বাসস ক্রীড়া-৮ : ইংল্যান্ডের হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি দেখছেন হার্স্ট

167

বাসস ক্রীড়া-৮
ফুটবল-হার্স্ট
ইংল্যান্ডের হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি দেখছেন হার্স্ট
লন্ডন, ১০ জুলাই ২০১৮ (বাসস) : ৫২ বছর পর ইংল্যান্ডের হাতে আবারো বিশ্বকাপ ফুটবলের ট্রফি দেখতে পাচ্ছেন দেশটির সাবেক ও বিশ্বজয়ী খেলোয়াড় স্যার জিওফ হার্স্ট। ২১তম ফুটবল বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আগামীকাল মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়া। দ্বিতীয় সেমির আগে নিজ দলকে নিয়ে আশাবাদি বক্তব্য দিয়েছেন হার্স্ট। দলের পারফরমেন্সে মুগ্ধ হয়ে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি, ‘গ্রুপ পর্ব থেকেই অন্য এক ইংল্যান্ড দেখছি আমি। অতীতে প্রতিপক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করে কবে খেলেছে, আমার ঠিক মনে নেই। কিন্তু এবার যেভাবে দল খেলছে তাতে আবারো বিশ্বকাপ জয়ের দুর্দান্ত সুযোগ তৈরি হয়েছে আমাদের। আমার মনে হয়Ñ এবার বিশ্বকাপ আমরাই জিতবো।’
ইংল্যান্ড ফুটবলের কিংবদন্তি বলা হয় হার্স্টকে। কিন্তু দেশের জার্সি গায়ে খুব বেশি ম্যাচ খেলেননি তিনি। মাত্র ৪৯টি। গোল করেছেন ২৪টি। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন হার্স্ট। ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ড দলে প্রথমবারের মত সুযোগ পান হার্স্ট। দলে সুযোগ পেয়েই নিজের জাত চেনান তিনি। যার প্রেক্ষিতে ১৯৬৬ বিশ্বকাপে জাতীয় দলে সুযোগ পান হার্স্ট।
বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত খেলতে নেমেই ৪টি গোল করেন হার্স্ট। এরমধ্যে ৩টিই করেছেন ফাইনাল ম্যাচে। যেখানে মুখোমুখি হয়েছিলো ইংল্যান্ড ও পশ্চিম জার্মানি। ফাইনাল ম্যাচের ১২ মিনিটে লিড নেয় জার্মানি। ১৮ মিনিটে দলকে খেলায় ফেরান হার্স্ট। এরপর ৭৮ মিনিটে ইংল্যান্ড লিড নিলেও ৮৯ মিনিটে ম্যাচে সমতা এনে খেলার গতিপথ অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যায় জার্মানি।
সেখানেই বাজিমাত করেন হার্স্ট। ১০১ ও ১২০ আরও দু’টি গোল করে ফাইনাল ম্যাচে নিজের হ্যাট্টিক পূর্ণ করেন তিনি। সেই সাথে ৪-২ গোলে জার্মানিকে হারিয়ে প্রথমবারের মত ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপের স্বাদ দেন হার্স্ট। সেই হার্স্ট এবার বিশ্বকাপ ট্রফি ইংল্যান্ডের হাতেই দেখছেন, ‘এবারের দলটি অন্য বিশ্বকাপের চাইতে ভালো ফুটবল খেলছে। বিশেষভাবে তাদের পরিকল্পনায় নতুনত্ব দেখছি। তাই কোন ঝামেলা ছাড়াই সেমিফাইনালে পৌঁছেছে ইংল্যান্ড। তাদের হাতে শিরোপা দেখলে অবাক হবো না। আমি তেমনই দেখছি। এবারের বিশ্বকাপ জয়ের দাবী রাখে ইংলিশ দলটি।’
১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী ইংল্যান্ড দলের কোচ ছিলেন আলফ্রেড রামসে। তার সাথে ইংল্যান্ডের বর্তমান ম্যানেজার গ্যারেথ সাউথগেটের দারুণ মিল পাচ্ছেন হার্স্ট। রামসের পরিকল্পনা সাথে অনেক মিল সাউথগেটেরও। তিনি বলেন, ‘রামসে আমাদের খেলার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। আমাদের মধ্যে থেকে সেরাটা বের করে আনতে চেয়েছিলেন। আমরা তার পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলে তাকে সেরাটাই দিয়েছি। আমাদের দলের স্পিরিটও দারুণ ছিলো। এবারের দলটির মধ্যে তেমনটাই দেখছি। রামসের মত সাউথগেটও দলটাকে এক সুতোয় গাঁথতে পেরেছে। খেলোয়াড়দের মধ্যে থেকে সেরাটা বের করে আনতে সক্ষম হয়েছে। এ জন্য এত দূর আসতে পেরেছে দলটি। শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ জয়ের সাফল্যও পাবে ইংল্যান্ড।’
যুগ বদলে যাওয়ায় এবারের ইংল্যান্ড দলের উপর চাপ বেশি। যেমনটা ১৯৬৬ সালে ছিলো না বলে জানান হার্স্ট। তিনি বলেন, ‘ফুটবল নিয়ে আমাদের দেশে কি হতো, তখন আমরা বুঝতে পারিনি। এখন যেভাবে বুঝতে পারা যায়। প্রতি মুহূর্তে লড়াই। তাই আমাদের সময় চাপ কম ছিলো। তবে এই যুগে চাপ অনেক বেশি। এখনো পুরনো স্মৃতি মনে আছে, উরুগুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে গোল শুন্য ড্র করেছিলাম আমরা। ঐ ম্যাচের পর জেমস বন্ডের সিনেমা দেখেছি আমরা। কিন্তু এখন এক ম্যাচে খারাপ খেললেই চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়ে যায়।’
সেমিফাইনাল লাইন-আপে ইংল্যান্ডসহ আছে ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও ক্রোয়েশিয়া। এই চার দলের কেউই ইংলিশদের সামনে বাঁধা হতে পারবে না বলে মনে করেন হার্স্ট। তবে ব্রাজিল থাকলে ইংল্যান্ডের সাফল্য পাওয়া কঠিন হতো। তিনি বলেন, ‘এখন যারা আছে, তারা ইংল্যান্ডের সাথে লড়াইয়ে পেরে উঠতে পারবে না। আমরা তরুণ দল, আমাদের দলটি সত্যিই দুর্দান্ত। তবে ব্রাজিল থাকলে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতো।’
বাসস/এএমটি/১৭৪৫/মোজা/স্বব