বাসস বিদেশ-১ : মোগাদিশুতে ভয়াবহ গাড়ি বোমা হামলায় নিহত ৭৯

133

বাসস বিদেশ-১
সোমালিয়া-অস্থিরতা
মোগাদিশুতে ভয়াবহ গাড়ি বোমা হামলায় নিহত ৭৯
মোগাদিশু, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ (বাসস ডেস্ক) : মোগাদিশুর এক ব্যস্ত এলাকায় এক ভয়াবহ গাড়ি বোমা হামলায় ৭৯ জন নিহত এবং বেশ কিছু সংখ্যক আহত হয়েছে। বিগত দুই বছরের মধ্যে এটি ছিল সেখানে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।
নিহতদের মধ্যে ১৬জন ছিল রাজধানীর বেসরকারি বনাদির বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা বোমা বিষ্ফোরণের সময় রাজধানীর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওই এলাকাটি বাসযোগে অতিক্রম করছিল।
ঘটনাস্থল থেকে আহতদের স্ট্রেচারে করে অন্যত্র নেয়া হয়।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু টুইটারে জানান, এ ঘটনায় দুই তুর্কি নাগরিকও নিহত হয়েছে।
নিরাপত্তা চৌকি ও কর অফিস থাকায় বাস ও ট্রাকসমূহ থেকে ফি সংগ্রহ করায় ট্রাফিক সেখানে যানবাহনের গতিরোধ করছিল।
কেউ এ হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেনি। তবে মোগাদিশুতে প্রায়ই ইসলামী আলকায়দা সংশ্লিষ্ট আল-শাবাব গাড়ি বোমা বিষ্ফোরণ ও বিভিন্ন হামলা চালিয়ে থাকে।
সোমালি পুলিশ প্রধান আব্দি হাসান মোহাম্মাদ সাংবাদিকদের বলেন, সেখানে ‘ভয়ঙ্কর’ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, হতাহতের সংখ্যা নিরূপণ দুঃসাধ্য।’
‘আমরা এ মুহূর্তে ৭৯ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বহুসংখ্যক আহত হওয়ায় তাদের মধ্যে এক দুই জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
ইতোপূর্বে বেসরকারি আমিন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের পরিচালক আব্দুকাদির আব্দিরহমান হাজি এএফপিকে জানায়, প্রায় ১২৫ জন আহত হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বনাদির বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র এএফপিকে জানায়, বোমা বিষ্ফোরণের কথা শুনতে পেয়ে সে হাসপাতালে ছুটে যায়। কারণ একই সময় সেখান দিয়ে দুইটি বাস এক সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে যায়। তবে তার বোন যে বাসটিতে ছিল সেটি বিষ্ফোরণের আগেই ওই এলাকা ছেড়ে যায়।
ওই ছাত্র এএফপি’কে আরো জানায়, ‘আজ যা ঘটেছে তা ভয়ংকর। আমি পুরুষ ও নারী শিক্ষার্থীদের ১৬ টি লাশ গণনা করেছি, তাদের অনেকের দেহই ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।’
এ দুর্ঘটনার পর বনাদির বিশ্ববিদ্যালয় ৫ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান মোহামেদ মোহামুদ হাসান শনিবার সন্ধ্যায় এক অডিও বার্তায় বলেন, ‘এটি একটি কালো দিবস। এটি এমন একটা দিন যে দিন অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যা শিক্ষার জন্যে প্রেরণ করে তাদের লাশ গ্রহণ করেছে।’
তিনি আরো জানান, ‘মিনিবাসে ১৭ জন যাত্রি ছিল। তাদের মাত্র একজন বিষ্ফোরণের আগে কর সংগ্রহ পয়েন্ট থেকে পাশ সংগ্রহের জন্যে নেমে যাওয়ায় বেঁচে গেছে।’
প্রেসিডেন্ট মোহামেদ আব্দুল্লাহি ফরমাজো সোমালি ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (এসওএনএনএ)-কে এ ঘটনা সম্পর্কে তার নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘যারা এ কাজ করেছে তারা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের মদদপুষ্ট, তারা কখনো এই দেশের জন্যে কোনো ইতিবাচক ভূমিকা রাখেনি। কোন রাস্তা নির্মাণ, হাসপাতাল বা শিক্ষা কেন্দ্র গড়ে তোলেনি।’
প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, ‘কারা সোমালিয়ায় এসব ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ, খুনখরাপি চালিয়ে যাচ্ছে সোমালি জনসাধারণ সে সম্পর্কে অবগত আছে।’
বাসস/অনু-জেজেড/১২৩৫/-এমএবি