বাসস দেশ-১৯ : বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আজও প্রেরণার উৎস

138

বাসস দেশ-১৯
৭ মার্চ-আওয়ামী লীগ-সভা
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আজও প্রেরণার উৎস
ঢাকা, ৭ মার্চ, ২০২০ (বাসস) : ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তরা বলেছেন, আমাদের সংকট সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আজও প্রেরণার উৎস। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের মনের কথাই বলেছিলেন।
আজ শনিবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তরা এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি শিমুল মোস্তফা।
১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দি উদ্যান) তার বজ্র নিনাদ কন্ঠে এক কালোত্তীর্ণ ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেন। এই ভাষণের মধ্য দিয়ে তৎকালীন সাড়ে ৭ কোটি মুক্তিকামী বাঙালির আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটে।
আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম ও লে. কর্ণেল (অব.) ফারুক খান এমপি, বিশ্ববিদ্যায় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়াম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ মান্নান কচি বক্তব্য রাখেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত নির্দেশনা ছিলো ৭ মার্চের ভাষণে। সকল রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন। তাঁর এই ভাষণ আজও প্রেরণার উৎস। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ মহাকাব্য আমাদের জন্য চেতনার অগ্নি মশাল হয়ে কাজ করবে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ সমগ্র বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। ওইদিনের ভাষণ নতুন প্রজন্মের প্রেরণার উৎস। এই ভাষণ মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তি ও সাহস যুগিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে ৩০ লাখ লোক প্রাণ উৎসর্গ করেন এবং ২ লাখ মা-বোন তাদের সম্ভ্রম হারান, যার দৃষ্টান্ত বিশ্ব ইতিহাসে বিরল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল এই ভাষণে তিনি একদিকে বাঙালির মুক্তির কথা বলেছেন, অন্যদিকে স্বাধীনতা অর্জনের দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ এই জন্য বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। পৃথিবীর অন্য কোনো নেতার ভাষণ এইভাবে মুক্তি ও স্বাধীনতার কথা ছিল না। এজন্য বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ চিরদিন অধিকারহারা, শোষিত-বঞ্চিত ও নিষ্পেষিত, স্বাধীনতাপ্রেমীদের যুগ যুগ ধরে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, জাতির পিতা যে বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নেতৃত্বে দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তি শালী করতে হবে।
আমাদের সংকট সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আজও প্রেরণার উৎস উল্লেখ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে কোন বাধা মোকাবেলা করে আমরা জাতির পিতার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে স্বক্ষম হবো।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুবিজুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষনই ছিল স্বাধীনতার ঘোষনা। তিনি সেদিন জনগের মনে ভাষা বুঝেই স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি। তাই আসুন সবাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করি।
হাছান মাহমুদ বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের এই ভাষন নিরস্ত্র বাঙালি জাতি সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হয়েছিল। আজ সেই ৭ই মার্চ, যেদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, তার ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালির রক্তে আগুন ধরিয়েছিল। জাতিসংঘের ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণকে পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম প্রমাণ্য দলিল হিসেবে গ্রহণ করেছে, স্বীকৃতি দিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাঁর লক্ষ্য শুধু বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত রাষ্ট্র গঠন নয়। শেখ হাসিনার লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্র, মেধা ও মনন দিয়ে উন্নত জাতি গঠন করা। যাতে ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্ব বাংলাদেশকে দেখে অনুকরণ করবে। তিনি শুধু স্বপ্ন দেখান না, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আরও সময় পান তাহলে মালেশিয়া, সিঙ্গাপুরের গল্প মানুষ শুনবে না, তখন বিশ্ববাসী বাংলাদেশের গল্প শুনবে।
বাসস/বিকেডি/১৮৪০/কেকে