খালেদার মুক্তি প্রশ্নে ফখরুলের বক্তব্য খন্ডন করলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান

231

ঢাকা, ১২ জানুয়ারি, ২০২০ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মুজিব বর্ষে খালেদা জিয়া কি অবদান রাখতে পারতেন, তিনি তো ১৫ আগস্টে কেক কেটে তার ভুয়া জন্মদিন পালনেই অভ্যস্ত, যে দিনটিতে বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্য নিমর্মভাবে শাহাদৎ বরণ করেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এক বক্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী উপরোক্ত মন্তব্য করেন। এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, বেগম জিয়াকে কারাগারে রেখে মুজিব বর্ষ উদযাপন জনগণের ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে। তার এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ বিএনপির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন, কারাগার থেকে বেগম জিয়ার মুক্তি দেয়ার উদ্দেশ্য কি ১৫ আগস্টে তাকে কেক কেটে তার ভুয়া জন্মদিন পালন করার সুযোগ করে দেয়া। তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ আজ এখানে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত নতুন বাংলা দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য এবং বিশিষ্ট অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডা. কামরুল হাসান, সিনিয়র সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পত্রিকার এডিটোরিয়ল বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. ওয়াকিল আহমেদ। অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর ফারুক এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি আবু জাফর সূর্যও অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
ড. হাছান মাহমুদ বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে সবর্দাই নোংরা রাজনীতি করছে। অথচ সরকার খালেদা জিয়ার সবোর্চ্চ চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করতে সবাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। দেশের সবোর্চ্চ মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসকদের দিয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করানো হচ্ছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন, পাশাপাশি তার পা ও হাটুতে ব্যাথা দীর্ঘদিনের স্বাস্থ্য সমস্যা। চিকিৎসকরা তার সবোর্চ্চ চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করছেন।
তথ্যমন্ত্রী জনমত গঠনে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ইতিবাচক ও গঠনমূলক মনোভাব গঠনে ভূমিকা রাখতে মিডিয়ার প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে মিডিয়ার বড় প্রভাব রয়েছে। তিনি জাতি গঠনে তরুণদের ইতিবাচক চিন্তা করার মানসিকতা গড়ে তোলার আহবান জানান। তিনি প্রচার মাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ উল্লেখ করে বলেন, অমি মনে করি সমাজকে সঠিক পথে পরিচালনায় সাংবাদিকরা ভূমিকা রাখতে পারেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার এবং মিডিয়ার মধ্যে ভাল সম্পর্ক থাকলে দেশ অবশ্যই এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশ হয়েছে। বাংলাদেশ মানব সম্পদ উন্নয়নসহ অনেক আর্থসামাজিক সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। বাংলাদেশ সকল আর্থ-সামাজিক সূচকে পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে, এমনকি অনেক সূচকে ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ায় মিডিয়া সেক্টরে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের প্রসার ঘটেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের দ্রুত প্রসার ঘটেছে। প্রথমবারের মতো শেখ হাসিনা দেশে বেসরকারি টেলিভিশনের অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পরই প্রথম বেসরকারি টেলিভিশনের লাইসেন্স দেন। বর্তমানে দেশে ৪৫ টি বেসরকারি টিভি চ্যানেল রয়েছে, এরমধ্যে ৩৫টি বেসরকারি টেলিভিশন সম্প্রচার হচ্ছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার সাংবাদিকদের চাকরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের নিয়ে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে স্বদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। স্বদেশ গ্লোবাল মিডিয়ার চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান চৌধুরী ধন্যবান জ্ঞাপন করেন।
মন্ত্রী পরে দৈনিক স্বদেশ পত্রিকার মোড়ক উন্মোচন করেন।