বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্টকে সংহতির ম্যাচ হিসেবে দেখছে পাকিস্তান

299

রাওয়ালপিন্ডি (পাকিস্তান), ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ (বাসস/এএফপি): সফরকারী বাংলাদেশের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া টেস্ট সিরিজে স্বাগতিক ও দল হিসেবে পাকিস্তান নিজেদের দক্ষতা ও যোগ্যতাকে সৃমদ্ধ করতে সক্ষম হবে বলে আশা করছেন স্বাগতিক অধিনায়ক আজহার আলী। আগামীকাল শুরু হতে যাচ্ছে সিরিজের প্রথম টেস্ট।
দীর্ঘ ১০ বছর নির্বাসিত থাকার পর শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে দুই মাস আগে পাকিস্তান নিজ দেশে টেস্ট আয়োজনে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে এই টেস্ট সুচি তাদের সক্ষমতা অর্জনের দ্বিতীয় ধাপ। ২০০৯ সালের মার্চে লাহোরে শ্রীলংকার টিম বাসে সন্ত্রাসী গোষ্ঠির রক্তক্ষয়ী হামলার পর দেশটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিষিদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হোম ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করতে বাধ্য হয় পাকিস্তান।
আইন শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি হবার পর ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কেবল সিমীত ওভারের ক্রিকেট আয়োজনে সক্ষম হয়েছিল পাকিস্তান। তবে এখনো দীর্ঘ সময় ধরে পাকিস্তানে অবস্থান করতে রাজি নয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তিন ধাপে সিরিজ খেলার বিষয়ে সম্মতি নিয়েই পাকিস্তান সফরে গেছে টাইগাররা। এরই ধারাবাহিকতায় গত মাসে কেবল টি-২০ সিরিজ খেলেই দেশে ফিরেছিল টিম বাংলাদেশ।
প্রথম এই টেস্টে অংশগ্রহন শেষেও দেশে ফিরে আসবে টাইগাররা। এরপর একটি ওয়ানডে এবং দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে ফের পাকিস্তান যাবে দলটি। আগামী ৩ এপ্রিল করাচিতে অনুষ্ঠিত হবে একমাত্র ওয়ানডে ম্যাচটি। এরপর ৫ থেকে ৯ এপ্রিল একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট।
আজহার বলেন, খন্ডিত এই সিরিজটি পাকিস্তানকে টেস্ট আয়োজক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করবে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন,‘ এই সিরিজটি সম্ভব করার কৃতিত্ব উভয় দেশের ক্রিকেট বোর্ডের। তবে সিরিজটি খন্ডিত না হলে বেশী ভাল হতো। অবশ্য বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ম্যাচ হিসেবে এই টেস্টের প্রতি আমাদের পুরো মনোযোগ রয়েছে।’
চ্যাম্পিয়নশীপের পয়েন্ট তালিকায় বর্তমানে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। টেস্ট খেলুড়ে শীর্ষ ৯ দেশের এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে ভারত। তারা এ পর্যন্ত সর্বাধিক ৩৬০ পয়েন্ট অর্জন করেছে। ২৯৬ পয়েন্ট নিয়ে অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় এবং ১৪৬ পয়েন্ট নিয়ে ইংল্যান্ড তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। শীর্ষ পয়েন্ট সংগ্রহকারী দুটি দল ২০২১ সালের জুনে চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালে অংশগ্রহনের সুযোগ পাবে।
আজহার বলেন,‘এই ম্যাচ আয়োজনের মাধ্যমে আমরা বিশ্ববাসীকে এই বার্তা দিতে সক্ষম হব যে পাকিস্তান এখন নিরাপদ দেশ। টেস্টে বাংলাদেশ স্কোয়াডে নেই সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। সাকিব স্পট ফিক্সিং মামলায় নিষিদ্ধ এবং মুশফিকুর নিরাপত্তাহীনতার আশংকায় স্কোয়াড থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মুমিনুল হক বলেন,‘ সেরা দুই খেলোয়াড়কে বাইরে রেখে এমন ম্যাচে খেলাটা বেশ কঠিন। তবে এর ফলে তরুণ খেলোয়াড়রা সুযোগ পাবে। আমরা তাদের ভাল ক্রিকেট খেলা দেখার অপেক্ষায় আছি। ’
এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০ ম্যাচে অংশ নিয়ে নয়টিতেই পরাজিত হয়েছে টাইগাররা। বাকী ম্যাচটি ড্র হয়েছে।
তবে আশার কথা হচ্ছে নতুন ফর্ম নিয়ে দলে ফিরেছেন ওপেনার তামিম ইকবাল। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি ট্রিপল সেঞ্চুরি হাকিয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তার সঙ্গে পাকিস্তানের শক্তিশালী বোলিং মোকাবেলায় রয়েছেন অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
ম্যাচে পাকিস্তান আক্রমণে যোগ দেয়া ১৬ বছর বয়সি বিষ্ময়কর পেসার নাসিম শাহ’র আক্রমণের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ওপেনার আবিদ আলীর লক্ষ্য থাকবে আরো একটি সেঞ্চুরি হাকানো। যাতে পরপর প্রথম তিন টেস্টে সেঞ্চুরি করার রেকর্ড বইয়ে থাকা ভারতীয় ব্যাটসম্যান আজহার আলীর রেকর্ডে ভাগ বসাতে পারেন।
১৯৮৪-৮৫ সালে আজহার আলী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম তিন টেস্টে সেঞ্চুরি হাকিয়ে রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়েছিলেন।
দল: :
বাংলাদেশ (সম্ভাব্য): মোমিনুল হক (অধি:), তামিম ইকবাল, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিথুন, লিটন দাস, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, এবাদত হোসেন, আবু জায়েদ, আল আমিন হোসেন, রুবেল হোসেন ও সৌম্য সরকার।
পাকিস্তান সম্ভাব্য: আজহার আলী (অধি:), আবিদ আলী, আসাদ শফিক, বাবর আজম, ফাহিম আশরাফ, বিলাল আসিফ, ফাওয়াদ আলম, হারিস সোহেল, ইমাম-উল-হক, ইমরান খান, মোহাম্মদ আব্বাস, মোহাম্মদ রিজওয়ান, নাসিম শাহ, শাহিন শাহ আফ্রিদী, শান মাসুদ ও ইয়াসির শাহ।