দরকষাকষি বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে বর্তমান বাস্তবতায় কিছুই করার নেই। গ্যারেথ বেল সহ অনেক তারকা খেলোয়াড়ের এজেন্ট জোনাথন বার্নেট বলেন,‘ এই মুহুর্তে কেউ এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে রাজি নন। এখন আমাদের প্রথমিক কাজ হচ্ছে তাদেরকে ভালভাবে দেখবাল করে রাখা। এই মুহুর্তে আমরা সবাই চরম অনিশ্চয়তা সহ নানান সমস্যার মুখে পড়েছি। যে কারণে গ্রীষ্মকালীন দল বদল নিয়ে ভাববার ফুরসত নেই। কারণ আমরা জানিনা কতদিন পর্যন্ত চলবে এমন পরিস্থিতি।’
বাসস/এএফপি/অনু/এমএইচসি/১৮৪০/স্বব