কক্সবাজার, ২২ জানুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রোহিঙ্গাদের অসহনীয় বোঝা বাংলাদেশের ঘাড় থেকে সরিয়ে নেয়ার জন্য বিশ্ববিবেকের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন,“রোহিঙ্গারা আমাদের ওপর বিশাল বোঝা হয়ে আছে। বিশ্ব বিবেকের কাছে আহবান জানাবো, এই অসহনীয় বোঝা বাংলাদেশের ঘাড় থেকে সরিয়ে নিন।”
ওবায়দুল কাদের আজ বিকেলে কক্সবাজারের চকরিয়া সরকারি কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি এ আহবান জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন “আমাদের জনগণের ধৈর্য্যরে বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। বিশেষ করে চীন এবং প্রতিবেশী ভারতের কাছে আহবান জানাবো, আমাদের জনগণ কষ্ট পাচ্ছে। আমাদের পরিবেশ, আমাদের পর্যটন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আমাদের জনগণ আতঙ্কে আছে। কাজেই আমরা বিশ্ব বিবেকের কাছে আহবান জানাবো এই বিশাল বোঝা মিয়ানামারে ফেরত পাঠানোর ব্যাবস্থা করুন।”
সেতু মন্ত্রী বলেন, গাম্বিয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রোহিঙ্গা নিয়ে একটি রায় ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে। আমরা আশা করবো, বিশ্ব বিবেক, বিশ্বের আদালত আমাদের প্রতি সুবিবেচনা করবেন। শেখ হাসিনা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার যে সুযোগ দিয়েছেন, সেই উদারতার ফসল যাতে আমরা পাই।’
দ্বিতীয় বারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় ওবায়দুল কাদেরকে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এতে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা থেকে লাখো নারী-পুরুষের সমাবেশ ঘটে। একপর্যায়ে কলেজ মাঠ ছাপিয়ে আশপাশের বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে মানুষের ভিড় জমে।
কক্সবাজার-১ চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের কক্সবাজারের লবণ ও চিংড়ি চাষিদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব নিয়ে বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, দেশের একমাত্র লবণ উৎপাদনকারী অঞ্চল কক্সবাজারের লবণ চাষি ও চিংড়ি চাষিদের বাঁচাতে হবে। লবণ নিয়ে সংকটের কথা আসছে, সেই সংকট যাতে না হয় সেজন্য সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হবে।
কাদের বলেন, মধ্যসত্ত¡ভোগী সিন্ডিকেট যাতে চাষিদের মুনাফা লুটে খেতে না পারে, ন্যায্যমূল্য পায়, চিংড়ি চাষের সাথে যারা জড়িত তারাও যাতে সকল সুযোগ-সুবিধা পায় সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের জোয়ারে নবজাগরণের সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি চকরিয়া ও পেকুয়ার উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়েও বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দুই উপজেলার অন্তত ১০টি অভ্যন্তরীণ সড়কের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে এবং আরো বড় বড় প্রকল্প হাতে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণসহ ডিপিপি অনুমোনদের পর্যায়ে রয়েছে ।
গণসংবর্ধনা সভায় আরো বক্তব্য দেন কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট রনজিত দাশ, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন প্রমুখ।