করোনা আতঙ্ক নিয়ে কাল ওয়ানডে সিরিজ শুরু করছে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা

218

ধর্মশালা, ১১ মার্চ ২০২০ (বাসস) : করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেই আগামীকাল থেকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু করছে স্বাগতিক ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা। পুরো বিশ্বই করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে কাঁপছে। এ অবস্থায় মাঠের লড়াইয়ে নামছে দু’দল। দক্ষিণ আফ্রিকান খেলোয়াড়রা সিরিজে করমর্দন এড়িয়ে চলবে বলে ইতোমধ্যেই ঘোষনা দিয়েছে দেশটির বোর্ড। ভাইরাসের কারন সর্তক দু’দলই। তবে ম্যাচ নিয়েও বেশ সিরিয়াস তারা। ধর্র্মশালায় আগামীকাল বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় শুরু হবে ওয়ানডেটি।
বিশ্বে শতাধিক দেশ করোনাভাইরাসের সংক্রমনে আক্রান্ত। বাদ পড়েনি ভারতও। ইতোমধ্যে সেখানে ৪৩জন আক্রান্ত হয়েছে। এতে ভারত সফর নিয়ে সংশয়ে ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। সফর শুরুর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ড থেকে জানানো হয়, পরিস্থিতি ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করেই ভারত সফরে দল পাঠানো হবে।
তবে সব শঙ্কাকে পেছনে ফেলে সিরিজ খেলতে এখন ভারতে অবস্থান করছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতে পৌঁছেই সর্তকবানী দিয়ে রেখেছে প্রোটিয়ারা। কোচ মার্ক বাউচার বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়ার আগে দলের প্রত্যেকের সাথে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছে। ভারতের দর্শকদের সাথে ছবি বা সেলফি ও তাদের সাথে মেলামেশা করা যাবে না। এই কড়া নির্দেশিকা মানতে হবে সকলকে। ’
সর্তকতার মাঝেও ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে চিন্তা ঠিকই আছে দক্ষিণ আফ্রিকার। বাউচার বলেন, ‘ভারতে খেলাটা সবসময়ই চ্যালেঞ্জের। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে ভালো দিক যে, আমরা সদ্যই অস্ট্রেলিয়াকে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছি। সেই পারফরমেন্স এখানেও অব্যাহত রাখতে চাই। সিরিজ জয়ের জন্যই এখানে এসেছি আমরা।’
আগের সিরিজে দলে ছিলেন না সাবেক অধিনায়ক ফাফ ডু-প্লেসিস। অবশ্য তাকে কোন সিরিজে খেলানো হচ্ছে, আবার কোন সিরিজে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। তবে ভারতের মাটিতে ডু-প্লেসিসের অভিজ্ঞতার কারনে তাকে দলে রাখা বলে জানান বাউচার, ‘ভারতে খেলতে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের মিশেল দরকার হয়। ভারতের পরিবেশ সর্ম্পকে ভালো জানে সে। তার অভিজ্ঞতা এই সিরিজে কাজে লাগবে।’
ভাইরাস আতঙ্ক রয়েছে ভারত শিবিরেও। বিমানে উঠার পর মুখাবরণ পড়া অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিও পোস্ট করেছেন ভারতের স্পিনার যুজবেন্দ্রা চাহাল। এই ছবিটিই পরিস্কারভাবে ইঙ্গিত দেয়, করোনার বিপক্ষে সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত দলও।
ভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে হোলি আনন্দে মেতেছে পুরো ভারত। ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি বলেন, ‘সবাইকে হোলির শুভেচ্ছা। কিন্তু নিরাপপ ও সতর্কতার সঙ্গে হোলি উদযাপন করেন সবাই। যাতে ভাইরাস থেকে আক্রান্ত না হতে হয়।’
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে নিয়ে কোহলি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড সফরের শেষটা আমাদের ভালো হয়নি। তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে আমরা হোয়াইটওয়াশ হয়েছি। তবে এই সিরিজ দিয়ে আবারো ঘুড়ে দাঁড়াতে চাই আমরা। এই তিনটি ওয়ানডেই আমাদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সিরিজ জয় করতে হলে দলের সবাইকে পারফরমেন্স করতে হবে। নিউজিল্যান্ডের স্মৃতি ভুলে যেতে হবে। কিভাবে ভালো খেলতে হবে সেদিকে মনোযোগি হতে হবে সকলকে।’
দলের সেরা চার খেলোয়াড়কে ছাড়া নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডে ও টেস্ট খেলতে হয়েছে ভারতকে। ইনজুরির কারনে রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, হার্ডিক পান্ডিয়া ও ভুবেনশ্বর কুমার খেলতে পারেননি। রোহিত বাদে অন্য তিনজন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের জন্য দলে ফিরেছেন। তাদের ফেরাতে উচ্ছসিত ভারত অধিনায়ক কোহলি, ‘ধাওয়ান, পান্ডিয়া ও ভুবেনশ্বর ফিরেছেন। তাদের জন্য শুভ কামনা রইল। আশা করছি, তারা আবারো ব্যাট-বল হাতে জ্বলে উঠবেন।’
ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের পর টানা তিনটি ওয়ানডে সিরিজেই জয় পেয়েছে ভারত। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দু’বার ও অস্ট্রেলিয়াকে হারায় তারা। নিউজিল্যান্ডে গিয়ে ভারতের সিরিজ জয়ের রথ থামে। অপরদিকে, চলতি মাসের শুরুতে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাই এক বছর পর তিন ফরম্যাট মিলিয়ে কোন সিরিজ জয়ের স্বাদ নেয় প্রোটিয়ারা। তাই নিউজিল্যান্ডের কাছে ভারতের হার ও অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ নিয়ে সিরিজ খেলতে নামছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
২০১৫ সালে ভারতের মাটিতে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে জয় পেয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতেছিলো তারা। এখন পর্যন্ত ৮৪ মোকাবেলায় দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৬টিতে ও ভারত ৩৫টিতে জয় পায়। দু’দলের সর্বশেষ দেখা হয়েছিলো ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে। ঐ লড়াইয়ে ৬ উইকেটে জিতেছিলো ভারত। ১২২ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেছিলেন ওপেনার রোহিত শর্মা।