বাসস দেশ-১৮ (লীড) : করোনা ভাইরাস নিয়ে রাজনীতি না খুঁজতে বিএনপির প্রতি আহবান তথ্যমন্ত্রীর

124

বাসস দেশ-১৮ (লীড)
তথ্যমন্ত্রী-করোনা
করোনা ভাইরাস নিয়ে রাজনীতি না খুঁজতে বিএনপির প্রতি আহবান তথ্যমন্ত্রীর
ঢাকা, ১১ মার্চ, ২০২০ (বাসস) : আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ করোনা ভাইরাসকে একটি বৈশ্বিক দুর্যোগ হিসেবে অভিহিত করে এনিয়ে প্রশ্ন এবং রাজনীতি না করতে বিএনপির প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিমানন্দর, সমুদ্রবন্দর এবং স্থলবন্দরে ব্যবস্থা নেয়া সত্ত্বেও দু’জন বাংলাদেশী বিদেশ থেকে আক্রান্ত হয়ে দেশে এসেছে। বিএনপিকে বলবো এগুলো নিয়ে প্রশ্ন এবং রাজনৈতিক বাদানুবাদ না করে একযোগে কাজ করা প্রয়োজন। তাদেরকে বলবো সবকিছুর মধ্যে রাজনীতি না খোঁজার জন্য।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির কাজ হচ্ছে সমালোচনা করা। তারা ভুল খোঁজার রাজনীতি করছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বলবো এ বিষয়ে একটু পড়াশোনা করার জন্য। করোনা ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে সনাক্ত করা যায় না। সংক্রমিত হওয়ার ১৪ দিন পরে তার দেহে করোনা ভাইরাস আছে কিনা সেটি নির্নয় করা যায়।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘করোনা ভাইরাস একটি বৈশ্বিক দুর্যোগ। অর্থনৈতিক ও কারিগরি সক্ষমতা আমাদের চেয়ে বেশি হওয়ার স্বত্তে¡ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স জার্মানি, বেলজিয়াম, সিঙ্গাপুরসহ পৃথিবীর প্রায় একশটি দেশ করোনা ভাইরাস থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দেশে এ রোগের চিকিৎসার ব্যাপারে সমস্ত  পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। সেই মোতাবেক কার্যক্রম চলছে।
তথ্যমন্ত্রী আজ ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ের নতুন ভবনে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
এসময়, সম্প্রতি গ্রেফতারকৃত ‘পাপিয়া’র সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কাল্পনিক তালিকা প্রকাশের অভিযোগে একটি দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রুজুকৃত মামলার বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এবিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে কিছু কাল্পনিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ‘আমি মনে করি, সত্যতা যাচাই না করে এধরণের কাল্পনিক তালিকা প্রকাশ কোনভাবেই সমীচীন নয়। যদি কেউ করে থাকে, সেটি পত্রিকা হোক, অনলাইন হোক বা অন্যভাবে হোক সেটার দায় তারা এড়াতে পারেন না।’
একজন সংসদ সদস্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ সংক্ষুব্ধ হলে দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতেই পারেন। সেটি তার সাংবিধানিক অধিকার। যাচাই বাছাই না করে দায়িত্বশীল পত্রিকা কিম্বা কোন দায়িত্বশীল অনলাইন, কিম্বা দায়িত্বশীল কোন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার এই ধরনের নাম প্রকাশ করা কোনভাবেই দায়িত্বশীলতার মধ্যে পড়ে না। সুতরাং এই দায়িত্বহীন আচরণ যদি কেউ করে থাকেন, দায়িত্বহীনতার দায় তাকেই নিতে হবে।’
ড. হাছান বলেন, দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে আমাদের মধ্যে কিছু সুযোগ সন্ধানীর অনুপ্রবেশ ঘটেছে। দলের পোড় খাওয়া নেতারাই নেতৃত্বে থাকবেন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিগত সম্মেলনের আগে দল থেকে সুযোগ সন্ধানীদের বের করে দেয়ার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ চলছে। আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল, অনেকে দল করে কিন্তু নেতৃত্বে আসতে পারে না। আওয়ামী লীগ ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনার প্রতি অবিচল আস্থাশীল ব্যক্তিরাই নেতৃত্বে আসবেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি অকৃত্তিম ভালোবাসার কারণে আওয়ামী লীগ পর পর তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায়। প্রধানমন্ত্রী তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অনেক প্রতিকুলতার মধ্যদিয়ে মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন বলেই এটি সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বার বার হত্যার চক্রান্ত করা হয়েছে। তার পরেও তিনি দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন সরকার গঠিত হয়। ২০০৮ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুনরায় আমরা সরকার গঠন করি। এর পরে দেশে রাজনীতির নামে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত মানুষকে জিম্মি করে রেখেছিল। তারা রাজনীতির নামে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ট্রাক ও বাস চালকদের হত্যা করেছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আরও বলেন, রাজনীতির নামে এমন সহিংসতা সমসাময়িক সময়ে পৃথিবীর কোথাও হয়নি। ২০১৩-১৪ ও ১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত এটি করেছে। বিএনপি নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ইঙ্গিত করে তাকে দৃশৃপট থেকে সরিয়ে দেয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু সমস্ত ষড়যন্ত্র ও প্রতিকূলতার মধ্যেও অবিচল থেকে প্রধানমন্ত্রী সঠিক সময়ে সঠিক ও সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের কারণে আওয়ামী লীগ পর পর তিনবার মোট চারবার রাষ্ট্রক্ষমতায়।
তিনি বলেন, দলের অধীনে সরকার, সরকারের অধীনে দল নয়। সেকারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংগঠনিক কর্মকান্ডের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। প্রধানমন্ত্রী একদিকে সরকার পরিচালনা করছেন, অন্যদিয়ে দলের খোঁজ-খবর রাখছেন। শেখ হাসিনাই আমাদের দলের অফুরন্ত প্রেরণার উৎস।
মার্চ ও এপ্রিল মাসে ব্যাপক জনসমাগোম করে সম্মেলন করা হবে না। তবে, সাংগঠনিক কর্মকান্ড চলবে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কোন সর্মসূচি বাতিল করা হয়নি, পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ নাটোর জেলা, থানা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাসস/বিএন/কেসি/১৯১২/আরজি