আজকের ক্ষুদে ফুটবলাররা আগামীতে বিশ্বকাপ খেলবে : আশাবাদ প্রধানমন্ত্রীর

705

ঢাকা, ২৮ মার্চ, ২০১৮ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ফুটবল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরো এগিয়ে যাবে এবং ফুটবল বিশ্বকাপেও বাংলাদেশ একদিন স্থান করে নিতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোল্ডকাপ এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব ফুটবল টুর্নামেন্টের মাধ্যমে ক্ষুদে খেলোয়াড়রা অল্পবয়স থেকেই তাদের প্রতিভা বিকাশের সুয়োগ পাচ্ছে। এই খেলোয়াড়রা বাংলাদেশকে আগামীতে বহুদূর নিয়ে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আজকের ক্ষুদে ফুটবলাররা আগামীতে বিশ্বকাপ খেলবে। সেই দিনের প্রতীক্ষায় থাকলাম।’
শেখ হাসিনা আজ বিকেলে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৭ এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০১৭-র ফাইনাল খেলার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রাথমিক এবং গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত দেশব্যাপী প্রাথমিক স্কুল পর্যায়ে প্রায় ২২ লাখ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্ট দু’টির পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশকে গড়ে তুলতে চাই। আমাদের আজকের শিশুরা আগামীদিনের কর্ণধার হবে। তাই খেলাধূলা ও সংস্কৃতিচর্চার ওপর আমরা বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি। খেলাধূলার মধ্যদিয়ে আজকের শিশুদের যেমন মানসিক শক্তি গড়ে উঠবে তেমনি শারিরীকভাবে তারা সুস্থ হবে, শৃংখলাবোধ শিখবে, অধ্যবসায় শিখবে, দায়িত্ব জ্ঞান বোধ তাদের মাঝে জাগ্রত হবে এবং সহনশীলতা শিক্ষা পাবে। তাই খেলাধুলাকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দেই।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোল্ডকাপ এবং বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল আজকে গ্রাম-গঞ্জে ছড়িয়ে গেছে। ২০১০ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ এবং ২০১১ সাল থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের মেয়েদের জন্য বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয়। ২০১৭ সালে বঙ্গমাতা ফজিলাতুননেছা মুজিব গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৬১১ জন মেয়ে শিক্ষার্থী এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯৬ জন ছেলে শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, যত দিন যাচ্ছে খেলাধূলায় ছেলেমেয়েদের উৎসাহ বাড়ছে।
ইতোমধ্যে আমাদের দেশের মেয়েরা অনেক যোগ্যতার প্রমাণ রাখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের মেয়েরা এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ ফুটবলে আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে এবং বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা ফুটবল দল সাফ চ্যাম্পিয়ন শিপের প্রথম আসরে ভারতের বিপক্ষে বিজয়ী হয়।
৬৪ হাজার ৬৮৮ বিদ্যালয়ের মধ্যে সেরা হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের দল কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার পূর্ব উজানটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফাইনালে তারা ২-১ গোলে হারিয়েছে রাজশাহী বিভাগের দল পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার ভুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে।
ঢাকা বিভাগের দল ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার পাঁচরুখি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খুলনা বিভাগের দল ঝিনাইদহের শৈলকুপার দোহারো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যেকার মেয়েদের ফাইনালের দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটাই তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
মেয়েদের ফাইনাল বেশ জমেছিল। ছেলেদের লড়াই নির্ধারিত ৫০ মিনিটে শেষ হলেও নির্ধারিত সময় এবং অতিরিক্ত সময় ১-১ গোলে অমীমাংসিত থাকায় টাইব্রেকার তাদের শিরোপা নির্ধারণ হয়। ঝিনাইদহের মেয়েরা টাইব্রেকারে ফাইনাল জিতে ৫-৪ গোলে। বিরতির আগে ১-০ গোলে এগিয়েছিল পাঁচরুখি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফেরে ঝিনাইদহের দোহারো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
খেলা শেষে প্রধানমন্ত্রী দুটি টুর্নামেন্টের বিজয়ী, রানার্স আপ এবং তৃতীয় স্থান অর্জনকারী দলের সদস্যদের মধ্যে ব্যক্তিগত পুরস্কার, দলগত ট্রফি এবং এক লাখ, ৭৫ হাজার এবং ৫০ হাজার টাকা করে প্রাইজমানির চেক বিতরণ করেন।