বাসস প্রধানমন্ত্রী-৪ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোরভাবে মেনে চলার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

101

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৪ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-টার্মিনাল-উদ্বোধন-ভাষণ
বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোরভাবে মেনে চলার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

’৯৬ সালে সরকার গঠনের পরই বিমানের আধুনিকায়ন এবং সম্প্রসারণে তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী এক্ষেত্রে বেসরকারী খাতকে উন্মুক্ত করে দেওয়ার উদ্যোগ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন,‘অনেকগুলো বেসরকারী সংস্থা এখন বিমান চালাচ্ছে, হেলিকপ্টারকেও বেসরকারী খাতে আওয়ামী লীগ সরকার সুযোগ করে দিয়েছে। পাশাপাশি আমরা চাই বিমানেরও নিজস্ব ব্যবস্থা থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে হলে একদম বেসরকারী খাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়,তাহলে সকালে এক রকম বিকেলে অন্য রকম তারা করতে পারে।’
আরো ৩টি বিমান আমাদের দেশের অভ্যন্তরীন রুটের জন্য আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘কানাডা থেকে নিয়ে আসা ঐ তিনটি বিমানের সঙ্গে আরো কিছু বিমান যুক্ত করা হবে যাতে দেশের সকল বিমানবন্দরে যাত্রী সেবা বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়।’
কক্সবাজার বিানবন্দরকেও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যাতে প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্যে এবং পাশ্চাত্য থেকে প্রাচ্যে যত বিমান যাতায়াত করে তাদের একটা ‘হাব’ হতে পারে ক´বাজার। সেখানে রিফ্যুয়েলিং সহ কয়েকদিন যাতে কেউ প্রয়োজনে বিশ্রাম নিতে পারে। পর্যটন ছাড়াও আরো অনেকভাবে এই কক্সবাজারকে যেন ব্যবহার করতে পারি।
তিনি বলেন,‘এর নির্মান কাজ শুরু হয়েছে।
ড্রিম লাইনার দুটি নিজস্ব অর্থে এবং রিজার্ভের টাকাতেই ক্রয় করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অর্থাৎ এগুলো ক্রয় করার মত সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি।’
তিনি বলেন, বিমানে অনেক সমস্যা ছিল। এগুলো ধীরে ধীরে খুঁজে বের করতে হয়েছে এবং সমাধান করা হয়েছে।
আমাদের নিজস্ব কোন কার্গো বিমান না থাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কাজেই কার্গো বিমান আমাদের প্রয়োজন। ঐ ৩য় টার্মিনালের সঙ্গে অত্যাধুনিক কার্গো ভিলেজ নির্মাণ করা হবে। যাতে আমাদের মালামাল প্রেরণ বা আমদানী-রপ্তানী ব্যবসার সুবিধা হয় এবং এগুলো আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন হবে।’
তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে কার্গো ভিলেজের সাথে আমরা দুটি কার্গো বিমানও ক্রয় করবো। কারণ কার্গো বিমান ছাড়া বিমান লাভজনক হবে না।’
এ সময় তিনি বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে গুরুত্বারোপ করে বিমানবন্দরে বিদেশিসহ প্রবাস ফেরত বাংলাদেশীদের আগমনের সময়কার নানা হয়রানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণেও সংশ্লিষ্ট মহলকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী বিমান নিয়ে অতীতের নানা সমস্যার প্রসঙ্গ টেনে বলেন,‘সিট খালি অথচ টিকেট নাই বা এ রকম বহু কিছু হতো।’
বিমানে চোরাচালানের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি এক সময় ‘বিমানকে স্বর্ণ প্রসবা’ আখ্যায়িত করেও এর অতীত স্মরণ করিয়ে দিয়ে এগুলোও বন্ধ করার নির্দেশ দেন। যাতে করে বিমানের সেবা আন্তর্জাতিকভাবে বৃদ্ধি পায়।
শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যে আমরা বিমানের যাত্রীসেবা আরো অন্যান্য দেশে বাড়ানোর চেষ্টা করছি। আমরা সেক্ষেত্রে অন্যান্য এয়ারলাইন্সের সঙ্গে কোর্ট শেয়ারিংয়ের মধ্যমে অনেকগুলো গন্তব্যে আমাদের যাত্রী পাঠাতে পারি। সেটাও আমরা ভবিষ্যতে করবো।
শুধু বিমান ক্রয় নয়, এটা যেন যথাযথভাবে চলে এবং বিমানের যাত্রীসেবা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের ও তিনি যতœবান হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন,‘যাত্রীদেরকেও মনে রাখতে হবে যেই বিমানটা আমাদের নিজেদের, নিজস্ব অর্থে কেনা কাজেই তারই রক্ষণাবেক্ষনে সকলকেই বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী ৩য় টার্মিনাল নির্মাণ হলে দেশের বিমানের যাত্রী পরিবহন পরিসর আরো বৃদ্ধি পাবে উল্লেখ করে একে আমাদের ‘অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জনের একটি সূচক’ হিসেবেও আখ্যায়িত করেন।
এ সময় জিডিপি ৮দশমিক ১৫ শতাংশে উন্নীতকরণ,মাথাপিছু আয় ১৯০৯ ডলারে উন্নীত করন এবং দার্রিদ্রের হার ২০ ভাগে নামিয়ে আনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সরকার প্রধান তাঁর রাজনৈতিক অঙ্গীকার পুণর্ব্যক্ত করে বলেন,‘ জাতির পিতার দারিদ্র মুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।’
শেখ হাসিনা ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘এ সময়ে আমরা যে মুজিব বর্ষ উদযাপন করবো সে সময়ে বাংলাদেশকে আমরা এমন একটা অবস্থানে নিয়ে যেতে চাই যাতে ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে সক্ষম হই।’
তিনি এ সময় পাঁচ বছর মেয়াদি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশাপাশি ১০ বছর মেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘আমরা আশু করণীয় ঠিক করে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের পরিকল্পিত উন্নয়ন সাধন করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যে শিশুটা জন্ম গ্রহণ করবে সেও যেন তাঁর ভবিষ্যতটা সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই স্বাধীনতার সুফল বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি।’
তিনি বলেন,‘আমরা উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছি কিন্তু এখানেই থেমে থাকবো না। ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ।’
তিনি এ সময় জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় তাঁর সরকারের শতবর্ষ মেয়াদি ‘ডেল্টা পরিকলপনা ২১০০’র কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে, তাঁরা একটি সুন্দর জীবন পেতে পারে সেজন্য আমরা ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’
বাসস/এএসজি-এফএন/১৬১০/-আসাচৌ