যক্ষ্মা শনাক্তকরণে ভ্রাম্যমাণ গাড়ির মাধ্যমে বিনামূল্যে সেবা পাবেন রোগীরা

236

ঢাকা, ১ মার্চ, ২০২০ (বাসস) : যক্ষ্মারোগ শনাক্তকরণে উন্নত প্রযুক্তির সংযোজিত ভ্রাম্যমাণ এক্স-রে গাড়ি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিপি) ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিকে আরও বেগবান করতে এনটিপির আওতায় ব্র্যাক এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।
চলতি মার্চ মাস থেকে আপাতত এই দুটি ভ্রাম্যমান গাড়ির কার্যক্রম শুরু হবে। একটি ভ্রাম্যমান গাড়ির মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে নগরীর বিভিন্ন বস্তি, পোশাক কারখানা এবং ৩টি কারাগারে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। কারাগারগুলো , কাশিমপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেট। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকেও এই সেবা দেওয়া হবে।
আজ বিকালে রাজধানীর হাতিরঝিলের মুক্তমঞ্চে ভ্রাম্যমান এক্স-রে গাড়ির মাধ্যমে চিকিৎসা সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
এক্সরে ও অত্যাধুনিক জিন এক্সপাট সংযুক্ত বিশেষ ধরণের এই ভ্রাম্যমান গাড়ির মাধ্যমে প্রতিদিন ৫০-৮০ জন রোগী এক্সরে করার সুযোগ পাবেন। একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান ও রেডিওগ্রাফার এর মাধ্যমে সম্ভাব্য রোগীকে তাৎক্ষণিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অনলাইন পদ্ধতিতে দ্রুত ফলাফল জানিয়ে দেওয়া হবে। বিপুল সংখ্যক মানুষের চাহিদার নিরিখে এই বছরের জুলাই-আগস্টের মধ্যে এরকম আরও দুটি গাড়ি চালু হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম, ব্র্যাকের কমিউনিকেবল ডিজিজেস ও ওয়াশ কর্মসূচির পরিচালক ড. মো. আকরামুল ইসলাম, একই সংস্থার কমিউনিকেবল ডিজিজেস (টিবি কন্ট্রোল) কর্মসূচির সহযোগী পরিচালক ডা. মাহফুজা রিফাত এবং বিভিন্ন দাতা ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।
ভ্রাম্যমান গাড়ি কার্যক্রমের পাশাপাশি আগামী ২৪ মার্চ বিশ^ যক্ষ্মা দিবস উপলক্ষে সচেতনতা আনয়ন ও মুজিব বর্ষকে ঘিরে যক্ষ্মা প্রতিরোধে গুরুত্ব দিয়ে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ড্রামা শো ও জলের গানের পরিবেশনায় কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত: জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির (এনটিপি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ২ লাখ ৯২ হাজার ৯৪২ জন যক্ষ্মারোগী শনাক্ত হয়েছে। এনটিপি সূত্র অনুযায়ী, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সবধরণের (কফে জীবানুযুক্ত ও কফে জীবাণুবহির্ভূত) যক্ষ্মারোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসার সাফল্যের হার ৯৪.৪ শতাংশ। এক্ষেত্রে সরকারের আশাব্যঞ্জক সাফল্য সত্ত্বেও যক্ষ্মার ঝুঁকির বিবেচনায় বাংলাদেশে এটি এখনও মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিবেচিত।