ভ্যালেন্সিয়ার কাছে পরাজিত বার্সেলোনা

159

ভ্যালেন্সিয়া, ২৬ জানুয়ারি ২০২০ (বাসস) : ভ্যালেন্সিয়ার কাছে ২-০ গোলে পরাজিত হয়ে লা লিগায় পয়েন্ট হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা। নতুন কোচ কিকে সেতিয়েনের অধীনে লা লিগার দ্বিতীয় ম্যাচের পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেল কাতালান জায়ান্টরা।
ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে জোর্দি আলবার আত্মঘাতি ও ম্যাক্সি গোমেজের ৭৭ মিনিটের গোলে স্বাগতিকদের জয় নিশ্চিত হয়। দায়িত্বের শুরুতেই এই ধরনের পরাজয়ে অনেকেই সেতিয়েনের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এদিকে গ্রানাডাকে ২-০ গোলে হারিয়ে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদকে টপকে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে সেভিয়া। শীর্ষ দুই দল বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের থেকে তাদের পয়েন্টের ব্যবধান এখন পাঁচ।
বার্সেলোনা পুরো ম্যাচে আধিপত্য ধরে রাখলেও গোলের সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে এগিয়ে গেছে ভ্যালেন্সিয়া। যদিও ১২ মিনিটে গোমেজ পেনাল্টির সুুযোগ নষ্ট না করলে পরাজয়ের ব্যবধান বাড়তে পারতো। এছাড়াও প্রথমার্ধে তার একটি শট ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে। গ্যাব্রিয়েল পলিস্তার শেষ মুহূর্তের একটি গোল অফ-সাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়।
আগের কোচ আর্নেস্টো ভালভার্দের অধীনে দেখা পরিচিত ভুলগুলো এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি বার্সা। তারপরেও দলকে শীর্ষস্থানে রেখেই তিনি দলত্যাগ করেছিলেন। সেতিয়েন আসার পর থেকেই নতুন স্টাইলে দলের কৌশল সাজাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ভাল পজিশনে থেকেও বার্সার এই পরাজয় কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না সমর্থকরা। বরং ভ্যালেন্সিয়া পুরো ম্যাচেই ধীরে ধীরে নিজেদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিয়েছে। একইসাথে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও নিজেদের করে নিয়েছে।
ম্যাচ শেষে সেতিয়েন বলেছেন, ‘কিছু কিছু বিষয় এখনো খেলোয়াড়রা বুঝতে পারছেনা। হতে পারে আমি হয়ত তাদেরকে বুঝাতে পারছিনা। প্রথমার্ধে আমরা মোটেই ভাল খেলতে পারিনি।’
এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে সেতিয়েন তার কৌশলকে কাজে লাগাতে গিয়ে খুব বেশি তাড়াহুড়া করে ফেলছেন কি-না যা দলের ওপর প্রভাব ফেলছে। দলের অন্যতম অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার সার্জিও বাসকুয়েট বলেছেন, ‘খেলোয়াড়দের অবশ্য কোচিং স্টাফদের সাথে মানিয়ে নেবার জন্য সময় লাগবে। আমাদের দলে অনেক ভাল দিক আছে। কিন্তু তারপরেও কিছু কিছু জায়গায় অবশ্যই উন্নতি করতে হবে।’
কোচ আলবার্ট সেলাডেসের অধীনে ভ্যালেন্সিয়া এখনো উন্নতির পথেই রয়েছে। এই জয়ে তারা টেবিলের পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে। যদিও এই সাফল্যে কাল দলে ছিলেন না অধিনায়ক ডানি পারেয়ো ও স্ট্রাইকার রডরিগো মোরেনো। জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোতে মোরেনোকে দলে নিতে বার্সেলোনা জোড় প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
প্রথম ৬ মিনিটে ভ্যালেন্সিয়া বল খুব কমই পেয়েছে। যদিও সমর্থকরা দলের কাছ থেকে আরো বেশি আগ্রাসী খেলা আশা করেছিল। কিন্তু দলের রক্ষণাত্মক কৌশল বার্সেলোনাকে সুযোগ সৃষ্টি করতে বাঁধা দিচ্ছিল। কিছুক্ষন পরেই ভ্যালেন্সিয়া যখন কৌশল পাল্টে ফেলে তখনই তারা বিপদজনক হয়ে উঠে। প্রথম আক্রমণেই তারা পেনাল্টি আদায় করে নেয়। জেরার্ড পিকের বিপক্ষে পেনাল্টি আদায় করে নেন হোসে গায়া। আট গজ দুর থেকে গায়াকে ফাউলের অপরাধে পিকেকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়। পারেয়োর অনুপস্থিতিতে পেনাল্টি শট নেবার দায়িত্ব পড়ে গোমেজের ওপর। কিন্তু স্পট কিক থেকে তার শট সহজেই রুখে দেন মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগান। ২৮ মিনিটে অল্পের জন্য গোলের সুযোগ নষ্ট করেন লিওনেল মেসি। গোমেজের শট ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে, কেভিন গামেইরোকে হতাশ করেন টার স্টেগান।
দ্বিতীয়ার্ধে আরো বেশী আগ্রাসী হয়ে উঠে ভ্যালেন্সিয়া। তারই ধারাবাহিকতায় ডেডলক ভাঙ্গতে সমর্থ হয়। ৪৮ মিনিটে গোমেজের শক্তিশালী শট বার্সা মিডফিল্ডার জোর্দি আলবার গা ঘেঁষে জালে জড়ালে আত্মঘাতি গোলে এগিয়ে যায় ভ্যালেন্সিয়া। বার্সেলোনাও ম্যাচে ফিরে আসার জন্য জোড় প্রচেষ্টা চালাতে থাকে। মেসির দু’টি সুযোগ নষ্ট হয়। কিন্তু ৭৭ মিনিটে উল্টো গোমেজ গোল করে বসলে বার্সার সব আশা শেষ হয়ে যায়। ফার্নান্দো তরেসের সহযোগিতায় গোমেজ ভ্যালেন্সিয়ার জয় নিশ্চিত করেন।