বর্তমান সরকার গ্রাম-শহর নির্বিশেষে জনগণের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করেছে : সরকারি দল

301

সংসদ ভবন, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বলেছেন, বর্তমান সরকার আমলে সূচিত সমতা ভিত্তিক উন্নয়নের ফলে গ্রাম-শহরের ব্যাবধান কমিয়ে সবার জন্য নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।
তারা বলেন, দেশের সব মানুষের সবধরনের অধিকার ও সুবিধা নিশ্চিত করতে গ্রামীন উন্নয়নে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। গ্রামীন উন্নয়নে সারা দেশে এখন ব্যাপক কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করা হচ্ছে। এর ফলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গ্রামীন আর্থ- সামাজিক খাতের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
গত ৯ জানুয়ারি চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করলে সরকারি দলের সদস্য আ স ম ফিরোজ তা সমর্থন করেন।
গত ৯ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের ষষ্ঠ ও এ বছরের প্রথম অধিবেশনের শুরুর দিন সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সংসদে ভাষণ দেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আজ আলোচনায় অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, সরকারি দলের শামসুল হক টুকু, এইচ এন আশিকুর রহমান, মোর্শেদ আলম, আকম সরোয়ার জাহান, বেগম সাগুফতা ইয়াসমিন,বেগম খোদেজা নাসরিন আখতার হোসাইন, পারভিন হক শিকদার, বাসন্তী চাকমা, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন ও স্বতন্ত্র সদস্য রেজাউল করিম বাবলু।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক মুজিব বর্ষ উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক পুরস্কার চালুর প্রস্তাব দেন। এছাড়া তিনি ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর নামে আরেকটি পুরস্কার প্রবর্তনের বিষয়েও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানান।
মন্ত্রী স্বাধীনতা বিরোধী দল জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার কথা পুনরায় উল্লেখ করে বলেন, বিশ্বের কোথাও স্বাধীনতা বিরোধী ও মানবতা বিরোধী অপরাধীদের রাজনীতি করার অধিকার থাকে না। কিন্তু জামায়াত ইসলামী এখন নিষিদ্ধ করা যায়নি। যুদ্ধ অপরাধী দল হিসাবে জামায়াতের এ দেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। সম্ভব দ্রুত সময়ের মধ্যে দল হিসাবে জামায়াত ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
মোজাম্মেল হক সরকার সম্পর্কে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সাম্প্রতিক বক্তব্যের তিনি নিন্দা জানান। তার মতো বর্ষিয়ান নেতার কাছে জাতি এটা আশা করে না।
তিনি ল্যুই আই ক্যানের নকশা বর্হিভূত জিয়ারউর রহমানের কবরসহ অন্যান্য স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার পদক্ষেপ নেয়ারও আহবান জানান।
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী গত ১১ বছরে তার মন্ত্রণালয়ের কর্মকান্ডের বিবরণ তুলে ধরেন।
বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, তরা মন্ত্রণালয় মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে বছরব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করছে।
তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন,‘ আমরা সরকারি অবকাঠামো নির্মাণে শতভাগ ব্লক ইট ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছি।’ এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ইট ভাটা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের অন্যান্য সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। এর ফলে প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ প্রায় সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এশিয়ার অনেক দেশ থেকে এগিয়ে রয়েছে। এছাড়া শুধু প্রবৃদ্ধি অর্জণের দিক থেকে বিশ্বের উন্নত দেশের কাতারে রয়েছে বাংলাদেশ। তারা উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিনত হতে এ অর্জনের এ হার বজায় রেখে আরো উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তারা বলেন, বর্তমান সরকার আমলে গ্রাম- শহরের ব্যবধান কমিয়ে আনা হয়েছে। সরকারের গ্রাম হবে শহর এ শ্লোগানের অংশ হিসাবে দেশের প্রত্যন্ত্য গ্রামীন জনপদেও এখন শহরের মতো সব ধরনের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিশেষ করে সারা দেশে শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার কাছাকাছি পোঁছে গেছে দেশ। এ ছাড়া ইতোমধ্যে দেশে শতভাগ স্যানিটেশন নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশ্ববর্ত অনেক দেশে এটা সম্ভব হয়নি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এটা সম্ভব হয়েছে।
তারা বলেন, স্বাস্থ্য সেবার দিক থেকেও দেশ অনেক এগিয়েছে। এখন দেশের জনগণ উন্নত চিকিৎসা পাচ্ছে। প্রায় ২৫ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সব মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসা সেবা পোঁছে দেয়া হয়েছে। জেলা পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদায়নের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আলোচনায় অংশ নিয়ে সবাই আজ অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ক্রিকেটারসহ সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানান। তারা বলেন, মুজিব বর্ষে দেশের সোনার ছেলেরা জাতিকে আরেকটি অনন্য বিজয় এনে দিয়েছে।