স্যানেটারি ন্যাপকিন থেকে কর প্রত্যাহার করার আহ্বান

217

ঢাকা, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : নারীর সুস্বাস্থ্যের স্বার্থে স্যানেটারি ন্যাপকিনের উপর থেকে সকল ধরনের ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার করতে হবে।
রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) ও মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা (এমএইচএম) প্লাটফরম আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ কথা বলেন।
তারা বলেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য নারীদের কাছে স্যানিটারি ন্যাপকিন সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি। এক্ষেত্রে উচ্চ মূল্যই বড় বাধা। তাই স্যানেটারি প্যাডের উপর থেকে সকল ধরণের ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার করতে হবে। একই সঙ্গে উৎপাদনকারী কোম্পানীগুলোকে স্যানেটারি প্যাডকে অলাভজনক পণ্য হিসেবে তালিকাভূক্ত করতে হবে।
বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনায় অংশ নেন অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব শেখ মোমেনা মনি, বসুন্ধরা গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, এসিআই লিমিটেডের বাণিজ্যিক পরিচালক মো. কামরুল হাসান, স্কয়ার গ্রুপের সিনিয়র ব্রান্ড ম্যানেজার তাহসিনা খানম, আইসিসিডিডিআরবি’র জেন্ডার স্পেশালিস্ট ফারজানা করিম, কেয়ার বাংলাদেশের পরিচালক ড. ইখতিয়ার উদ্দিন খন্দকার, টিজার্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসনিয়া হক, সেফার ওয়াল্ড-এর কান্ট্রি প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজমুন নাহার, পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের ড. সমীর কুমার সাহা, ওয়াটার এইড’র ইখতিয়ার উদ্দিন ও রেড অরেঞ্জ-এর নকীব রাজীব আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন বিএনপিএস’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজনীন বেগম পাপ্পু।
বৈঠকে স্যানেটারি ন্যাপকিনের উপর কোন ধরণের ভ্যাট থাকা উচিৎ নয় উল্লেখ করে যুগ্ম সচিব শেখ মোমেনা মনি বলেন, স্যানেটারি ন্যাপকিনের উপর নতুন করে ভ্যাট আরোপের কথা এনবিআর চেয়ারম্যান অস্বীকার করেছেন। আগামী বাজেটে বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। প্রাক বাজেট আলোচনায় যে কোন পণ্যের উপর ভ্যাট-ট্যাক্স তুলে দেয়ার বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। আগামীতে সেটা করা গেলে সরকারের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।
তিনি স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারসহ মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সচেতনতার জন্য ঘরে বাইরে উচ্চ কণ্ঠ হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
বসুন্ধরা গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্যানেটারি পণ্যের উপর ভ্যাট-ট্যাক্স তুলে দেয়া হলে এর মূল্য ৫০শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব।
এসিআই কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে মূল্যের থেকে সচেতনতা বড় বিষয়। তাই মাসিকের সময় স্যানেটারি প্যাড ব্যবহারের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে সকলকে সচেতন করা জরুরি।
স্কয়ারের কর্মকর্তা তাহসিনা খানম বলেন, ‘মাসিক স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা’ যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিষয়টিকে শিক্ষার একটি অংশ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর বলেন, সামাজিক নিয়মবিধি, বিশ্বাস বা রীতিনীতি এবং প্রচলিত ধ্যানধারণা মাসিকের সময় নারী ও মেয়েদের সামাজিক, অর্থনৈতিক অংশগ্রহণকে সীমিত করে তোলাসহ নারীর সামগ্রিক ক্ষমতায়নকে বাধাগ্রস্ত করে তোলে।
তিনি বলেন, এ সম্পর্কিত সঠিক তথ্যের সহজলোভ্যতা নিশ্চিত ও মাসিকের সময়ে অনুকূল সেবা প্রদানমূলক পরিবেশ তৈরি করা ব্যতীত মাসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের অন্য কোনো বিকল্প নেই।