বঙ্গবন্ধুকে যথাযথভাবে তুলে ধরার জন্য প্রকাশক ও লেখকদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

536

ঢাকা, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বইয়ের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুকে যথাযথভাবে তুলে ধরার জন্য প্রকাশক ও লেখকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আগামীকাল থেকে মাসব্যাপী ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২০ উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানিয়ে বলেন, জ্ঞানচর্চা ও পাঠচর্চা বিস্তারে গ্রন্থমেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রন্থমেলা এমন একটি মাধ্যম, যা জাতির অগ্রগতির ও উন্নয়নের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গ্রন্থমেলা আমাদের অস্তিত্ব, জীবনবোধ এবং চেতনাকে জাগ্রত করে। বইয়ের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুকে যথাযথভাবে তুলে ধরবেন- প্রকাশক ও লেখকদের প্রতি এ আহ্বান জানাচ্ছি।”
মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবারের একুশে গ্রন্থমেলা উৎসর্গ করা হয়েছে সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘সকল ভেদাভেদ ভুলে মহান একুশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে একসঙ্গে কাজ করাই হোক একুশে গ্রন্থমেলায় আমাদের অঙ্গীকার।’
শেখ হাসিনা আজকের এই দিনে তিনি সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিকসহ সকল ভাষা শহিদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানান বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সকল ভাষা সৈনিকের প্রতি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলা ভাষা আজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী মানুষের প্রাণে অনুরণিত হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি এখন ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। এই স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কানাডা প্রবাসী সালাম ও রফিকসহ কয়েকজন বাঙালি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ সরকার এ বিষয়ে জাতিসংঘে প্রস্তাব উত্থাপন করে।
যার ফলে ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ভাষা বাংলাকে জাতিসংঘের অন্যতম সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদানের জন্য তিনি ইতোমধ্যে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দাবি উত্থাপন করেছেন।
তিনি বলেন, “বিশ্বের সকল ভাষাগোষ্ঠীর মাতৃভাষা সংরক্ষণ, বিকাশ ও চর্চার লক্ষ্যে আমরা ঢাকায় ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করেছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন,জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে তাঁর জীবন ও কর্মের বিভিন্ন দিক নিয়ে বাংলা একাডেমি আজ থেকে পর্যায়ক্রমে ১০০টি নতুন বই প্রকাশ শুরু করেছে। এর মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘আমার দেখা নয়া চীন’।
তিনি বঙ্গবন্ধুর এ বইয়ের প্রকাশক বাংলা একাডেমি এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে আশা করেন, অসমাপ্ত আত্মজীবনী এবং কারাগারের রোজনামচা’র মত এই বইটিও দেশি-বিদেশি পাঠকের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হবে।
‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০’ আয়োজিত হচ্ছে জেনে প্রধানমন্ত্রী খুবেই আনন্দিত উল্লেখ করে এ উপলক্ষে তিনি আয়োজক সংস্থা- বাংলা একাডেমি, দেশি-বিদেশি প্রকাশক এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান এবং অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০’-এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।