মৃত্যুদন্ডের বিরুদ্ধে সৈয়দ কায়সারের আপিলের রায় মঙ্গলবার

179

ঢাকা, ১১ জানুয়ারি ২০২০ (বাসস) : সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ মো. কায়সারকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে দেয়া মৃত্যুদন্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আনা আপিলের রায় ১৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার ঘোষণা করা হবে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ বেঞ্চ কায়সারের আপিল মামলায় উভয় পক্ষের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার এ তারিখ ধার্য্য করে গত ৩ ডিসেম্বর আদেশ দেয়। ট্রাইবুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আনা আপিলে এটি নবম মামলা যা আপিলে চূড়ান্ত নিস্পত্তি হচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধচলাকালে নিজের নামে ‘কায়সার বাহিনী’ গঠন করে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনকারী হবিগঞ্জ মহকুমার রাজাকার কমান্ডার ও শান্তি কমিটির সদস্য সৈয়দ কায়সারকে ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর মৃত্যুদন্ড দিয়ে রায় দেয় ট্রাইব্যুনাল। কায়সারের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা, ধর্ষণ, আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায় এবং বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন-ষড়যন্ত্রসহ মোট ১৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের মধ্যে ১৪টিই ট্রাইব্যুনালে সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে প্রসিকিউশন। যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে প্রথমবারের মতো অন্য অপরাধের পাশাপাশি ধর্ষণের দায়েও ফাঁসির আদেশ দেয়া হয় তাকে।
নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ফাঁসির সাজা বাতিল ও বেকসুর খালাসের আরজি জানিয়ে ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি আপিল করেন কায়সার। ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিলের পক্ষে আপিলে মোট ৫৬টি যুক্তি দেখানো হয়েছে ।
মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে এ পর্যন্ত ৭৫ মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা তদন্ত শেষে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান এ তথ্য জানান। এর মধ্যে বিচার শেষে ৪১ মামলায় রায় ঘোষণা করেছেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আনা আপিল ও আপিল রায়ের রিভিউতে এ পর্যন্ত সাতটি মামলা নিস্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি রায়ের পর জামায়াতের প্রাক্তন আমীর মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, প্রাক্তন দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, জামায়াতের প্রাক্তন নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী এবং বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আপিল ও আপিল রায়ের রিভিউতেও জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদন্ড দিয়ে রায় দিয়েছিল।
এছাড়া জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদন্ডের রায় বহাল রেখে রায় দিয়েছে আপিল বিভাগ।
আরো বেশকটি মামলা আপিলে নিস্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসব আপিল মামলা শুনানি ও নিস্পত্তি হবে বলে জানিয়েছেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।