মোমিনুল-শান্তর জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ

550

ঢাকা, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ (বাসস) : অধিনায়ক মোমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্তর জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে শক্ত অবস্থানে রয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ৩ উইকেটে ২৪০ রান করেছে টাইগাররা। ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ২৫ রানে পিছিয়ে তারা। এর আগে আজ সকালে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৬৫ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের প্রথম দিন ৬ উইকেটে ২২৮ রান করেছিলো জিম্বাবুয়ে। ১০৭ রান করেছিলেন অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। দিন শেষে উইকেটরক্ষক রেগিস চাকাবা ৯ ও ডোনাল্ড তিরিপানো শুন্য রানে অপরাজিত ছিলেন।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই বাংলাদেশের দুই বোলার আবু জায়েদ ও তাইজুল ইসলামের তোপে পড়ে ২৪৫ রানেই নবম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ৮ রান করা তিরিপানো ও আইনসলে এনডলোভুকে শুন্য রানে বিদায় দেন আবু জায়েদ। চার্লটন টিসুমাকে শুন্য রানে থামান তাইজুল। এ ম্যাচে এটিই তার প্রথম উইকেট ছিলো।
শেষ উইকেটে ভিক্টর নায়ুচিকে নিয়ে ২০ রানের জুটি গড়েন চাকাবা। এক প্রান্ত আগলে রাখা চাকাবাকে শিকার করে জিম্বাবুয়ের ইনিংসের ইতি টানেন তাইজুল। ৩টি চারে ৭৪ বলে ৩০ রান করেন চাকাবা। আজ, দ্বিতীয় দিন বাকী ৪ উইকেটে আরও ৩৭ রান যোগ করতে পারে জিম্বাবুয়ে। এরমধ্যে ২১ রানই ছিলো চাকাবার। শেষ ব্যাটসম্যান নায়ুচি ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। বাংলাদেশের পেসার আবু জায়েদ ও স্পিনার নাইম হাসান ৪টি করে উইকেট নেন। প্রথম দিনই ৪ উইকেট নিয়েছিলেন নাইম। ২টি উইকেট শিকার করেন তাইজুল।
জিম্বাবুয়ের ইনিংস শেষে মধ্যাহ্ন-বিরতির আগে ব্যাট হাতে নামে বাংলাদেশ। প্রথম তিন ওভারে ২টি করে চার মারেন বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল ও সাইফ হাসান। তবে চতুর্থ ওভারের শেষ বলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান তারা। ১২ বলে ৮ রান করা সাইফকে বিদায় দেন জিম্বাবুয়ের পেসার ভিক্টর নায়ুচি।
এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে ইনিংস মেরামত করেন তামিম। দেখেশুনে খেলে দলের স্কোরকে বড় করেছেন তারা। দলের স্কোর শতরানের কাছাকাছি নিয়ে যান তারা। কিন্তু দুভার্গ্য তামিমের। দলকে শতরানের স্পর্শ দিতে পারেননি তিনি। তার আগেই প্যাভিলিয়নমুখী হন এই বাঁ-হাতি। ৭টি চারে ৪১ রান করে জিম্বাবুয়ের পেসার ডোনাল্ড ত্রিপানোর শিকার হন। তখন দলের স্কোর ৯৬ রান। শান্তর সাথে ৭৮ রানের জুটি গড়েন তামিম।
শান্ত ও অধিনায়ক মোমিনুল হকও তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে বড় রান এনে দেন। আর এই জুটিতেই টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি পেয়েছেন শান্ত। ১০৮ বলে হাফ-সেঞ্চুরিতে পৌঁছে নিজের ইনিংসটি বড় করেছেন শান্ত। তবে ৭১ রানে থামতে হয় তাকে। জিম্বাবুয়ের পেসার চার্লটন টিসুমার বাইরের বলে খোচা মারতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন শান্ত। ৭টি চারে ১৩৯ বলে ৭১ রান করেন তিনি। মোমিনুলের সাথে ৭৬ রান যোগ করেন শান্ত।
শান্তর বিদায়ে ক্রিজে মোমিনুলের সঙ্গী হন মুশফিকুর রহিম। এই জুটি অবিচ্ছিন্ন ৬৮ রান করে দিন শেষ করেন। ১৪তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৭৯ রানে অপরাজিত মোমিনুল। ১২০ বল খেলে ৯টি চার মারেন মোমিনুল। ৬৮ বলে ৬টি চারে ৩২ রানে অপরাজিত আছেন মুশফিক। জিম্বাবুয়ের ত্রিপানো-নায়ুচি-টিসুমা ১টি করে উইকেট নেন।
স্কোর কার্ড :
জিম্বাবুয়ে ইনিংস (আগের দিন ২২৮/৬, চাকাবা ৯*, ত্রিপানো ০*) :
প্রিন্স মাসভাউরি ক এন্ড ব নাইম হাসান ৬৪
কেভিন কাসুজা ক নাইম ব আবু জায়েদ ২
ক্রেইগ আরভিন বোল্ড ব নাইম ১০৭
ব্রেন্ডন টেলর বোল্ড ব নাইম ১০
সিকান্দার রাজা ক লিটন ব নাইম ১৮
তিমিসেন মারুমা এলবিডব্লু ব আবু জায়েদ ৭
রেগিস চাকাবা ক নাইম ব তাইজুল ৩০
ডোনাল্ড ত্রিপানো ক লিটন ব আবু জায়েদ ৮
আইনসলে এনডলোভু এলবিডব্লু ব আবু জায়েদ ০
চার্লটন টিসুমা এলবিডব্লু ব তাইজুল ০
ভিক্টর নায়ুচি অপরাজিত ৬
অতিরিক্ত (বা-৪, লে বা-৪, ও-৫) ১৩
মোট (অলআউট, ১০৬.৩ ওভার) ২৬৫
উইকেট পতন : ১/৭ (কাসুজা), ২/১১৮ (মাসভাউরি), ৩/১৩৪ (টেইলর), ৪/১৭৪ (রাজা), ৫/১৯৯ (মারুমা), ৬/২২৬ (আরভিন), ৭/২৪০ (ত্রিপানো), ৮/২৪৪ (এনডলোভু), ৯/২৪৫ (টিসুমা), ১০/২৬৫ (চাকাবা)।
বাংলাদেশ বোলিং :
এবাদত হোসেন : ১৭-৮-২৬-০ (ও-২),
আবু জায়েদ : ২৪-৬-৭১-৪ (ও-৩),
নাইম হাসান : ৩৮-৯-৭০-৪,
তাইজুল ইসলাম : ২৭.৩-১-৯০-২।
বাংলাদেশ ইনিংস :
তামিম ইকবাল ক চাকাবা ব ত্রিপানো ৪১
সাইফ হাসান ক চাকাবা ব নায়ুচি ৮
নাজমুল হোসেন শান্ত ক চাকাবা ব টিসুমা ৭১
মোমিনুল হক অপরাজিত ৭৯
মুশফিকুর রহিম অপরাজিত ৩২
অতিরিক্ত (বা-৪, লে বা-১, নো- ২, ও-২) ৯
মোট (৩ উইকেট, ৭১ ওভার) ২৪০
উইকেট পতন : ১/১৮ (সাইফ), ২/৯৬ (তামিম), ৩/১৭২ (শান্ত)।
জিম্বাবুয়ে বোলিং :
ত্রিপানো : ১৫-৩-৪০-১ (ও-১, নো-১),
নায়ুচি : ১৩-২-৪১-১ (ও-১),
রাজা : ২২-১-৭৫-০ (নো-১),
টিসুমা : ১২-০-৪৬-১,
এনডলোভ : ৯-১-৩৩-০।