রোহিঙ্গা শিশুদের ওপর সহিংসতার ভয়াবহ চিত্র বিশ্ববাসী আর দেখতে চায় না : মাসুদ বিন মোমেন

178

ঢাকা, ১০ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : রোহিঙ্গা শিশুদের ওপর সহিংসতার ভয়াবহ চিত্র যেন বিশ্ববাসীকে আর দেখতে না হয় মিয়ানমারের নেতৃত্বের কাছে এটাই প্রত্যাশা করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।
সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ‘শিশু ও সশস্ত্র সংঘাত : আজ শিশুদের সুরক্ষা দিন বন্ধ হবে আগামীদিনের সংঘাত’ বিষয়ক উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।
আজ মঙ্গলবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
নিরাপত্তা পরিষদের সম্প্রতি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফরের কথা উল্লেখ করে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘শিশুদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা যে কত তীব্র হতে পারে তা নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিগণ বাংলাদেশের কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাঁদের পরিদর্শনকালে দেখে এসেছেন’।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে যার প্রায় ৫৮ ভাগ শিশু। এ পর্যন্ত এতিম শিশু পাওয়া গেছে ৩৬ হাজার ৩৭৩ জন। মা-বাবা দুজনকেই হারিয়েছে এমন শিশু রয়েছে ৭ হাজার ৭৭১ জন। পিতা-মাতাহীন এসকল শিশুরা আজ মানবপাচার, যৌন নির্যাতন এবং বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের শিকার হওয়ার ক্ষেত্রে খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে।
তিনি জানান, প্রতিদিন ক্যাম্পসমূহে জন্ম নিচ্ছে ৬০ জন শিশু। এরমধ্যে কিছু জন্ম নিয়েছে যৌন সহিংসতার মতো পুরনো যুদ্ধাস্ত্রের শিকার হয়ে। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্টীকে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদার সাথে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের সাথে সম্পাদিত দ্বিপাক্ষিক সমঝোতায় এসকল শিশুদের কথা উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, মানবিক সাহায্য প্রদানকারী সংস্থাসমূহকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশ সরকার আশ্রিত রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য টিকা প্রদান, পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ, অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, মনো-সামাজিক সহযোগিতা ও বিনোদনের সুবিধাসহ ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এই শিশুদের নিজভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকারসহ সকল অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিতে অনুকুল, টেকসই ও বিশ্বাসযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টির ক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিষদ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে মিয়ানমারের কোনভাবেই দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও লিক্টেনস্টেইন সহ জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সদস্যরাষ্ট্র মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সংঘটিত সহিংসতা বিশেষ করে নারী ও শিশুদের হত্যা, ধর্ষণসহ যৌন সহিংসতার কথা তুলে ধরেন।