বাসস দেশ-১৪ : ঢাকা আশা করে ভারতের কোনও পরিস্থিতি বাংলাদেশের সম্প্রীতিতে প্রভাব ফেলবে না : রিজভী

245

বাসস দেশ-১৪
বাংলাদেশ-ভারত-ধর্মনিরপেক্ষতা-রিজভী
ঢাকা আশা করে ভারতের কোনও পরিস্থিতি বাংলাদেশের সম্প্রীতিতে প্রভাব ফেলবে না : রিজভী
ঢাকা, ২ মার্চ, ২০২০ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী আজ বলেছেন, ঢাকা এমন কোনও পরিস্থিতি ভারতে দেখতে চায় না যা বাংলাদেশের সম্প্রীতিতে প্রভাব ফেলবে। তিনি এখানে এক সেমিনারে বক্তৃতাকালে এ অভিমত ব্যক্ত করেন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। রাজধানীর এক হোটেলে ‘বাংলাদেশ ও ভারত : একটি আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যত’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি একেবারে শিকড়ে এবং আমরা এমন কোনো পরিস্থিতি দেখতে চাই না যাতে আমাদের ধর্মনিরপেক্ষতা হুমকির সম্মুখীন হয়।’
ভারতের সঙ্গে ঢাকার ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ইচ্ছা ব্যক্ত করে হাভার্ড ও অক্সফোর্ডের সাবেক অধ্যাপক গওহর রিজভী বলেন, আমাদের সমাজে ধর্মনিরপেক্ষতা দিন-দিন জোরদার হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা ‘একেবারে সমান নাগরিক’। তাদের সুরক্ষার প্রশ্নে কোনও পরিস্থিতিই উপেক্ষা করার উপায় নেই। তাই, সংখ্যালঘুরা যেনো কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য তাদের অধিকার ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এবং ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশন যৌথভাবে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এ সেমিনারের আয়োজন করে। ভারতের হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস ও বিআইআইএসএস চেয়ারম্যান ফজলুল করিম প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
ভারতের এনআরসি বিষয়টিকে একটি বার্নিং ইস্যু হিসেবে বর্ণনা করে গওহর রিজভী বলেন, তবে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বা ঘরোয়া বিষয় হিসেবে থাকবে এমনটাই আশা করছি আমরা। যেমনটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বারবার বলেছেন, এতে বাংলাদেশে কোনও প্রভাব পড়বে না। তিনি বলেন, আমরা তা (বারবার আশ্বাস) মেনে নিয়েছি। আমাদের বিশ্বাস রাখার যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে যে, আমাদের দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে ‘স্বর্গীয়’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এখনই দুই প্রতিবেশী সাত দশকের পুরানো ভূমি সীমানা বিরোধগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করেছে, যা বিশ্বের অন্যান্য অংশের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। যদিও কিছু সমস্যা রয়েছে ‘যা সব প্রতিবেশীর মধ্যেই থাকে’। কিছু কিছু বিষয়ে অগ্রগতির বর্তমান ধারায় তার অসন্তুষ্টির কথা জানিয়ে গওহর রিজভী বলেন, ‘আমরা আগেই সম্মতি দিয়েছি’, স্থবির হয়ে থাকা এমন বিষয়গুলোর সমাধান করা এখন জরুরি, কারণ বিলম্বের জন্য সুযোগগুলো হাতছাড়া হয়ে গেলে মহাক্ষতি হয়ে যেতে পারে।’
‘এটি আমাদের স্বার্থে, আমাদের সুবিধার জন্য যেমন, ভারতের জন্যেও তেমন’। তিনি বলেন, এমন কোনও সমস্যা নেই, যা সমাধান করা যায় না। তবে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, পানির ন্যায্য হিস্যার প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করার জন্য অভিন্ন নদীগুলোর কাজ আবার শুরু করা হয়েছে এবং গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। একই সাথে বাংলাদেশকে ভারতের প্রতিশ্রুত এলসি দ্রুত ছাড় করানো হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারত কতদূর যেতে পারে সেদিকে আমাদের নতুন করে দৃষ্টি দিতে ও স্বপ্ন দেখতে হবে।
শ্রিংলা সকালে দুই দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
বাসস/এএসজি/টিএ/অনুবাদ-কেজিএ/১৯৫৬/-কেএমকে