বাসস ক্রীড়া-১৯ : বোর্ডকে ধন্যবাদ, তবে মাঠ থেকে অবসর নেয়ার ইচ্ছা নেই : মাশরাফি

121

বাসস ক্রীড়া-১৯
ক্রিকেট-বঙ্গবন্ধু বিপিএল-মাশরাফি
বোর্ডকে ধন্যবাদ, তবে মাঠ থেকে অবসর নেয়ার ইচ্ছা নেই : মাশরাফি
ঢাকা, ১৩ জানুয়ারি ২০২০ (বাসস) : বাংলাদেশের ক্রিকেটে মাশরাফি বিন মর্তুজার অবদান, সেটি সবারই জানা। ব্যক্তিগত পারফরমেন্সের চেয়েও দলের প্রয়োজনে সবার আগে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন তিনি। ২০১৫ বিশ্বকাপের আগ মূর্হুতে দ্বিতীয় বারের মত জাতীয় ওয়ানডে দলের অধিনায়ক হন ম্যাশ। এরপর বাংলাদেশকে অনেক সাফল্যই এনে দিয়েছেন তিনি। তার নেতৃত্বে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইানল ও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। তবে গত বিশ্বকাপ থেকে তার অবসর নিয়ে আলোচনাটা বেশি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) চাইছে, এমন ক্রিকেটারকে বীরের বেশে বিদায় দিতে। কিন্তু মাশরাফি তা চাচ্ছেন না। আজও সেটিই স্পষ্ট করলেন ম্যাশ।
আজ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ঢাকা প্লাটুনের এলিমিনেটর ম্যাচ শেষে মাশরাফি বলেন, ‘দেখুন গতকাল পর্যন্ত আমি বোর্ডের চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার ছিলাম। আজকে থেকে তো আর চুক্তিবদ্ধ নেই। আমি সব সময় চিন্তা করি যে ক্রিকেট বোর্ড হচ্ছে খেলোয়াড়দের অভিভাবক। তাদের বিপক্ষে যাওয়াকে আমি কখনোই সঠিক মনে করিনি। আমি সব সময় মনে করি, একজন খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়া উচিত তার ক্রিকেট বোর্ডকে। ক্রিকেট বোর্ড একজন খেলোয়াড়ের দেখাশুনা করে। তাই ক্রিকেট বোর্ডকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ যে, তারা আমাকে জাকজমকভাবে বিদায় জানাতে চেয়েছে। তবে আমি তো আগের দিনও বলেছি ও ক্লিয়ার ম্যাসেজ দিয়ে দিয়েছি যে, মাঠ থেকে অবসর তেমন ইচ্ছা আমার নেই। যদি আল্লাহতায়ালা তেমন সুযোগ রাখে বা আসে তখন দেখা যাবে। তবে আমার তেমন কোনও ইচ্ছা নেই। আর পাপন ভাই তো বলেই দিয়েছে যে নিলে (সংর্ধ্বনা) ভালো নাহলে তো কিছু করার নেই। আমি নিব কিনা সেটা তো আপনাদের বলেছি।’
নিজের ইচ্ছা হলে সময়মত অবসর নিবেন মাশরাফি। কারও জোড়ে অবসরের কোন ইচ্ছা নেই তার, ‘আমি খেলছি, আপনারা বার বার আমার খেলাটিকে জাতীয় দলে নিয়ে এসেছেন। আমি তো বলছি যে শুধু জাতীয় দলকে কেন্দ্র করেই একজন ক্রিকেটার ক্রিকেট খেলে না। আমার সামনে যে খেলা আসছে আমি সেখানে খেলছি, আনন্দ পাচ্ছি খেলে। জাতীয় দলের চিন্তা- যারা নির্বাচক আছেন, বিসিবিতে আছেন তাঁরা চিন্তা করবেন। আমার মনে হয় অতটুকু স্বাধীনতা আমার আছে যে আমি খেলতে চাই। কারো জোর করার জন্য তো আমি অবসর নিব না বা তেমন কিছু। বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটার আছে যারা মাঠ থেকে অবসর নেয়নি। আমি তো মনে করে করি আমার চেয়ে অনেক বড় ক্রিকেটার ছিল, যেমন হাবিবুল বাশার সুমন, সে তো বাংলাদেশের ক্রাইসিস মোমেন্টে সব সময় রান করেছে। মাঠ থেকে তো আর সে অবসর নেয়নি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুমন ভাই বা আরো যারা ছিল, হয়তো সুজন ভাই করতে পেরেছে। আর এছাড়া তো খুব কম বা রেয়ার কেস। আসলে একটা সময় আমিও ভাবতাম যে মাঠ থেকে অবসর নিব কি নিব না, দেখা যাক সময়ে বলে দিবে। তবে এখন মনে হয় যে এর প্রয়োজন নেই।’
এদিকে, গতকাল বিসিবি’র কার্যনির্বাহী সভায় ক্রিকেটারদের আর্থিক অনেক সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটিকে সাধুবাদ দিয়েছেন ম্যাশ। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি খুব ভালো সিদ্ধান্ত। তবে এরচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত হচ্ছে যে স্লিপটটা করা। তিন ফরম্যাটে যারা খেলবে আমার কাছে মনে হয় এটা একটা খুব ভালো উদ্যোগ ক্রিকেট বোর্ডের। কারণ যারা তিন ফরম্যাটের জন্য অ্যাভেইলেবেল থাকবে তাদের জন্য অবশ্যই যারা এক ফরম্যাট বা দুই ফরম্যাট খেলে তাদের বেতন বেশি হওয়া উচিত। এমনকি টেস্ট ক্রিকেটকে বেশি প্রাধান্য দেয় তাদের বেতন বেশি করা উচিত। তাহলে আমাদের টেস্ট ক্রিকেটের চিত্রটি পরিবর্তন হতে পারে এবং আমি মনে করি এক্ষেত্রে বিসিবি অনেক সুন্দর একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কারণ অনেকেই এখন টেস্ট খেলতে চায় না। এখন বেতনের মধ্যে থাকলে সেই স্পিরিটটা আসবে যে আমি যদি টেস্ট খেলি তাহলে বোর্ড থেকে আরো বেতন পাব। আমি মনে করি এই সিদ্ধান্তটি বোর্ডের অনেক ভালো যে, এভাবে ভাগাভাগি হচ্ছে।’
বাসস/এএসজি/এএমটি/২০১০/স্বব