পেনাল্টিতে এ্যাথলেটিকোকে হারিয়ে স্প্যানিশ সুপার কাপের শিরোপা জিতলো রিয়াল

184

জেদ্দা, ১৩ জানুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার দুর্দান্ত পারফরমেন্সে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদকে পেনাল্টিতে পরাজিত করে ১১বারের মত স্প্যানিশ সুপার কাপের শিরোপা জয় করেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
জেদ্দার কিং আব্দুল্লাহ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে ফাইনালের নির্ধারিত সময়ের খেলা গোলশুন্য ড্র ছিল। পেনাল্টিতে বেলজিয়ান গোলরক্ষক কোর্তোয়া প্রতিপক্ষ থমাস পার্টির পেনাল্টি রুখে দেন। এর আগে সাওল নিগুয়েজের শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। বিপরীতে দানি কারভাহাল, রডরিগো, লুকা মড্রিচ তাদের নিজেদের শটগুলো পোস্টে পাঠিয়ে রিয়ালকে সুবিধাজনক অবস্থানে নেবার পর সার্জিও রামোস জয়সূচক শটটি নেন। আর এতেই রিয়াল মাদ্রিদের মৌসুমের প্রথম শিরোপা নিশ্চিত হয়। এখনো লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা দৌঁড়ে ভালভাবেই টিকে রয়েছে গ্যালাকটিকোরা।
অতিরিক্ত সময়ে এ্যাথলেটিকো জয়ের সুযোগ হাতছাড়া করে। আলভারো মোরাতা অনেকটা একাই রিয়ালের পোস্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু রিয়ালের উরুগুইয়ান মিডফিল্ডার ফেডেরিকো ভালভার্দে পিছন থেকে বাজেভাবে তাকে চ্যালেঞ্জ করায় লাল কার্ড দেখে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান। ঘটনাটিতে অবশ্য পরবর্তীতে আলভারোর কাচে ক্ষমা চেয়ে ভালভার্দে বলেছেন এই ধরনের বিষয় কখনই হওয়া উচিত নয়। যদিও তিনি স্বীকার করেছেন এটি ছিল ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত এবং এ সময় তার কার্যত কিছুই করার ছিলনা। মোরাতা এগিয়ে গেলে নিশ্চিত সেটা গোল হতে পারতো।
এই জয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ফাইনালে কোচ হিসেবে জিনেদিন জিদানের সাফল্য বজায় থাকলো। এই নিয়ে জিদান তিনবার রিয়ালকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের, দুবার করে ক্লাব বিশ্বকাপ, উয়েফা সুপার কাপ ও স্প্যানিশ সুপার কাপের শিরোপা উপহার দিলেন। ম্যাচ শেষে উচ্ছসিত জিদান বলেছেন, ‘খেলোয়াড় হিসেবেও আমি অনেক কিছু জয় করেছি, আর এখন কোচ হিসেবে সাফল্য পাচ্ছি। তবে সব কিছুর জন্য আমি খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানাতে চাই। কঠোর পরিশ্রম করলে সাফল্য আসবেই।’
সরাসরি ফাইনালের পরিবর্তে চার দল নিয়ে প্রথমবারের মত দেশের বাইরে সুপার কাপ আয়োজন নিয়ে বেশ সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনকে। সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত ফাইনালের আগে স্প্যানিশ ফুটবল প্রধান লুইস রুবিয়ালেস বলেছেন নতুন এই ফর্মেট নিয়ে তিনি দারুন খুশী। বিশেষ করে সৌদি আরবের মত একটি ফুটবল প্রিয় দেশে এই ধরনের আয়োজন করতে পেরে রুবিয়ালেস ভবিষ্যতেও এর সাফল্য কামনা করেছেন।
তবে সব সমালোচনাকে পিছনে ফেলে সফলভাবেই টুর্নামেন্টটি শেষ হয়েছে। বুধবার ভ্যালেন্সিয়াকে পরাজিত করে ফাইনাল নিশ্চিত করে রিয়াল মাদ্রিদ। অন্যদিকে পরের দিন বার্সেলোনাকে ৩-২ গোলে পরাজিত করে ফাইনালের টিকিট কাটে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ। ফাইনালে গোলের দেখা না পাওয়া গেলে শেষ পর্যন্ত নাটকীয়তায় ঠাসা ছিল পুরো ম্যাচটি। শেষ পর্যন্ত রামোসের হাতে উঠেছে আরেকটি ট্রফি, রাতের অন্ধকারে আতশবাজীর বর্ণিল আলোতে রিয়ালের খেলোয়াড়রা মৌসুমের প্রথম শিরোপা জয়ে উল্লাসে মেতে উঠেছিল।
দুটি দলেরই ম্যাচের শেষের দিকে জয়ের সম্ভাবনা তৈরী হয়েছিল। বদলী খেলোয়াড় লুকা জোভিচের ডিফ্লেকটেড ক্রস থেকে ভালভার্দের হেড অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। অন্যদিকে কিয়েরান ট্রিপারের পাস থেকে মোরাতা কুর্তোয়াকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন।
অতিরিক্ত সময়ের ১০৫ মিনিটে মোরাতার শক্তিশালী শট পা দিয়ে কোনমতে রক্ষা করেন কুর্তোয়া। অন্যদিকে লুকা মড্রিচ ও মারিয়ানো ডিয়াজকে হতাশ করেন এ্যাথলেটিকো গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক।