বাসস সংসদ-৬ : বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথেই বাংলাদেশ দারিদ্র মুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ দেশ হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

415

বাসস সংসদ-৬
রাষ্ট্রপতি-ভাষণ-আলোচনা
বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথেই বাংলাদেশ দারিদ্র মুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ দেশ হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সংসদ ভবন, ১১ ফেব্রুয়ারি,২০২০ (বাসস) : রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথেই তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতেৃত্বেই বাংলাদেশ দারিদ্র মুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ দেশ হবে।
গত ৯ জানুয়ারি চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করলে সরকারি দলের সদস্য আ স ম ফিরোজ তা সমর্থন করেন।
গত ৯ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের ষষ্ঠ ও বছরের প্রথম অধিবেশনের শুরুর দিন সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সংসদে ভাষণ দেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আজ আলোচনায় অংশ নেন পররাষ্ট মন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সি, সরকারি দলের শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মসলেম উদ্দিন আহমেদ, মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, নূর মোহাম্মদ, শাহে আলম, আহমেদ ফিরোজ আলম, অসিম কুমার উকিল, জুয়েল আরেং ও জয়া সেনগুপ্ত, ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এ খাতে বাংলাদেশ বিশ্বের ৪৫টি দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ বৃদ্ধির হার ১৮৮ ভাগ। শুধু তাই নয় এ সময় দরিদ্র হার শতকরা ২৪ ভাগ থেকে কমে ১০.৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ক্ষুধা- দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারের গতিশীল ও কার্যকর পদক্ষেপের ফলে দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ হয়েছে ৩.৯ বিলিয়ন ডলার। গত দু‘বছরে দেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৮১ শতাংশ, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ।
তিনি বলেন, দেশে গত অর্থ বছর রপ্তানি আয় বেড়ে দাড়িয়েছ্ ে৪৬.৮ বিলিয়ন। এছাড়া রেমিট্যান্স খাতে ২ শতাংশ নগদ প্রনোদানা প্রদান করায় এ খাতে আয় ১৫ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ১৮ বিলয়ন হয়েছে।
সরকারি দলের শেখ ফজলুল করিম সেলিম বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনের কথা উল্লেখ করে বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এ বাঙালির জীবন, কর্ম ও আদর্শ অনুসরেণের মাধ্যমেই তার স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হবে। বর্তমান প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে হবে। এ মহান নেতাকে নিয়ে আরো বেশী নাটক, চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে। কবিতা, গান, সাহিত্যে তাঁর কর্ম, জীবন ও আদর্শ তুলে ধরতে হবে।
তিনি স্বাধীনতার পর যুদ্ধ বিধ্বস্থ বাংলাদেশকে পুর্নগঠন করে ধাপে ধাপে উন্নত দেশের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর নেয়া পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন, জাতির পিতা বেঁচে থাকলে এতোদিনে বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিনত হতো।
শেখ সেলিম বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করার দাবি জানান। তিনি বলেন,এসব পলাতক খুনীরা দেশ ও জাতির জন্য অত্যন্ত বিপদজনক।
তিনি ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতার হত্যার সাথে পরোক্ষ-প্রত্যক্ষ জড়িত এবং ষড়যন্ত্রকারী আর খুনীদের পুর্নবাসনকারীদের খুজে বের করে বিচারের আওতায় আনার জন্য তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানান।
বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনসি তার মন্ত্রণালয়ের কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে পেয়াজের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টিও তুলে ধরেন। তিনি বলেন,দেশে পেয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২৫ থেকে ২৬ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় ৮ থেকে ৯ লাখ মেট্রিক টন। এর ৯০ ভাগ ভারত থেকে আমদানি করতে হয়। কিন্তু এবার ভারতে পেয়াজ উৎপাদন কম হওয়ায় হঠাৎ করে গত সেপ্টেম্বরে তারা পেয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। ফলে দেশে পেয়াজের সংকট দেখা দেয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। অবশ্য সরকার মিয়ানমার, তুরস্ক ও মিশর থেকে পেয়াজ আমদানি করে। তারপরও চাহিদার তুলনায় কম ও সময়সাপেক্ষ হওয়ায় দাম কমেনি।
তিনি জানান বাংলাদেশ পেয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে না পারলে ভাবিষ্যতেও এ সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। এ বিষয় মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আগামী ৩ বছরের মধ্যে দেশকে পেয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছ্।ে
তিনি বলেন, পদক্ষেপ নেয়ার ফলে এ বছরই পেয়াজের উৎপাদন ১৫ থেকে ২০ ভাগ বেশী হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের অন্যান্য সদস্যরা বলেন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূলের মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ-প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে বাঙালি জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ।
তারা বলেন, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা, আইনের শাসন ও অব্যাহত আর্থসামাজিক উন্নয়নে সকল রাজনৈতিক দল, শ্রেণি ও পেশা নির্বিশেষে সবাই আজ একতাবদ্ধ। সুশাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপায়ন এবং সমাজের সকল স্তরে জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণের মাধ্যমে “এ বছর আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে মধ্য-আয়ের দেশ হিসেবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবো।
তারা বলেন, রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে ২০৪১ সালে বিশ্বসভায় বাংলাদেশ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হবে ” উন্নয়নের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ নির্মূল, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন ও বিকাশ, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের চিত্র তুলে ধরেন।
বাসস/এমআর/এমএআর/২১২৫/-অমি