বাসস দেশ-২৫ : চট্টগ্রাম গণহত্যা মামলার যুক্তিতর্ক শুরু কাল

134

বাসস দেশ-২৫
গণহত্যা মামলা-যুক্তিতর্ক
চট্টগ্রাম গণহত্যা মামলার যুক্তিতর্ক শুরু কাল
চট্টগ্রাম, ১৮ জানুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সমাবেশ’কে কেন্দ্র করে চালানো গণহত্যা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন আগামীকাল রোববার (১৯ জানুয়ারি) শুরু হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপিসহ ৫৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুযারি সংগঠিত গণহত্যায় ২৪ জন নেতাকর্মী মৃত্যুবরণ এবং অসংখ্য আহত হয়েছিলেন।
এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আদালত আগামীকাল রোববার যুক্তিতর্কের দিন ধার্য করেছেন। যুক্তির্তক শেষ হলে আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী ২৪ জানুয়ারি গণহত্যার ৩২তম বার্ষিকীর আগেই হয়তো চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় আদালত ঘোষণা করতে পারে। মামলাটি বিভাগীয় বিশেষ আদালতে আছে। সংশ্লিষ্ট আদালতে বিচারক না থাকায় এখন চার্জে আছেন জেলা জজ আদালত।’
মামলার সর্বশেষ সাক্ষি অ্যাডভোকেট সম্ভু নাথ নন্দি গত ১৪ জানুয়ারি জেলা দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেনের আদালতে সাক্ষ্য দেন। এ মামলার ১৬৮জন সাক্ষির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ মোট ৫৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগরীর লালদীঘি ময়দানে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নির্ধারিত সমাবেশ ছিল। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার গাড়ি বহর নিউ মার্কেট মোড় অতিক্রম করে জিপিওর সামনে আসলে আচমকা গর্জে উঠে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের রাইফেল। সেদিন এলোপাথাড়ি গুলিতে একে একে মৃত্যুর কোল ঢলে পড়েন মো. হাসান মুরাদ, মহিউদ্দিন শামীম, এথলেবার্ট গোমেজ কিশোর, স্বপন কুমার বিশ্বাস, স্বপন চৌধুরী, পঙ্কজ বৈদ্য, বাহার উদ্দিন, চান্দু মিয়া, অজিত সরকার, রমেশ বৈদ্য, বদরুল আলম, ডি কে চৌধুরী, পলাশ দত্ত, আব্দুল কুদ্দুস, গোবিন্দ দাশ, শাহাদাত, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, সবুজ হোসেন, কামাল হোসেন, বি কে দাশ, সমর দত্ত, হাসেম মিয়া ও মো. কাসেম।
পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণের সময় মানববেষ্টনী তৈরি করে শেখ হাসিনাকে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতি ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।
১৯৯২ সালের ৫ মার্চ আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা বাদি হয়ে চট্টগ্রাম চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। এর আগে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের আমলে এ ঘটনায় কেউ মামলা করার সাহস করেননি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মামলার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়। আদালতের আদেশে সিআইডি মামলাটি তদন্ত করে। ১৯৯৭ সালের ১২ জানুয়ারি প্রথম এবং অধিকতর তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়। অভিযোগপত্রে তৎকালীন সিএমপি কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদাসহ আট পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়।
মামলার অপরাপর আসামিরা হলেন, ইন্সপেক্টর গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল, কনস্টেবল মুশফিকুর রহমান, বশির উদ্দিন, আব্দুস সালাম, প্রদীপ বড়ুয়া, মমতাজ উদ্দিন ও মো. আবদুলøাহ।
গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল ছিলেন কোতোয়ালী অঞ্চলের পেট্রোল ইন্সপেক্টর। ঘটনার পর থেকেই তার কোন হদিস নেই। ২০০০ সালের ৯ মে এই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
উল্লেখ্য, এ মামলার বাদি আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা, প্রধান আসামি তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদা, তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি আব্দুল কাদের এবং মামলার এক আসামি পুলিশ কনস্টেবল বশির উদ্দিন ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন।
বাসস/সংবাদদাতা/জিই-কেএস/জেডআরএম/১৮৫০/এইচএন