বাসস ইউনিসেফ ফিচার-১ : চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সূর্যমনির লড়াই

138

বাসস ইউনিসেফ ফিচার-১
চা শ্রমিক-অধিকার
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সূর্যমনির লড়াই
ঢাকা, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০(বাসস): মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখার উপজেলার চা বাগান এলাকার একেবারে নিম্ম আয়ের পরিবারের সন্তান সূর্যমনি রবিদাস। জীবনের সকল যুদ্ধে জয়ী হয়ে সম্প্রতি ¯œাতক শেষ করেছেন তিনি। পড়ালেখা শেষ করলেও তিনি ভুলে যাননি তার এলাকার মানুষদের। তাদের দু:খ-দূর্দশার কথা।
পড়া শেষ করে সূর্যমনি কাজ শুরু করেন তার এলাকার একেবারে হত দরিদ্র চা বাগান শ্রমিকদের নিয়ে। শ্রমিকদের তাদের নিজেদের অধিকার বিষয়ে সচেতন করে তোলার কাজ শুরু করেন।
মূলত চা বাগান শ্রমিকদের সব ধরনের দেখাশোনার দায়িত্ব বাগান মালিকদের। চা মালিকরাই শ্রমিকদের বাসস্থান, নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন সুবিধা, চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত এবং চা শ্রমিকদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ চা বাগান মালিকরা তা নিশ্চিত করেন না। আর এ কারনেই এসব চা শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে।
সূর্যমনি বলেন, বিশ্ব সাহায্য সংস্থা ইএনডিপি’র মানবাধিকার কর্মসূচী হতে প্রশিক্ষণ পেয়ে আমি এখন বড়লেখা উপজেলার সাতটি চা বাগানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছি। মূলত আমি তাদের (চা শ্রমিক) মৌলিক অধিকার যেটা দেশের সংবিধান তাদের দিয়েছে সেসব বিষয়ে সচেতনতা তৈরীতে কাজ করছি।
তিনি বলেন, এখানে কর্মরত হতদরিদ্র চা শ্রমিকদের অধিকাংশই তারা তাদের মৌলিক অধিকারগুলো সম্পর্কে জানে না। এ সম্পর্কে তাদের ধারনাও নেই। কারন তাদের মধ্যে শিক্ষার হার একেবারে নি¤œ। যার সুযোগ নিচ্ছে চা বাগানের মালিকেরা। এবং শ্রমিকদের বঞ্চিত করছে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে।
সূর্যমনি বলেন, ‘এখানে চা শ্রমিকদের সবচেয়ে বড় যে সমস্যা তা হলো নিরাপদ পানির অভাব এবং স্বাস্থ্যসেবা। অধিকাংশ শ্রমিকই তা পায় না। আমি গত নভেম্বর থেকে এখানে সচেতনতামূলক প্রচারনা চালাচ্ছি।’
রাখাইন সম্প্রদায়ের কিশোরী কৃষ্টি আং লিওয়েনাও একইভাবে তার এলাকায় পটুয়াখালিতে তার সম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরীতে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, আমি এখানে বিশটি গ্রামের লোকদের তাদের মৌলিক অধিকার বিষয়ে সচেতনতা তৈরীতে কাজ করছি।
সূর্যমনি এবং লিওয়েনার মত ২৬৮ জন যার মধ্যে ১১০ জন যুবতী নারী এসব দরিদ্র পরিবারের লোকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরীতে কাজ করছেন।
ইউনডিপি’র কমিউনিটি এবং মাইনরিটি বিশেষজ্ঞ শংকর পাল বলেন, এ ক্ষেত্রে তারা ২৬৮ জন যুবক-যুবতীকে প্রশিক্ষণ প্রদান দিয়েছেন, যার মধ্যে ১১০ জন নারী। এরা সবাই ১৫টি জেলার ক্ষুদ্র নৃ গোষ্টি এবং দরিদ্র পরিবারের। যাতে করে তারা এসব দরিদ্র জনগোষ্টির মধ্যে সচেতনতা তৈরী করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার এবং লিডারশীপ প্রশিক্ষণ শেষে এসব প্রশিক্ষনার্থীরা একেবারে রুট লেভেলে কমিউনিটি-বেইসড সচেতনতা তৈরীতে কাজ করছেন।’
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ৩৬ শতাংশ (৯৭ জন) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবক-যুবতী সক্রিয়ভাবে মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতা তৈরীতে তাদের নিজস্ব এলকায় কাজ করে চলেছেন।
বাসস ইউনিসেফ ফিচার/কেটিকে/আহো/১৩১৫/-স্বব