দুর্বল টটেনহ্যামকে উড়িয়ে দিয়ে প্রথমবারের মত কোয়ার্টার ফাইনালে লিপজিগ

165

লিপজিগ, ১১ মার্চ ২০২০ (বাসস) : ঘরের মাঠ রেড বুল এরিনাতে শেষ ১৬’র দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে গতবারের রানার্স-আপ টটেনহ্যাম হটস্পারকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আট নিশ্চিত করেছে আরবি লিপজিগ। এই প্রথমবারের মত ইউরোপের সর্বোচ্চ আসরে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো জার্মান এই দলটি।
ম্যাচ শেষে টটেনহ্যামের তারকা মিডফিল্ডার ডেলে আলি তার দলের খেলোয়াড়দের মানসিক শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আলি বলেন, ‘বেশ কয়েকবারই আমরা বলের পিছনে ছিলাম। আমাদের এই গোল হজমের পিছনে আমি খেলোয়াড়দের মানসিক দূর্বলতাকেই দায়ী করবো। আমাদের আরো বেশী পরিনত খেলা উপহার দেয়া উচিত ছিল। আমরা সেটা করতে পারিনি, যার শাস্তি পেয়েছি।’
প্রথমার্ধের ২১ মিনিটের মধ্যেই লিপজিগ অধিনায়ক মার্সেল সাবিজার দুই গোল করে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন। ম্যাচ শেষের তিন মিনিট আগে বদলী খেলোয়াড় এমিল ফোরসবার্গ দলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন।
ইউরোপ জুড়ে চলমান করোনাভাইরাস হুমকিতে চলতি সপ্তাহে বেশ কয়েকটি ম্যাচ দর্শকশুন্য স্টেডিয়ামে আয়োজনের সিদ্ধান্ত হলেও গতকালকের ম্যাচটিতে লিপজিগের মাঠে তেমন কোন বিধিনিষেধ ছিল না। যে কারনে লিপজিগ সমর্থকরা দারুন একটি রাত উপভোগ করেছেন। যদিও ইনজুরি আক্রান্ত হ্যারি কেন, সন হেয়াং-মিন ও স্টিভেন বারগুইনের অনুপস্থিতিতে স্পার্সরা অনেকটাই দূর্বল দলে পরিনত হয়েছিল। যে কারনে মনে হয়েছে পরাজয়টা হয়তবা কাঙ্খিতই ছিল।
তার উপর ২১ মিনিটের মধ্যেই গোলরক্ষক হুগো লোরিসের বড় দুটি ভুলে লিপজিগের এগিয়ে যাওয়া সেই সম্ভাবনাকে আরো গাঢ় করে তুলে। ১০ মিনিটে সাবিজারের শট রুখতে পারেননি লোরিস। যে কারনে স্পার্সদের পিছিয়ে পড়তে হয়। এরপর খুব কাছে থেকে লিপজিগের জার্মান এ্যাটাকার টিমো ওয়ার্নার দলের ব্যবধান দ্বিগুন করলেও অফ-সাইডের কারনে তা বাতিল হয়ে যায়। তখন থেকেই কার্যত টটেনহ্যামের রক্ষনভাগের দূর্বলতা চোখে পড়ে। কিন্তু তারপরেও সফরকারীদের শিক্ষা হয়নি। ২১ মিনিটে এ্যাঞ্জেলিনোর ক্রস থেকে সাবিজার শক্তিশালী হেডে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। এই গোলেও লোরিসের আরো একটু সচেষ্ট হওয়া উচিত ছিল। বদলী হিসেবে নামার মাত্র ৩২ সেকেন্ডের মধ্যে ফোর্সবার্গ লিপজিগের হয়ে ৮৭ মিনিটে তৃতীয় গোলটি করেন।
এই নিয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতাটা গত ছয়টি ম্যাচের একটিতেও জিততে পারলো না টটেনহ্যাম। হোসে মরিনহোর কোচিং ক্যারিয়ারে এটাই সবচেয়ে দীর্ঘ সময় জয়বিহীন থাকার রেকর্ড। ইনজুরির কারনে তারকাদের অনুপস্থিতিতে মৌসা সিসোকো, ডেভিনসন সানচেজ ও বেন ডেভিসদের দলে না রাখাটা আবারো মরিনহোকে সমালোচানার মুখে ফেলেছে।
গত মৌসুমে সেমিফাইনালে আয়াক্সের বিপক্ষে প্রথম লেগে ৩-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত দুর্দান্তভাবে ফিরে এসে ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মত ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল। লুকাস মৌরার হ্যাটট্রিকে সেবার স্পার্সদের জয় নিশ্চিত হয়।
লিপজিগের ৩২ বছর বয়সী কোচ জুলিয়ান নাগেলসমান বলেছেন, ‘ক্লাবের ইতিহাসে ম্যানেজার হিসেবে আমার ও একইসাথে আমার তরুন দলটির জন্য এটি একটি দুর্দান্ত মুহূর্ত। পরের রাউন্ডে যাওয়াটা সবদিক থেকেই আমাদের প্রাপ্য ছিল। তাদের থেকে ভাল দল হিসেবেই আমরা চার গোল করেছি কিন্তু একটি গোলও হজম করিনি।’
গত পাঁচ বছরে এই প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে না পারার শঙ্কায় রয়েছে টটেনহ্যাম। ৪১ পয়েন্ট নিয়ে তারা বর্তমানে প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের অষ্টম স্থানে রয়েছে। শীর্ষ চারের থেকে তারা ৭ পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে। আর এই লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে আগামী রোববার পঞ্চম স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে জয়ের বিকল্প নেই স্পার্সদের সামনে।