বাসস বিদেশ-১ : মার্কিন সৈন্যদের লক্ষ্য করে চালানো ইরানের হামলার ঘটনায় বিশ্ব নেতাদের নিন্দা

138

বাসস বিদেশ-১
ইরান-ইরাক-যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন সৈন্যদের লক্ষ্য করে চালানো ইরানের হামলার ঘটনায় বিশ্ব নেতাদের নিন্দা
প্যারিস, ৯ জানুয়ারি, ২০২০ (বাসস ডেস্ক) : বিশ্ব নেতারা বুধবার মার্কিন ও বিদেশী অন্যান্য সৈন্য থাকা ইরাকের দু’টি ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা এবং তারা তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন। খবর এএফপি’র।
ইরান জানায়, গত সপ্তাহে মার্কিন হামলায় ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ নিতেই তারা এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। তারা হুশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, ওয়াশিংটন এ হামলার জবাব দিলে তারাও কাঠোর জবাব দিবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটি ‘একেবারে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
হোয়াইট হাউস থেকে দেয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমাদের সকল সৈন্য নিরাপদ রয়েছে। তবে ইরানের এ হামলায় আমাদের সামরিক ঘাঁটির কেবলমাত্র সামান্যই ক্ষতি হয়েছে। আমাদের সৈন্যরা যেকোন কিছুর জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’
ট্রাম্প আরো বলেন, ইরানের উপর ‘আরো শাস্তিমূলক নিষেধাজ্ঞা’ আরোপ করা হবে।
ন্যাটো প্রধান জেন্স স্টলটেনবার্ক বলেন, ইরাকে যুক্তরাষ্ট্র ও জোট বাহিনীর সৈন্যদের উপর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আমি নিন্দা জানাচ্ছি। ন্যাটো আরো সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে ইরানের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে বলেন, তারা আক্রান্ত হলে দেশটি পাল্টা জবাব দিবে। তিনি সোলাইমানিকে ইরানের সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোগান ইস্তাম্বুলে আলোচনার পর যৌথভাবে বিবৃতি দিয়েছেন।
তারা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে পাল্টাপাল্টি হামলা এবং মধ্যপ্রাচ্যে জটিল বিভিন্ন সমস্যা সমাধান খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে শক্তি প্রয়োগ কোন অবদান রাখবে না।’
‘আমরা এ অঞ্চলে বিদ্যমান উত্তেজনা প্রশমনে আমাদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছি এবং এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছি।’
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পার্লামেন্টে বলেন, ‘ইরানের ফের এ ধরনের বেপরোয়া ও ভয়াবহ হামলা চালানো উচিত হবে না।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোমিনিক র‌্যাব সতর্ক করে দিয়ে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যেকোন যুদ্ধ কেবলমাত্র ইসলামিক স্টেট গ্রুপ এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠন লাভবান হবে।
ইউরোপীয় বৈদেশিক নীতি প্রধান জোসেফ বোরেল বলেন, এ হামলা কেবলমাত্র আরেকটি সংঘাত বৃদ্ধির উদাহরণ ছিল না, এটি এই সংকট আইএস’র বিরুদ্ধে লড়াইকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইরান সংকট প্রশ্নে শুক্রবার জরুরি বৈঠকে বসবেন।
ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়ান ইয়েফস লা ড্রিয়ান এক বিবৃৃতিতে বলেন, ‘এখন প্রধান কাজ হচ্ছে উত্তেজনা প্রশমনের দিকে আগের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া।’
জার্মানী ইরানকে ‘ধারাবাহিক’ সংঘাত বন্ধের আহ্বান এবং ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা জানায়।
ইরাকের প্রেসিডেন্ট বারহাম সালেহ বলেন, এ অঞ্চলে ‘ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতির উদ্ভব’ হওয়ায় তিনি উদ্বিগ্ন।
তার অফিসের এ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। এ হামলা রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব আইনের চরম লংঘন।’
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, যে দু’টি বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয় তার একটিতে কানাডার সৈন্য রয়েছে। তবে এ হামলায় তাদের কেউ আহত হয়নি।
ট্রুডো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গতরাতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কঠোর নিন্দা জানায় কানাডা।
বাসস/এমএজেড/আহো/১০৫৫/এমএবি