বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : অহেতুক চাকরির পেছনে না ছুটে যুব সমাজকে কর্মসংস্থান সৃষ্টির আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

124

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-যুব পুরস্কার
অহেতুক চাকরির পেছনে না ছুটে যুব সমাজকে কর্মসংস্থান সৃষ্টির আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশের যুব সমাজ হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে লড়াই করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। আমরা বিজয়ী জাতি। আর বিজয়ী জাতি হিসেবেই আমরা বিশ্বে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা চাই, আমাদের যুব সমাজ আত্মনির্ভরশীল হোক, আত্মমর্যাদাশীল হোক। তিনি বলেন, সে লক্ষ্য নিয়ে যখনই সরকার গঠন করেছি তখনই আমাদের যুব সমাজের জন্য আমরা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুব সমাজ খেলাধূলা, সংস্কৃতি চর্চাসহ সর্বক্ষেত্রেই যেন পারদর্শী হয়ে ওঠে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি এবং নিচ্ছি।
যুবকদের প্রশিক্ষণে তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এই প্রশিক্ষণটা একেবারে স্কুল পর্যায় থেকে শুরু করতে চাই। সেলক্ষে ৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকেই যেকোন একটা বিষয়ে হাতেকলমে শিক্ষা দেয়া শুরু হবে।
সরকার প্রধান বলেন, যুবকদের প্রশিক্ষণ কেবল যুব উন্নয়ন কেন্দ্র থেকেই নয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকেও এ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। তাঁর সরকার ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি চালু করেছে, সারাদেশে ২৮ শ’ ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছে, সারাদেশের সকল ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করছে, এর সবই যুবকদের কল্যাণের কথা চিন্তা করেই। আর একারণেই বেসরকারী খাতকেও উন্মুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর এ পর্যন্ত আমরা ২ কোটি যুব সমাজের চাকরি এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পেরেছি।’
‘স্টার্টআপ’ প্রোগামের (কাজটি শুরু করার জন্য) জন্য সরকার ১শ’ কোটি টাকা ‘থোক বরাদ্দ’ দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যারা স্বপ্রণোদিত হয়ে উদ্যোক্তা হবে তারাই এখান থেকে ঋণ পাবে। কাজ করতে পারবে এবং শুরু করলেই কিন্তু ব্যাপকভাবে কাজ করা যায়।’
তিনি বলেন, তাঁর সরকার সারাদেশে যে ১শ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। সেখানে যেমন খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তোলা হবে তেমনি উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণের সুবিধাও রাখা হবে। যেখানে ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমাদের যুব সমাজকে আমি এটাই বলবো-যে বহুমুখী সুযোগ আমরা সৃষ্টি করে দিচ্ছি সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আগে দেখতে হবে আমি নিজে কি করতে পারি। নিজে কতটুকু কাজ করতে পারি। আর নিজে মানুষকে কিছু দিতে পারি কিনা সেটাই বড় কথা। আর এক্ষেত্রে যা দরকার সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সে ব্যবস্থা নিচ্ছি, দিচ্ছি এবং সেই সুযোগ আমরা সৃষ্টি করে দেব।’
‘আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী ’উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি স্বপ্রণোদিত পদক্ষেপ নিলেই অনেক বড় বড় কাজ তাঁরা করতে পারে। সে বিশ্বাস আমার আছে।’
সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ মাদক ও দুর্নীতির প্রতি তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির পুনরুল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক এবং দুর্নীতির থেকে দূরে থাকতে হবে এবং এটা প্রতিহত করতে হবে। একটা শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। যাতে মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে এবং দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
তিনি জাতির পিতার আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, জাতির পিতা তাঁর ছাত্রজীবন থেকে এদেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছেন। এই দেশ ও দেশের জনগণের স্বার্থে জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময়গুলো তিনি কারাগারে কাটিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আজ আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাঁর আদর্শ রয়েছে। তাঁর সেই আরাধ্য কাজ সম্পন্ন করাটাই আমাদের লক্ষ্য। আর যে দেশের জন্য লাখো মানুষ রক্ত দিয়েছেন, সেই দেশ কখনো ব্যর্থ হতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমরা এই দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। আর আজকের তরুণ সমাজই হবে সেই গড়ে তোলার কর্ণধার।’
বাসস/এএসজি-এফএন/১৬২০/আরজি