বাজিস-২ : ফেনীতে প্রথমবার আবাদ হয়েছে ‘সূর্যমুখী’

264

বাজিস-২
ফেনী-সূর্যমুখী
ফেনীতে প্রথমবার আবাদ হয়েছে ‘সূর্যমুখী’
ফেনী, ১৬ মার্চ, ২০২০ (বাসস) : জেলায় প্রথমবারের মত সূর্যমুখী ফুলের আবাদ করা হয়েছে। চলতি রবি মৌসুমে জেলার ৬টি উপজেলায় সরকারি অর্থায়নে ১০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, ভোজ্য তেলের আমদানী নির্ভরতা কমাতে ডাল তেল প্রকল্পের আওতায় ফেনীর ৬টি উপজেলায় ৫০টি প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনী অফিস সূত্রে জানা যায়, রাজস্ব অর্থায়নে ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় জেলার ৬টি উপজেলায় ৫০টি প্লটের ১০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্পাসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ মোশারফ হোসেন খান জানান, ভোজ্য তেলের আমদানী নির্ভরতা কমাতে সরিষা ও সূর্যমুখী চাষের উপর গুরুত্ব দিয়ে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। এ কর্মসূচিতে দেশে তেলের চাহিদা পূরণ করতে সূর্যমুখী আবাদে কৃষকদেরকে উৎসাহ ও প্রণোদনা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এ কর্মসূচির আওতায় ফেনীতে ১০ হেক্টর নির্বাচিত জমিতে ৫০টি প্রদর্শনীতে ৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা কৃষকদের প্রণোদনা দেয়া হয়েছে।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, আগামী সপ্তাহেই আবাদকৃত সূর্যমুখীর ফলন কৃষকদের ঘরে উঠবে। এ কর্মসূচিতে কৃষকের জমি এবং পরিশ্রম ছাড়া সকল সার, বীজ ও ব্যবস্থাপনা করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। তিনি বলেন, ফেনী সদরের ২ হেক্টর জমিতে ১২টি প্রদর্শনীর জন্য সরকার ৯০ হাজার ২৫৬ টাকা প্রণোদনা দিয়েছে। এসব প্রণোদনার অর্থ দিয়ে কৃষকদের মাঝে উন্নত মানের বীজ, সার ও নগদ সহায়তা দেয়া হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস জানায়, এ কর্মসূচির আওতায় ফেনী সদরে ২ হেক্টর জমিতে ১২টি, ছাগলনাইয়া উপজেলায় ১ হেক্টর জমিতে ৭টি, ফুলগাজীতে ২ হেক্টর জমিতে ৫টি, পরশুরামে ১ হেক্টর জমিতে ৬টি, দাগনভূঞায় ১ হেক্টর জমিতে ৮টি ও সোনাগাজীতে ৩ হেক্টর জমিতে ১২টি প্রদর্শনী করা হয়েছে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিগত বছর গুলোতে কৃষকরা জমিতে রবি মৌসূমে তেমন কোন ফসল করতেন না। কিছু কিছু জমিতে খাল-বিল থেকে পানি দিয়ে সেচের মাধ্যমে শাক সবজি, ডাল, আলু জাতীয় ফসল চাষ করতেন। রবি মৌসূমে বাকী জমি থাকত পতিত। কিন্তু কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় এবার পতিত জমিতে সূর্যমুখী চাষ করছেন তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক জানান, সূর্যমুখীর চারা রোপণের ১১৫ দিনের মধ্যে ফসল পাওয়া যায়। সূর্যমুখী ফুলের দানা থেকে ভোজ্যতেল উৎপাদন করা হয়। এক একর জমিতে সূর্যমুখী চাষে খরচ পড়ে প্রায় ১২ হাজার টাকা। এক একরে সূর্যমুখী উৎপাদন হয় ৩৩-৩৫ মণ। একমণ সূর্যমুখী ফুলের বীজের বাজার মূল্য প্রায় ১৩-১৪ শ টাকা। একর প্রতি উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে কৃষকের প্রায় কমবেশি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ থাকে। এছাড়াও সূর্যমুখী ফুলের বীজ সংগ্রহ করার পর গাছগুলো জমিতে পঁচিয়ে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এতে জমির জৈবসারের ঘাটতি পূরণ হয়। অনেক কৃষক পরিবার তার দৈনন্দিন জীবনে রান্নার কাজের জ্বালানি হিসেবে সূর্যমুখীর খড়ি ব্যবহার করে থাকে। এতে করে জ্বালানি কাঠের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস পাচ্ছে।
বাসস/সংবাদদাতা/১০১৫/নূসী