বাসস ক্রীড়া-৯ : জয় দিয়ে শুরু তামিমের প্রাইম ব্যাংকের

115

বাসস ক্রীড়া-৯
ক্রিকেট-ডিপিএল
জয় দিয়ে শুরু তামিমের প্রাইম ব্যাংকের
ঢাকা, ১৬ মার্চ ২০২০ (বাসস) : বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) দ্বিতীয় দিন নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছে তামিম ইকবালের প্রাইম ব্যাংক। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ২৫২ রানের টার্গেট দিয়ে ২০১ রানে প্রতিপক্ষের নবম উইকেটের পতন ঘটিয়ে জয়ের পথ সহজ করে ফেলেছিলো তামিম ইকবালের প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। কিন্তু শেষ উইকেটে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের স্পিন অলরাউন্ডার মাহেদি হাসান। শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই করেছেন তিনি। কিন্তু তারপরও দলের হার এড়াতে পারেননি মাহেদি লক্ষ্যের কাছাকাছি গিয়েও প্রাইম ব্যাংকের কাছে ৯ রানে ম্যাচ হারে গাজী গ্রুপ। প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৫১ রান করে প্রাইম ব্যাংক। জবাবে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪২ রান করে গাজী গ্রুপ।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিংএর সিদ্বান্ত নেন গাজীর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে ইনিংস শুরু করেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও এনামুল হক কিজয়। স্কোর বোর্ডে কোন রান জড়ো হওয়ার আগেই পেসার হাসান মাহমুদের বলে বিদায় নেন বিজয়।
তিন নম্বরে নামা রনি তালুকদারকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের নয়া ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে বেশ সর্তকই ছিলেন দু’জন। ৭৮ বল খেলে মাত্র ৪৬ রান যোগ করেন তামিম-রনি। চারে ৪৭ বলে মাত্র ১ বাউন্ডারিতে ব্যক্তিগত ১৯ রান করে নাসুম আহমেদের শিকার হন তামিম।
পাঁচ নম্বরে নামা রকিবুল হাসানও ব্যর্থ হয়েছেন। ৫ রান করে ফিরেন তিনি। এতে ৫৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে প্রাইম ব্যাংক। সেই চাপকে কিছুটা হলেও দূর করেন রনি ও মোহাম্মদ মিঠুন। দলকে তিন অংকে পৌছে দেন রনি-মিঠুন।
সাবলীল ভঙ্গিমায় নিজের ইনিংস শুরু করেছিলেন মিঠুন। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেননি তিনি। ২৭ রানে থামতে হয় তাকে। মাহমুদুল্লাহর বলে লেগ বিফোর হন ৩৯ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কা মারা মিঠুন।
সতীর্থ বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হলেও ঠিকই হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন রনি। তবে রনিকে ৭৯ রানে থামিয়ে প্রাইম ব্যাংককে বড় ধাক্কা দেন মাহমুদুল্লাহ। উইকেটে সেট হওয়া রনি ১০৪ বল খেলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান।
রনির পর অলক কাপালিকেও নিজের শিকার বানিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। ৩৯তম ওভার শেষে ১৫৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদেই পড়ে প্রাইম ব্যাংক। এ অবস্থায় ব্যাট হাতে চমক দেখান দুই টেল-এন্ডার নাহিদুল ইসলাম ও নাইম হাসান। ব্যাট হাতে ঝড়ই তুলেন তারা। শেষ ৬৫ বলে অবিচ্ছিন্ন ৯৬ রান যোগ করেন তারা। নাহিদুল হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিলেও ৩৬ বলে ৬টি চারে অপরাজিত ৪৬ রান করেন নাইম। ৩টি করে চার-ছক্কায় ৪৩ বলে অপরাজিত ৫৩ রান করেন নাহিদুল। দলের আটজন বোলারকে ব্যবহার করেছেন গাজীর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। তিনিই ছিলেন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকারী। ১০ ওভারে ৫৩ রান দিয়েছেন তিনি।
জয়ের জন্য নিজেদের ইনিংস শুরু করে দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় গাজী গ্রুপ। ওপেনার জাকির হাসান ৫ রান করে ফিরেন।
এরপর বআংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক মোমিনুল হক ও টি-২০ দলের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে স্কোরবোর্ডে রান জড়ো করতে থাকেন ওপেনার সৌম্য সরকার। দ্বিতীয় উইকেটে মোমিনুলের সাথে ৪৯ ও তৃতীয় উইকেটে মাহমুদুল্লাহর সাথে ৫১ রান যোগ করেন সৌম্য। হাফ-সেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় গিয়ে থামেন সৌম্য। ৫১ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৯ রান করেন তিনি।
বড় ইনিংস খেলতে পারেননি মোমিনুল-মাহমুদুল্লাহ। মোমিনুল ২৮ ও মাহমুদুল্লাহ ৩২ রান করে ফিরেন।
মিডল-অর্ডারেও বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হয়েছেন ইয়াসির আলি, আরিফুল হক ও উইকেটরক্ষক আকবর আলি। ইয়াসির ১, আরিফুল ২০ ও আকবর ৩১ রান করে ফিরেন। তাদের বিদায়ে ৪৫ ওভারে ২০১ রানে নবম উইকেট হারায় গাজী গ্রুপ। এতে ম্যাচ হার সময়ের ব্যাপার ছিলো গাজী গ্রুপের।
কিন্তু হাল ছাড়েননি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) পিঞ্চ হিটারের খ্যাতি পাওয়া মাহেদি। শেষ ব্যাটসম্যান হাসানকে নিয়ে লড়াই করেছেন তিনি। চার-ছক্কায় ফুলঝুড়িতে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদও নেন মাহেদি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলকে জয়ের স্বাদ দিতে পারেননি মেহেদি। ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৯ বলে ৫৬ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। হাসান অপরাজিত থাকেন ৬ রানে। প্রাইম ব্যাংকের মুস্তাফিজুর রহমান-নাহিদুল ইসলাম-অলক কাপালি ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন প্রাইম ব্যাংকের নাহিদুল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব : ২৫১/৬, ৫০ ওভার (রনি ৭৯, নাহিদুল ৫৩*, মাহমুদুল্লাহ ৩/৫৩)।
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স : ২৪২/৯, ৫০ ওভার (মেহেদি ৫৬*, সৌম্য ৪৯, নাহিদুল ২/৩০)।
ফল : প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৯ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : নাহিদুল ইসলাম (প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব)।
বাসস/এএসজি/এএমটি/১৭৫৫/স্বব