বাসস ক্রীড়া-১১ : অধিনায়ক হিসেবে বিদায়ী ম্যাচে মাঠে নামছেন মাশরাফি

144

বাসস ক্রীড়া-১১
ক্রিকেট-মাশরাফি-অধিনায়ক-বিদায়
অধিনায়ক হিসেবে বিদায়ী ম্যাচে মাঠে নামছেন মাশরাফি
সিলেট, ৫ মার্চ ২০২০ (বাসস): শেষ পর্যন্ত সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন মাশরাফি বিন মোর্তাজা। আগামীকাল শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি হবে অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির শেষ ওয়ানডে ম্যাচ।
এ ম্যাচে জয়লাভ করতে পারলে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইট ওয়াশ করার পাশাপাশি অধিনায়ক হিসেবে ৫০ ম্যাচে জয়ের রেকর্ড গড়বেন তিনি। যেটি দেশের কোন অধিনায়কের পক্ষেই এখনো সম্ভব হয়নি। এই তালিকায় তার পরের অবস্থানে আছেন হাবিবুল বাশার। বাংলাদেশ দলের হয়ে ৬৮ ম্যাচে নেতৃত্বে দিয়ে তিনি জয় পেয়েছেন ২৯টি ম্যাচে।
মাশরাফির অধীনে আগামীকাল ৮৭ তম ম্যাচে অংশ নিবে বাংলাদেশ। যেটি টাইগার দলপতি হিসেবেও তার সর্বাধিক ম্যাচ। অবশ্য বিশ্ব ক্রিকেটে ৫০ ম্যাচে জয়লাভ করা নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে রিকি পন্টিং ১৬৫, মহন্দ্রে সিং ধোনি ১১০ ও এ্যালান বোর্ডার ১০৭ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে নিজ নিজ দলকে শতাধিক জয় এনে দিয়েছেন। তবে বাংলাদেশী অধিনায়ক হিসেবে এটি অবশ্যই বিশেষ কিছু।
এই মাইল ফলকে স্পর্শের জন্য আগামীকাল অবশ্যই দলকে জয় এনে দিতে হবে মাশরাফিকে। কেননা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নতুন অধিনায়ক নির্বাচন না করা পর্যন্ত তাকে অন্তবর্তীকালীন অধিনায়ক রাখলেও অন্তত বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ আর পাবেন না মাশরাফি।
বিশেষ করে সাকিব আল হাসান নিষেধাজ্ঞায় থাকায় এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য বাংলাদেশ দলের নেতৃত্বে আনার মত উপযুক্ত খেলোয়াড় খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত দলের অন্ত:বর্তীকালীন নেতৃত্ব চালিয়ে যেতে পারেন মাশরাফি।
তবে ওই মাইলফলকের কথা না ভেবে দলকে জয় পাইয়ে দেয়ার কথাই বেশী ভাবছেন মাশরাফি। অধিনায়ক হিসেবে ৫০ ম্যাচে জয় প্রাপ্তির কথা যখন স্মরণ করে দেয়া হয়, তখন এর জবাবে মাশরাফি সাংবাদিকদের বলেন,‘ আমরা খেলোয়াড়রা মাইলফলকের কথা ভেবে খেলিনা। আগামী কালের ম্যাচেও আমাদের লক্ষ্য থাকবে আরেকটি জয়লাভ করার। এটিই হবে আমাদের আসল লক্ষ্য।’
মাশরাফি প্রথমবারের মত বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেন ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। তবে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনেই হাঁটুর ইনজুরিতে পড়েন তিনি। যে কারণে ছিটকে যান পুরো সিরিজ থেকে। ওই ম্যাচের পর মাশরাফি কখনো টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারেনি।
২০১০ সালে প্রথমবারের মত বাংলাদেশ ওয়ানেড দলের নেতৃত্ব দেন মাশরাফি। তবে ইনজুরির কারণে স্বল্প সময়ের মধ্যেই নেতৃত্ব থেকে সড়ে দাঁড়াতে হয় তাকে। ২০১৪ সালে তাকে ফের টাইগার দলের নেতৃত্বে ফিরিয়ে আনা হয়। এই সময় খুব খারাপ সময় পার করছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট।
তবে দ্বিতীয় ধাপে নেতৃত্বে এসে বাংলাদেশের ক্রিকেটে বিপ্লব ঘটান মাশরাফি। এ সময় দেশকে স্মরণীয় কিছু জয় উপহার দেন তিনি। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে প্রথম বাংলাদেশ দলকে জয় পাইয়ে দেন পাকিস্তান, দক্ষিন আফ্রিকা ও ভারতের বিপক্ষে। মাশরাফির নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে এবং ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমি-ফাইনালে খেলার সুযোগ লাভ করে। এছাড়া বাংলাদেশ পুরুষ দল প্রথম কোন ট্রফি জয় করেছে মাশরাফির নেতৃত্বে। আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন ট্রফিই দলটির সেরা অর্জন।
তবে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ আসরটি ছিল মাশরাফির নেতৃত্বে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে খারাপ টুর্নামেন্ট। অস্টম স্থানে তেকে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হয়েছে টাইগারদের। ব্যক্তিগত নৈপুন্যেও এ সময় চরম ব্যর্থ ছিলেন মাশরাফি। আট ম্যাচে অংশ নিয়ে সংগ্রহ করেছিলেন একটি মাত্র উইকেট। মুলত: এর পরেই মাশরাফির অবসরের বিষয়টি সামনে চলে আসে।
বাসস/এসএমপি/অনু/এমএইচসি/১৮০৫/স্বব